Advertisement
E-Paper

তাপসকে নিয়ে ফের অস্বস্তিতে তৃণমূল

চৌমুহা কাণ্ডে নিজের ও দলের মুখ পুড়িয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের অভিনেতা-সাংসদ তাপস পাল। গেল বছরের মাঝামাঝি নাগাদ নাকাশিপাড়ার চৌমুহা গ্রামে মহিলাদের সম্পর্কে কটূক্তি করে নিন্দিত হয়েছিলেন তাপস পাল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির সঙ্গে তাঁর সংস্রবের অভিযোগ উঠল। ইডি এ ব্যাপারে তাপসবাবুকে একাধিকবার জেরাও করেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০২

চৌমুহা কাণ্ডে নিজের ও দলের মুখ পুড়িয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের অভিনেতা-সাংসদ তাপস পাল। গেল বছরের মাঝামাঝি নাগাদ নাকাশিপাড়ার চৌমুহা গ্রামে মহিলাদের সম্পর্কে কটূক্তি করে নিন্দিত হয়েছিলেন তাপস পাল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির সঙ্গে তাঁর সংস্রবের অভিযোগ উঠল। ইডি এ ব্যাপারে তাপসবাবুকে একাধিকবার জেরাও করেছিল। বুধবার সাংসদের দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাটে সিবিআই-এর তদন্তকারী আধিকারিকরা চার ঘণ্টা ধরে চিরুনি তল্লাশি চালান। চৌমুহা কাণ্ডের পর এ দিন সাংসদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালানোয় নদিয়া জেলার তৃণমূল নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তাপস পালকে বাঁকা নজরে দেখতে শুরু করছেন। এমনকী, কয়েক মাস পরে জেলায় আটটি পুরসভার ভোটে সাংসদের বাড়িতে তল্লাশির ঘটনা কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

চৌমুহাতে তাপস পাল ‘ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্ট সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। জেলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে আক্রমণ শানায়। এমনকী জেলা তৃণমূলের অনেক নেতাই তাপস পালের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে শুরু করে। বেশ কয়েক মাস নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে ঢোকেননি তাপসবাবু। তারপর পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হতেই তাপসবাবু জড়িয়ে পড়লেন নতুন বিতর্কে।

নদিয়া জেলায় লগ্নি সংস্থাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি রমরমা ছিল রোজভ্যালির। জেলার ধুবুলিয়া, নাকাশিপাড়া, চাপড়া প্রভৃতি এলাকায় অন্তত বেশ কয়েক হাজার মানুষ রোজভ্যালিতে টাকা রেখে বেকায়দায় পড়েছেন। রাস্তা-ঘাটে চোখ-কান খোলা রেখে চলাফেরা করলেই রোজভ্যালির প্রতারণার কথা শোনা যায়। এমন একটি লগ্নি সংস্থার সঙ্গে তাপস পালের সম্পর্ক থাকার সন্দেহে সিবিআই-এর তল্লাশি জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব অনেকটাই ব্যাকফুটে। সামনেই জেলার বেশ কয়েকটি পুরসভার ভোট রয়েছে। এই সময় সাংসদকে নিয়ে শাসকদল খানিকটা বিব্রত। কৃষ্ণনগর পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, “এমনিতেই তাপস পালের কুকথা নিয়ে এখনও মানুষের কাছ কৈফিয়ত দিতে হয়। এবার রোজভ্যালিতেও সাংসদের নাম জড়িয়ে গেল। কী করব সেটাই বুঝতে পারছি না।” দলের নাকাশিপাড়া এলাকার এক নেতা বলছেন, “চৌমুহা নিয়ে তাপস পাল আমাদের অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। মানুষকে বোঝাতে অনেক সময় লেগেছিল। মানুষ যখন ধীরে ধীরে সেই ঘটনা ভুলতে বসেছিলেন, ঠিক তখনই সিবিআই তাপস পালের কলকাতার আস্তানায় হানা দিল। সাংসদের সঙ্গে রোজভ্যালির সম্পর্ক প্রকাশ পেলে মানুষের কাছে মুখ দেখানোই দুষ্কর হয়ে যাবে। ভোটারদের কী যে বোঝাব!”

বিরোধীরাও কৃষ্ণনগর সাংসদের বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়ে সুর চড়িয়েছে। সিপিএম এর নদিয়া জেলার সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘কালো টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য সাংসদের সামনে কালো ঝুড়ি মাথায় দিয়ে তৃণমূলের সাংসদরা ধর্না দেন। আজ সেই তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের বাড়িতেই কালো টাকার খোঁজে হানা দিল সিবিআই। এটাই শাসকদলের প্রকৃত মুখ।’’

বিজেপির জেলা মুখপাত্র সৈকত সরকার বলেন, ‘‘এর আগে তৃণমূলের নেতারা সারদার টাকা হাতিয়ে জেল খাটতে শুরু করেছেন। এবার রোজভ্যালির টাকা নয়ছয় করার অভিযোগেও ধরা পড়বে শাসকদলের রাঘব-বোয়ালরা। তাপস পালের বাড়িতে তল্লাশি দিয়ে এর শুরু হল। তাপস পাল রোজভ্যালিতে প্রভাব খাটিয়েছিল।”

বিরোধীদের এ সব সমালোচনাকে পাত্তা দিতে নারাজ জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। তিনি বলছেন, “বিজেপি’র শাখা সংগঠন হিসেবে কাজ করছে সিবিআই। মানুষ এ সবের জবাব ভোট বাক্সে দিয়ে দেবে।”

tapas pal rose valley
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy