Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষোভ জানাতে মান্নানের বাড়িতে হুমায়ুন

সভাপতি পদের বদল ঘটিয়েও মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের ‘কোন্দল’ কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। বুধবার সকালে জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেনের সঙ্গে দেখা করে জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন তিন পদাধিকারী নতুন জেলা কমিটিতে রদবদলের দাবি জানান। তাঁদের ওই বক্তব্য লিখিত আকারে জানাতে বলেন বর্ষীয়ান সভাপতি। সেই মতো দু’পাতার লিখিত প্রস্তাব জেলা সভাপতির হাতে জমা দিয়েছেন তাঁরা। মান্নান বলেন, “নতুন যে জেলা কমিটি গঠিন হয়েছে, তাতে বেশ কয়েক জনের নাম সংযোজনের কথা বলেছেন ওঁরা। ওই প্রস্তাব তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠিয়ে দেব। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।”

মান্নানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন হুমায়ুন।—নিজস্ব চিত্র।

মান্নানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন হুমায়ুন।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০০:১৯
Share: Save:

সভাপতি পদের বদল ঘটিয়েও মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের ‘কোন্দল’ কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না।

বুধবার সকালে জেলা তৃণমূল সভাপতি মান্নান হোসেনের সঙ্গে দেখা করে জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন তিন পদাধিকারী নতুন জেলা কমিটিতে রদবদলের দাবি জানান। তাঁদের ওই বক্তব্য লিখিত আকারে জানাতে বলেন বর্ষীয়ান সভাপতি। সেই মতো দু’পাতার লিখিত প্রস্তাব জেলা সভাপতির হাতে জমা দিয়েছেন তাঁরা। মান্নান বলেন, “নতুন যে জেলা কমিটি গঠিন হয়েছে, তাতে বেশ কয়েক জনের নাম সংযোজনের কথা বলেছেন ওঁরা। ওই প্রস্তাব তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠিয়ে দেব। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।”

এ দিন সকালে বহরমপুর লাগোয়া রাধারঘাট এলাকার বাড়িতে মান্নান হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি সভাপতি হুমায়ুন কবীর, প্রাক্তন জেলা যুব সভাপতি উৎপল পাল ও জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক রঞ্জন ভট্টাচার্য। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে তাঁদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে।

উল্লেখ্য, নতুন জেলা কমিটিতে রঞ্জনবাবুর ঠাঁই না হলেও জেলার ১১ জন সহ-সভাপতির মধ্যে হুমায়ুন কবীর জায়গা পেয়েছেন। তেমনই ১০ জন জেলা সম্পাদকের মধ্যে রয়েছেন উৎপল পালও। মূলত রঞ্জন ভট্টাচার্যকে জেলা কমিটিতে ঠাঁই করার দাবিতে জেলা সভাপতির উপরে চাপ বাড়াতেই প্রস্তাব আকারে লিখিত দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর।

এ দিন বৈঠক শেষে হুমায়ুন কবীর বলেন, “জেলা কমিটিতে বেশ কিছু রদবদল করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে নতুন কয়েক জনের নাম সংযোজন এবং কয়েক জনকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মান্নানদা বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।” অন্য দিকে রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সকলকে নিয়ে চলার কথা নতুন জেলা সভাপতি জানিয়েছেন। তবে তিনি সকলকে নিয়ে চলতে পারছেন না বলেই দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে। নতুন যে কমিটি হয়েছে, তাতে ব্লক ও জেলা স্তরে যোগ্য নেতৃত্বের ঠাঁই হয়নি। সব মিলিয়ে সংগঠনগত দিক থেকে এই জেলায় দল ভাল জায়গায় থাকে, তার চেষ্টা করতে হবে সকলকে।”

বৈঠক শেষে মান্নান বলেন, “এত বড় জেলায় সকলকে কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া সম্ভব নয়। যাঁদের জায়গা হয়নি, তাঁদের ক্ষোভ থাকবেই। কিন্তু বহরমপুর ভিত্তিক তো জেলা কমিটি হবে না। ভারসাম্য রেখে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের নেতৃত্বকে নিয়ে জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। এখন সকলে যদি পদ চায়, তাহলে তো মুশকিল।” মান্নানের সংযোজন, “কারও কারও চাহিদা বেশি। ফলে কিছু করার নেই। তবে সকলকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়। কিছু মানুষ রয়েছে, যাদের কোনও ভাবে সন্তুষ্ট করা যায় না।”

এদিকে হুমায়ুনের পরে রঞ্জন ভট্টাচার্যও তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ইন্দ্রনীল সেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। এ দিন রঞ্জনবাবু বলেন, “তিন লক্ষ ৫৬ হাজার ভোটে হেরে যাওয়ার পরেও ইন্দ্রনীল সেন কোন লজ্জায় জেলায় আসেন, বুঝতে পারি না। রাজনীতিক হিসেবে তাঁর কোনও স্বীকৃতি নেই। দলের মধ্যেও তাঁকে কেউ দেখতে পারে না। ওঁর একটাই কাজ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের অসম্মানিত করার পাশাপাশি তাঁদের উপরে খবরদারি চালানো। কল্যাণীতে সুযোগ পেলে বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধায়কে জানাবো।”

মান্নান হোসেন এ দিনও বলেন, “ইন্দ্রনীল ভাল ছেলে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছে ওকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে। দল পরিচালনায় আমাকে সাহায্য করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc mannan hossain humayun kabir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE