দুই সরকারি দফতরের কাজিয়া ও কর্মী সঙ্কটের জেরে পানীয় জল বন্ধ গিয়েছে রঘুনাথগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায়। যার ফলে সমস্যায় পড়েছেন ওই এলাকার প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা। রঘনাথগঞ্জ ১ ব্লকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের নিয়ন্ত্রণে রঘুনাথগঞ্জ শহর-সহ ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৪টি গ্রামে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করে একটি বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু গত দেড় মাস থেকে ওই এলাকায় জল সরবরাহে চূড়ান্ত অচলাবস্থা চলছে।
জল সরবরাহ একেবারেই বন্ধ হয়ে রয়েছে জরুর ও জামুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩২টিরও বেশি গ্রামে। গত দু’সপ্তাহ থেকে জল পাচ্ছে না মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। জামুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের গিনা মাল জানান, বছর দেড়েক থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ শুরু হওয়ায় এলাকায় নলকূপের ব্যবহার কমে গিয়েছে। রঘুনাথগঞ্জ শহর থেকে জল আসে সরাসরি সিদ্ধিকালি গ্রামের জলাধারে। সেখান থেকে সেই জল সরবরাহ হয় বিভিন্ন গ্রামে। একই ভাবে জরুর গ্রামের জলাধার থেকেও জামুয়ারের একাংশ গ্রামগুলিতে জল আসে। দেড় মাস থেকে সেই জল আসছে না। বহু বার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর দোষ দিচ্ছে পূর্ত দফতরকে। কারণ পূর্ত দফতরই নাকি নর্দমা করতে গিয়ে জলের পাইপ ফাটিয়ে ফেলেছে। আর তারই ফল ভুগতে এলাকার হাজার হাজার গ্রামবাসীকে।
একই ভাবে পাইপে জল সরবরাহ বন্ধ গণকরের জলাধারেও। রঘুনাথগঞ্জ শহরে মূল জলাধারে জল তোলা হয় ভাগীরথী থেকে। সেই জল পরিশোধন করে পাঠানো হয় ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জলাধারগুলিতে। সেখান থেকে গ্রামে গ্রামে জল সরবরাহ করা হয়। একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই জল সরবরাহ ব্যবস্থা চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সেই সংস্থার ম্যানেজার সহদেব মহাপাত্র বলেন, “কর্মী সঙ্কটের কারণেই গণকর জলাধার থেকে নিয়মিত পানীয় জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না। রঘুনাথগঞ্জের মূল প্রকল্প থেকে কয়েক জন কর্মীকে গণকরে গিয়ে জলাধারটি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কর্মীরা শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে রাজি হননি। তাই গণকরে জল সরবরাহ বন্ধ। আর জরুর ও জামুয়ারে ফেটে যাওয়া পাইপ লাইন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর না সারানোয় বন্ধ হয়ে রয়েছে জল সরবরাহ।”
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের জঙ্গিপুরের সহকারি বাস্তুকার বিশ্বজিত্ দে বলেন, “মিঞাপুরে রেল সেতুর নীচের রাস্তা দিয়ে জলের পাইপ লাইন গিয়েছে। পূর্ত সড়ক দফতর সেই পাইপ লাইনের পাশ দিয়ে নিকাশি নালা কাটতে গিয়ে পাইপ লাইন ফাটিয়ে ফেলেছে। দুই দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা সরেজমিনে তা দেখেও এসেছেন।
পূর্ত সড়ক দফতরের আধিকারিকদের বারবার বলা হয়েছিল যে, সেখানে নালা তৈরির আগে যেন আমাদের ডাকা হয়। যাতে পাইপ লাইনগুলিকে বাঁচিয়ে কাজ করা যায়। কিন্তু পূর্ত সড়ক দফতরের ঠিকাদাররা কথা না শুনে কাজ করতে গিয়ে যে ভাবে পাইপ লাইনের ক্ষতি করে ফেলেছেন তাতে ওই পাইপ না বদলালে জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। পূর্ত সড়ক দফতর জানিয়ে দিয়েছে ওই পাইপ সারানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।”
অন্য দিকে, পূর্ত সড়ক দফতরের জঙ্গিপুরের সহকারি বাস্তুকার অরুণ সরকার বলেন, “জলের যে পাইপ ওখানে রয়েছে তা কোনও ভাবেই সারানো যাবে না। আমরা সে চেষ্টাও কম করিনি। রাস্তা বাঁচাতে নিকাশি নালাটাও করতে হয়েছে। বহু সাবধানতা সত্ত্বেও কিছু পাইপ নষ্ট হয়েছে। এখন সেগুলি সারাতে হবে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকেই। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে না।” আর এই চাপানউতোরে পানীয় জল না পেয়ে সমস্যায় পড়েছে জরুর ও জামুয়ারের গ্রামগুলি।
দেহ উদ্ধার। এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। খড়গ্রামে বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনা। মৃত ওই যুবকের নাম অনন্ত দলুই (৩০)। বাগরাইন গ্রামের বাসিন্দা অনন্ত দুপুরে বিদ্যুত্চালিত সেচপাম্প থেকে খেতে জল দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে জমির মধ্যে ওই যুবকের দেহ পরে থাকতে দেখে কয়েকজন চাষি তাঁকে উদ্ধার করে খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy