Advertisement
০৩ মে ২০২৪

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ধৃত টিএমসিপি নেতা

ফের প্রকাশ্যে চলে এল টিএমসিপি’র অন্তর্বিবাদ। শান্তিপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক টিএমসিপি’র মনোজ সরকারের অনুগামীদের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগে পুলিশ ওই কলেজেরই সহ সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আলি শেখকে গ্রেফতার করল। বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে শান্তিপুরের গোপালপুরের নিজের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই অভিযোগে পুলিশ ওই কলেজেরই প্রথম বর্ষের ছাত্র, টিএমসিপি কর্মী বলে পরিচিত শামিম শেখকে পাকড়াও করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০১
Share: Save:

ফের প্রকাশ্যে চলে এল টিএমসিপি’র অন্তর্বিবাদ।

শান্তিপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক টিএমসিপি’র মনোজ সরকারের অনুগামীদের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগে পুলিশ ওই কলেজেরই সহ সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আলি শেখকে গ্রেফতার করল। বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে শান্তিপুরের গোপালপুরের নিজের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই অভিযোগে পুলিশ ওই কলেজেরই প্রথম বর্ষের ছাত্র, টিএমসিপি কর্মী বলে পরিচিত শামিম শেখকে পাকড়াও করেছে। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের গোড়ার দিকে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে মনোজ সরকার তাঁর দলবল নিয়ে বিজয় মিছিল বার করেন। কলেজের সামনে পৌঁছতেই মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পায়ে গুলি লাগে মনোজ ঘনিষ্ঠ এক ছাত্র নেতার। ওই ঘটনায় নাম জড়ায় টিএমসিপিরই শান্তিপুর কলেজ ইউনিটের সভাপতি হাসিবুল শেখ ও ফিরোজের। পুলিশ হাসিবুল শেখকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে শ্লীলতাহানি ও বেআইনি অস্ত্র রাখার অন্য একটি অভিযোগে মনোজ সরকারকেও পাকড়াও করে পুলিশ। মনোজ তড়িঘড়ি জামিন পেলেও হাসিবুলের জামিন পেতে বিলম্ব হচ্ছিল। হাসিবুলের জামিনের দাবিতে কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান ফিরোজ আলি শেখ ও তাঁর অনুগামীরা। কলেজে ফিরোজ ও হাসিবুল একই গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত। এদিন নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে ফিরোজের গ্রেফতারিতে অস্বস্তিতে পড়েছে টিএমসিপি’র জেলা নেতৃত্ব। এই ঘটনায় বেআব্রু হয়ে পড়ল শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের ভিতরের বিবাদ।

টিএমসিপি’র এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। এসএফআই-এর জেলা সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, “ওদের এক নেতার হাতে অন্য নেতা নিরাপদ নন। তাহলে বিরোধীপক্ষ ও সাধারণ পড়ুয়াদের নিরাপত্তা কোথায়?” যদিও সংগঠনের জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। অনেক দিন আগে নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তা মিটেও গিয়েছে। কিন্তু জামিন না নেওয়ায় পুলিশ ফিরোজকে গ্রেফতার করেছে।” তবে অয়নবাবু যাই বলুন না কেন, শান্তিপুর কলেজে টিএমসিপি’র প্রথম সারির তিন নেতা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন না সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। নেতাদের মারামারিতে কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মত পড়ুয়াদের। ঢাকা পড়ছে না গোষ্ঠীবিবাদও। শান্তিপুর কলেজে মনোজ সরকার ও ফিরোজ আলি শেখ পরস্পরবিরোধী বলে পরিচিত। নির্বাচনে জিতে কে সাধারণ সম্পাদক হবেন তা নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝামেলা বাধে। মনোজ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে ফিরোজ তা মেনে নিতে পারেননি। মাঝে মধ্যেই দুই গোষ্ঠীর বোমা ছোড়াছুড়িতে কেঁপে উঠত কলেজ চত্বর। এরই মধ্যে মনোজের বিরুদ্ধে ছাত্র ভর্তি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ জানান ফিরোজ। এ নিয়ে সংগঠনের অস্বস্তি বাড়ে। সংগঠনে অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েন ফিরোজ। এর ফলেই ফিরোজকে গ্রেফতার হতে হল বলে মত তাঁর অনুগামীদের। ধৃতের বাবা হোসেন আলি শেখ বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। কলেজের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলায় ওকে গ্রেফতার করা হল।” মনোজ অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে বলছেন, “ফিরোজ আমার ভাইয়ের মতো। গ্রেফতারির খবর পেয়েই রাতে থানায় যাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

group clash tmcp arrest krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE