Advertisement
E-Paper

ভোট শেষে কেউ ঘরবন্দি, কেউ বৈঠকে

টানা প্রচারের ধকল শেষে ভোটের পরের দিনটা ঘরবন্দি হয়েই কাটালেন বেশিরভাগ প্রার্থী। কারও সকাল শুরু হয়েছে যোগ সাধনার মধ্যে দিয়ে। ভোটগণনার দিনে কী করতে হবে, সেই পরিকল্পনা করে কারও দিন কেটেছে। তবে ব্যতিক্রমী ছিলেন অধীর চৌধুরী। ভোটের পরের দিন অন্য প্রার্থীরা যখন নিশ্চিন্তে নিজেদের মতো করে সময় কাটালেন তখন তিনি ঘুরে বেড়ালেন কর্মীদের বাড়ি। নির্বাচনের দিনই ভোট মিটতে চেনা চেহারায় ফিরেছিল বহরমপুর।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০০:১৮
মঙ্গলবার আক্রান্ত কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এই ভাবেই কথা শুনলেন অধীর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

মঙ্গলবার আক্রান্ত কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এই ভাবেই কথা শুনলেন অধীর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

টানা প্রচারের ধকল শেষে ভোটের পরের দিনটা ঘরবন্দি হয়েই কাটালেন বেশিরভাগ প্রার্থী। কারও সকাল শুরু হয়েছে যোগ সাধনার মধ্যে দিয়ে। ভোটগণনার দিনে কী করতে হবে, সেই পরিকল্পনা করে কারও দিন কেটেছে। তবে ব্যতিক্রমী ছিলেন অধীর চৌধুরী। ভোটের পরের দিন অন্য প্রার্থীরা যখন নিশ্চিন্তে নিজেদের মতো করে সময় কাটালেন তখন তিনি ঘুরে বেড়ালেন কর্মীদের বাড়ি। নির্বাচনের দিনই ভোট মিটতে চেনা চেহারায় ফিরেছিল বহরমপুর। শহরের সৈয়দাবাদ এলাকা জুড়ে শাসক দল এবং কংগ্রেসের গণ্ডগোলের জেরে কুঞ্জঘাটা, গির্জাপাড়া, মোহন রায় পাড়া অঞ্চলে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে এ দিন সকাল থেকেই কর্মীদের বাড়ি বাড়ি ছুটে বেড়ালেন বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। কর্মীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, “ভয়ের কিছু নেই। আমি আছি তো! প্রয়োজনে এই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকব।”

তৃণমূলের কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের প্রার্থী তাপস পাল ঘুম থেকে উঠেছেন বেলা দশটায়। বহরমপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনের ঘুম থেকে উঠতে আটটা বেজেছে। তারপরে হালকা মাখন দিয়ে দুটো টোস্ট ও এক গ্লাস দুধ খেয়ে চলে যান ভাগীরথীর পাড় লাগোয়া দলীয় কার্যালয়ে। তবে আর পাঁচটা দিনের মতোই এদিনও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। ঘুম থেকে উঠে চণ্ডীপাঠ শুনে প্রাণায়াম। তারপরে স্নান করে পাগলাচণ্ডীর চণ্ডী মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়েছেন। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে গোলাপ গাছের পরিচর্যা করেছেন। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ মঙ্গলবার পাগলাচণ্ডীর মন্দিরে খুব বড় উৎসব হয়। সকালে সেখানে গিয়ে পুজো দিয়েছেন। বলেন, “বাইরে বিশেষ বের হব না। অনেক লোকজন আসছেন দেখা করতে। তাঁদের সময় দিতে হচ্ছে। বাড়িতে আত্মীয়স্বজন এসেছেন। তাঁদের সঙ্গেই সময় কাটাব।”

তবে ভোট মিটতেই কৃষ্ণনগর ছেড়ে কল্যাণী চলে গিয়েছেন কৃষ্ণনগরের কংগ্রেস প্রার্থী রাজিয়া আহমেদ। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে কৃষ্ণনগরের কুর্চিপোতায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন তিনি। রাজিয়া বলেন, “ভোটের ফল নিয়ে একটা টেনশন আছেই। তাই নিজেকে হালকা করতে আত্মীয়ের বাড়িতেই চলে এসেছি।” ভোটের ফল নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তাপসবাবুও। তাঁর কথায়, “আজ আর যেন কিছু করতে ইচ্ছা করছে না। যে যাই বলুন না কেন, ফল নিয়ে একটা উদ্বেগ তো থাকবেই।”

সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা-র অবশ্য ছুটি ছিল না। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনেছেন। তারপরে স্নান খাওয়া সেরে সোজা ওয়ার্ড অফিসে বসে জমে থাকা কাজ সেরেছেন কল্যাণী পুরসভার বিরোধী দলনেতা শান্তনুবাবু। তিনি বলেন, “টানা প্রচারে ব্যস্ত থেকেছি। বেশিরভাগ দিনই বাড়ি ফিরতে পারিনি। কৃষ্ণনগরে পার্টি অফিসে থেকেছি।” বেলা গড়াতেই সোজা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটেছেন কৃষি বিজ্ঞানী শান্তনুবাবু। সেখানে দীর্ঘ দিন পরে সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করে গবেষকদের কাজের খোঁজ-খবর করে বিকেলে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে দলীয় মিছিলে পা মিলিয়েছেন।

বহরমপুর পুরসভার বিজেপি প্রার্থী দেবেশ অধিকারী এ দিন সকালে উঠে অনেক দিন পরে শান্ত মনে প্রায় ঘন্টা খানেক প্রাণায়ম করেছেন। তারপরে বাজারে গিয়েছেন। পরিচিতদের সঙ্গে নির্ভেজাল আড্ডা দিয়ে চা খেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে ক্লান্ত থাকায় প্রাণায়মে বসেননি আরএসপি-র প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর সারা দিন প্রায় শুয়ে বসেই কেটেছে। দুপুরের মেনুতে ছিল ভাত ডাল সব্জি ছোট মাছের ঝাল আর আমের চাটনি। দেবেশবাবু দুপুরে খেয়েছেন ভাত ঢেঁড়শ ভাজা উচ্ছে ভাজা পোনা মাছের ঝোল চাটনি দই। ইন্দ্রনীলবাবুর দুপুরের মেনুতে ছিল চারাপোনার তরকারি ডাল আলু সেদ্ধ টক দই।

রানাঘাট কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রতাপকান্তি রায় ও বিজেপি-র সুপ্রভাত বিশ্বাস সারা দিন বাড়িতে বিশ্রামেই ছিলেন। কিন্তু সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বীরনগর দলীয় অফিসে সিপিএম প্রার্থী অর্চনা বিশ্বাস দলীয় কর্মীদের নিয়ে যেভাবে মিটিং করলেন, তাতে তাঁকে দেখে কে বলবে যে, ভোট মিটে গিয়েছে। আড়ংঘাটার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অর্চনাদেবী বলেন, “ভোট মিটলেও ছুটি নেই। এখানে সকলের সঙ্গে আলোচনা সেরে ছুটব নবদ্বীপ, মাজদিয়া, চাকদহ, শ্যামনগর সহ ছ’টি জায়গায়। সেখানে আমাদের দলীয় কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজ খবর নিতে হবে।” রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণী বি ব্লকের বাসিন্দা তাপস মণ্ডলও মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনের সঙ্গে একটা সভা সেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।

lok sabha election adhir chowdhury congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy