Advertisement
E-Paper

বিশ্বকাপের মরসুমে ফুটবলে মজে ডোমকল

গ্রামে গ্রামে বার্তাটা রটে গিয়েছিল দিন কয়েক আগেই। তারপরেও ছিল মাইকে প্রচার ও লিফলেট বিলি। ফলে ডোমকলে লিগের খেলা নিয়ে এবার যে বাড়তি উন্মাদনা থাকবে তা জানাই ছিল। কিন্তু বুধবার লিগের প্রথম খেলা দেখতে মাঠে যেভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দর্শক তা দেখে বিস্মিত মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারাও।

নিজস্ব সংবাদদতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০০:২২
ডোমকলে লিগের প্রথম খেলায়। —নিজস্ব চিত্র

ডোমকলে লিগের প্রথম খেলায়। —নিজস্ব চিত্র

গ্রামে গ্রামে বার্তাটা রটে গিয়েছিল দিন কয়েক আগেই। তারপরেও ছিল মাইকে প্রচার ও লিফলেট বিলি। ফলে ডোমকলে লিগের খেলা নিয়ে এবার যে বাড়তি উন্মাদনা থাকবে তা জানাই ছিল। কিন্তু বুধবার লিগের প্রথম খেলা দেখতে মাঠে যেভাবে ভেঙে পড়েছিলেন দর্শক তা দেখে বিস্মিত মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারাও। আর যাঁদের খেলা দেখতে এত হইচই, উন্মাদনা সেই ‘স্টার’রা বলছেন, “বুড়ো হাড়ে কেমন ভেলকি দেখালাম, বলুন?”

সীমান্তবর্তী ডোমকল মহকুমায় ফুটবল লিগ শুরু হয়েছিল বছর চারেক আগে। তারপর থেকে আশপাশের গ্রামগুলোতেও ফুটবল নিয়ে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বিকেল হলেই গাঁ-গঞ্জের প্রায় সব মাঠেই নেমে পড়ে ফুটবল। তবু একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের। লিগের প্রথম ডিভিসনে তেমন খেলোয়াড় কই? তাছাড়া গত বছরগুলোর থেকে এবার দলও অনেক কমে গিয়েছিল। এরপরেই মুশকিল আসান করে দেন স্থানীয় ভোরের আলো ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা, পেশায় স্কুল শিক্ষক সেলিমুর রহমান। এলাকার লোকজন অবশ্য তাঁকে ‘ফুটবল বাবা’ নামেই চেনেন। তিনি যোগাযোগ করেন স্থানীয় এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ, মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক বরুণ বিশ্বাস, ডোমকল কলেজের অধ্যাপক মানসরঞ্জন চৌধুরী, স্কুল শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী হামিদ খানের মতো লোকজনের সঙ্গে। রোজ ভোরে তাঁরা স্থানীয় মাঠে অনুশীলনও করতেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরাই এবার লিগে প্রথম ডিভিসনে খেলছেন। আর লিগ নিয়ে এবারে যে উন্মাদনা তাঁর বড় কারণ যে এই খেলোয়াড়রাই সে কথা কবুল করছেন ক্রীড়া সংস্থার কর্তারাও। সংস্থার সম্পাদক ধীমান দাস যেমন বলছেন, “এবার প্রথম ডিভিসনে যাঁরা খেলছেন তাঁরা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষ। ফলে তাঁদের খেলা দেখতে যে এই ভিড় সে তো বলাই বাহুল্য।” বুধবার ডোমকল মাঠে খেলা দেখতে এসে যাঁরা সব থেকে বেশি গলা ফাটিয়েছেন তাঁদের বেশিরভাগই ফুটবল খেলা তো দূরের কথা এর আগে কখনও খেলা দেখতেও আসেননি। কলেজ পড়ুয়া জিয়াউর রহমান বলছেন, “আমাদের স্যার যে আজ খেলতে নামছেন। স্যার কেমন খেলেন তা নিজে চোখে একবার দেখব না?” মাঠের পাশের রহিমা বিবি বলছেন, “বেয়াই মশাই খেলবেন শুনেই মাঠে চলে এসেছি।” আবার কেউ বলেছেন, “বরুণবাবুকে ডাক্তারি করতে দেখেছি। কিন্তু বল পায়ে কেমন দৌড়তে পারেন সেটা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।” লিগের প্রথম খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল ভোরের আলো ক্লাব ও টিকটিকিপাড়া ইয়াং ক্লাব। অমীমাংসিতভাবে শেষ হলেও খেলা হয়েছে সেয়ানে সেয়ানে। ভোরের আলো ক্লাবের হয়ে দাপিয়ে খেলেছেন ওই চিকিৎসক, শিক্ষকরা। তাঁদের কথায়, “ভোরে মাঠে অনুশীলন করতে করতে আমরা ঠিক করেছিলাম যে এবারের প্রথম ডিভিসনে নাম লেখাব। খেলায় হার-জিত বড় কথা নয়, আমাদের খেলতে দেখে এই প্রজন্ম যদি মাঠমুখো হয় তাহলেই বুঝব আমরা সফল।”

খেলা শেষে মুচকি হাসছেন সেলিমুর। বলছেন, “একটা সময় আমার অত্যাচারে পরিচিত অনেকেই রাতে ফোন বন্ধ করে ঘুমোতে যেতেন। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। রোজ ভোরে ঘুম থেকে ডেকে তুলে খেলার মাঠে নিয়ে আসতাম।”

world cup football domkal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy