বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া এবং ফের অ্যাসিড ছুড়ে ‘শাস্তি’।
আসানসোল, পাঁশকুড়া কিংবা উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার পরে ‘অ্যাসিড শাসনের’ সুতোয় এ বার জড়িয়ে গেল মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি।
তবে পাঁশকুড়ার ঘটনার মতোই, যাকে লক্ষ করে অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল নবম শ্রেণির সেই ছাত্রীর তুলনায় প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া তার দুই ভাই-বোনের জখম গুরুতর।
জখম তিন ভাই-বোনকে প্রথমে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গভীর রাতে ওই কিশোরীর বোন এবং বছর সাতেকের ভাইকে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে, ওই কিশোরীর ষষ্ট শ্রেণির পড়ুয়া বোন দু’ চোখেই দেখতে পাচ্ছে না। বুক-পিঠ-মুখ পুড়ে গিয়েছে তার ভাইয়ের।
বৃহস্পতিবার রাতে, মুর্শিদাবাদারে জলঙ্গির জোতছিদাম গ্রামে ওই অ্যাসিড-হামলার পরে অভিযুক্ত রিপন শেখ এবং সিটু মণ্ডলকে ওই গ্রাম থেকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মাস কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া সাক্ষী ছিল এমনই এক ঘটনার। সে ক্ষেত্রেও, বিয়ে করতে রাজি না-হওয়ায় জানলা গলিয়ে ঘুমন্ত কিশোরীর গায়ে অ্যাসিড ছুড়তে গিয়ে ছিল তার ‘প্রেমিক’। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট সে অ্যাসিডে দগ্ধ হয়েছিল তার নাবালিকা বোন।
দেশ জুড়ে মহিলাদের উপরে অ্যাসিড-হামলা বাড়তে থাকায় গত বছর দেশের সর্বোচ্চ আদালত অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। তবে সে নির্দেশে প্রশাসনের যে টনক নড়েনি চার মাসে অন্তত পাঁচটি অ্যাসিড-হামলায় তা স্পষ্ট। ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, “ওই দুই যুবক কোথা থেকে অ্যাসিড জোগাড় করল আমরা তা জানার চেষ্টা করছি।”
বৃহস্পতিবার রাতে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী ও তার দুই ভাই-বোনকে নিয়ে শুয়েছিল। অভিযোগ, রিপন ও সিটু জানালা দিয়ে ওই ছাত্রীকে লক্ষ করে অ্যাসিড ছোড়ে। তাদের চিৎকারে জেগে যান পড়শিরা। পালাতে গিয়ে অভিযুক্ত দুই যুবক তাদের সাইকেল এবং চটি ফেলে গিয়েছিল। যা দেখে পুলিশের ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে। ওই কিশোরীর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রিপন স্থানীয় কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বেশ কিছুদিন ধরেই সে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করছিল। মেয়েটির বিয়ের তোড়জোড়ও করছিলেন বাড়ির লোক। ওই কিশোরী বলে, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে রিপন। ফের বিয়ের জন্য জোরাজুরি করতে থাকে। আমি স্পষ্টই না বলে দিয়েছিলাম।” অভিযোগ, রাতে তারই ‘শাস্তি’ হিসেবে অ্যাসিড ছোড়া হয় ওই কিশোরীকে।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, “মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার খবর পেয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি। ১৬ নভেম্বর মেয়ের বিয়ের দিনও ঠিক করে ফেলেছিলাম। তারই শাস্তি দিল আমার ছেলে-মেয়েকে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy