Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পানপুর

পুরোনো শ্মশান চালুর দাবি গ্রামবাসীদের

বন্ধ শ্মশান চালু করার জন্য আবেদন জানালেন গ্রামবাসীরা। শ্মশানে দেহ দাহ করলে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে মৃত্যুর প্রমানপত্র পাওয়া যায় না। সেই কারণে বছর বারো আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পানপুর শ্মশান। তারপরে এক দিনের জন্যেও দেহ দাহ করা হয়নি শ্মশানে। শ্মশান যাতে পুনরায় চালু ও দেহ দাহ করলে মৃত্যুর প্রমানপত্র পাওয়া যায় তার দাবি জানালেন পানপুর এলাকার বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৪
Share: Save:

বন্ধ শ্মশান চালু করার জন্য আবেদন জানালেন গ্রামবাসীরা।

শ্মশানে দেহ দাহ করলে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে মৃত্যুর প্রমানপত্র পাওয়া যায় না। সেই কারণে বছর বারো আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পানপুর শ্মশান। তারপরে এক দিনের জন্যেও দেহ দাহ করা হয়নি শ্মশানে। শ্মশান যাতে পুনরায় চালু ও দেহ দাহ করলে মৃত্যুর প্রমানপত্র পাওয়া যায় তার দাবি জানালেন পানপুর এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা সমস্যায় পড়লেও প্রশাসনের তরফে কোনও হোলদোল দেখা যায়নি। বিডিও আব্দুল মান্নান বলেন, “ওই শ্মশানটি পুনরায় চালু করা নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও চিন্তাভাবনা নেই।” রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ দফতরের পরিষদীয় সচিব ও হরিণঘাটার বর্তমান বিধায়ক নীলিমা নাগ বলেন, “পানপুরের শ্মশানের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু বলেনি। তবে বিষয়টি দেখব।”

২০০২ সাল নাগাদ পানপুর শ্মশানে এক মহিলার দেহ দাহর পর তাঁর পরিবারের লোকেরা ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ আনতে গিয়েছিলেন মোল্লাবেমিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। কিন্তু তত্‌কালীন প্রধান তা দিতে রাজি হননি। ব্যাঙ্কে, বিমা-সহ নানা ক্ষেত্রে এখন মৃত্যুর শংসাপত্রের প্রয়োজন। তাই লোকমুখে সেই খবর ছড়িয়ে পড়তে আর কেউই দেহ দাহ করার জন্য ওই শ্মশানে যান না। সেই থেকে বন্ধ শ্মশান। স্থানীয় বাসিন্দা রানা বিশ্বাস বলেন, “আগে মৃত্যুর প্রমানপত্র লাগত না। এখন সব জায়গায় তা লাগছে। অথচ ওই শ্মশানে গেলে পঞ্চায়েত তা দেয় না। তাই ওই শ্মশানে দেহ দাহ করতে যান না স্থানীয় বাসিন্দারা।”

১৯৬৪ সাল নাগাদ বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার-হাজার মানুষ পানপুরে এসে বসবাস শুরু করেন। সেই সময় এখানে শ্মশানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রামমোহন বিশ্বাসের চেষ্টায় কয়েকজন বাসিন্দা এই খালের ধারে শ্মশান চালু করেন। রামমোহনবাবুর ছেলে বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “যতদূর মনে পছে ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হয় দাহ করার কাজ। সেই সময় এই খালে জল ভর্তি ছিল। খালের ধারেই দাহ করা হত।”

বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই শ্মশান যাতে পুনরায় চালু করার জন্য এলাকার বাসিন্দারা এগিয়ে এসেছেন। বছর পাঁচেক আগে তাঁরা পানপুর-বাবলাতলা মহাশ্মশান কমিটি নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। সংগঠনের সম্পাদক অলোক বিশ্বাস বলেন, “শ্মশান তৈরির জন্য দুই বাসিন্দা তিন কাঠা জমিও দান করেছেন।” তিনি জানান, পঞ্চায়েত থেকে একশো দিনের টাকায় মাটি ফেলে খালের পাড় বাঁধিয়ে রাস্তা করা হয়েছে। শ্মশান যাত্রীদের বসার জন্য একটি বিশ্রামাগারও তৈরি করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী একটি নিমগাছের গোড়াও বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষ সেখানে বিশ্রাম নিতে পারবেন। তিনি বলেন, “দাহ করার অনুমতি নেই। তাই, সব কিছু থেকেও কোনও কাজেই আসছে না। মানুষের সমস্যা তাই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে।” মৃণাল বাগচি নামে আরও এক গ্রামবাসী বলেন, “ওই শ্মশান চালু হলে খুব ভাল হত। তাহলে পাঁচ কিলোমিটার দূরে হরিণঘাটা শ্মশান বা ২৫ কিলোমিটার দূরে হালিশহর শ্মশানে দাহ করতে যেতে হবে না স্থানীয় বাসিন্দাদের।”

মোল্লাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান চম্পারানি দাস বলেন, “আমরা চেষ্টা চালাছি শ্মশানটি পুনরায় চালু করার জন্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panpur burning ghat ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE