Advertisement
E-Paper

ডাকঘরে দেরি, ভাতা না পেয়ে বিপাকে বৃদ্ধেরা

পোস্ট অফিসের দীর্ঘসূত্রতার জেরে মাস ছ’য়েক ধরে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন না নাকাশিপাড়া ব্লকের প্রায় শ’পাঁচেক প্রাপক। অভিযোগ, এ ব্যাপারে নাকাশিপাড়ার বিডিও একাধিকবার নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগর সদর পোস্ট অফিসের কর্তাদের মৌখিক বা লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৮

পোস্ট অফিসের দীর্ঘসূত্রতার জেরে মাস ছ’য়েক ধরে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন না নাকাশিপাড়া ব্লকের প্রায় শ’পাঁচেক প্রাপক। অভিযোগ, এ ব্যাপারে নাকাশিপাড়ার বিডিও একাধিকবার নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগর সদর পোস্ট অফিসের কর্তাদের মৌখিক বা লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

নাকাশিপাড়া ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিপিএল পরিবারভুক্ত পঁয়ষট্টি বছরের উর্দ্ধে ২০৭ জন বার্ধক্য ভাতা পান। প্রতিবন্ধী ভাতা পান ১৪০ জন ও ১৪৪ জন পান বিধবা ভাতা। তিনটি স্কিমের মাধ্যমেই প্রাপকরা মাসে ৭৫০ টাকা করে পান। চলতি বছরের মার্চ মাসে জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর জেলার ১৭টি ব্লকের প্রাপকদের সরাসরি টাকা দেওয়ার পরিবর্তে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরিকাঠামোর অভাবে অন্য ব্লকগুলি সে কাজ শুরু করতে না পারলেও নাকাশিপাড়া ব্লক প্রশাসন চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ভাতা প্রাপকদের স্থানীয় পোস্ট অফিসে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসের ভাতার টাকা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি নবদ্বীপ পোস্ট অফিসে ৩৫ টি ও কৃষ্ণনগর মূল পোস্ট অফিসে ৪টি চেক ব্লক প্রশাসনের তরফে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই দুই পোস্ট অফিসে কোনও চেকই ভাঙানো হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে বহ মানুষ চরম সঙ্কটে পড়েছেন।

নাকাশিপাড়ার বিডিও হেমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘জুন মাসের পর থেকে আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের ভাতা দিচ্ছি। সে ক্ষেত্রে চেক দেওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই ব্যাঙ্ক তা টাকায় পরিণত করে সুবিধাভোগীদের দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু মাস ছ’য়েকের আগের ভাতা দুই পোস্ট অফিসের গাফিলতিতে মিলছে না।’’ এই অবস্থায় আতান্তরে পড়েছেন দরিদ্র প্রাপকরা। ধর্মদার বাসিন্দা আবুল কাসেম খান বার্ধক্য ভাতা পান। তাঁর ক্ষোভ, “এই বয়সে ভাতার টাকাটাই সম্বল। অথচ ছ’মাসের আগের টাকা এখনও পেলাম না।’’ ধর্মদার রেখা খাতুন প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তিনি জানান, শারীরিক অক্ষমতার জন্য কোনও কাজ তিনি করতে পারেন না। প্রতিবন্ধী ভাতায় কোনওরকম টেনেটুনে জীবন চলে। কিন্তু তিন মাস সেই টাকা হাতে না পাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

নাকাশিপাড়ার বিডিও সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জেলাশাসক পি বি সালিম ও জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের আধিকারিককে জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মাসের ৫ তারিখে জেলার গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রকল্প অধিকর্তা সুপর্ণ রায়চৌধুরী জবাবদিহি চেয়ে কৃষ্ণনগরের উত্তর ডাকঘর চক্রের সুপার জয়ন্তকুমার ভট্টাচার্যের কাছেও চিঠি পাঠান। সুপর্ণবাবু বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ অনুসারে কোনও চেক ইস্যু হওয়ার তিন মাসের মধ্যে ভাঙানো না হলে তার বৈধতা হারায়। ওই চেকগুলি বৈধতা হারিয়েছে। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য ডাকঘরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু এখনও পর্যন্ত কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপ পোস্ট অফিস জট কাটানোর ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। জয়ন্তবাবু বলেন, “কৃষ্ণনগর মূল পোস্ট অফিসে যে চারটি চেক জমা দেওয়া হয়েছিল তা ভাঙানো হয়েছে। প্রাপকরা পোস্ট অফিস থেকে তাঁদের ভাতা এখন পেয়েও যাবেন। তবে নবদ্বীপের বিষয়টি নিয়ে একটি জটিলতা রয়েছে। সেই সমস্যা যাতে দ্রুত মিটে যায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” অন্য দিকে নবদ্বীপ পোস্ট অফিসের এক আধিকারিকের কথায়, “ওই তিন মাসের চেক আমরা স্থানীয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছি। কিন্তু সেই চেক ভাঙানো হয়নি। কিছু চেকের আবার তারিখও পেরিয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সত্যিই একটা সমস্যা চলছে।”

nakashipara widow allowance post office unavailable
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy