হেরোইনের টাকা জোগাড় করার উদ্দেশ্যে বাড়িতে ঢুকে মাসিকে ভোজালি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানোর অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বহরমপুর থানার ভাকুড়ির তালবাগান পাড়া এলাকায়। ঘটনার পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা কুন্তল দাস নামে বহরমপুরের বিষ্ণুপুর এলাকার ওই যুবককে হাতে-নাতে ধরে গণপিটুনি দেন। কৃষ্ণা মণ্ডল নামে মধ্য চল্লিশের ওই মহিলাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির বন্দোবস্ত করে। বহরমপুর থানার আইসি অরুণাভ দাস বলেন, “চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই ওই যুবক বাড়িতে ঢুকেছিল বলে তদন্তে অনুমান।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে কৃষ্ণাদেবীর স্বামী মারা গিয়েছেন। ঘটনার সময়ে বাড়িতে তিনি ছাড়া প্রতিবন্ধী কিশোরী কন্যা নিবেদিতা ছিল শুধু। কদমতলায় তাঁদের ওষুধের দোকানে ছিলেন বড় মেয়ে অনিন্দিতা। কুন্তল সম্পর্কে কৃষ্ণাদেবীর বোনঝি-র দেওর হয়। সেই সম্পর্কে কুন্তল তাঁকে মাসি বলে ডাকত। এ দিন দুপুরবেলা মোটর বাইকে চড়ে কৃষ্ণাদেবীর বাড়িতে আসে সে। কৃষ্ণাদেবী বলেন, “ঘরে ঢুকেই জল খাওয়ার কথা বলে ও। আমি জল আনার জন্য রান্নাঘরে যেতেই কুন্তল ভোজালি বার করে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে।” কৃষ্ণাদেবীর আর্তনাদ শুনে আশপাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসে। সেই সময় কুন্তলকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে পাড়ার লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলে। তারপর তাকে এলোপাথাড়ি কিল-চড়-ঘুষি মারতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করে কুন্তলকে। পুলিশের দাবি, কুন্তল নিয়মিত হেরোইনের নেশা করত। তার আচার-আচরণে তিতি-বিরক্ত বাড়ির লোকজনও। কুন্তলের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী গোপাল বিশ্বাস বলেন, “মাস দু’য়েক আগে মোটরবাইক কেনার টাকা দিয়েছি। ওই টাকা না দিলে হয়তো আমাকেই খুন করে ফেলত। সারা দিন কি করে বেড়ায় আমার জানা নেই। রাতে বাড়িতে শুতে আসে। আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।”
হেরোইন-এর নেশা করার কথা অবশ্য কুন্তলও স্বীকার করেছে। তবে তার দাবি, “এদিন সকালে মধুপুর ছাপাখানার গলির বাসিন্দা পরিচিত এক যুবক আমাকে মাসির বাড়ি নিয়ে গিয়েছিল। ওই যুবকই মাসিকে ভোজালি মারে। আমি বাধা দিই।” যদিও পুলিশ নেশাগ্রস্ত ওই যুবকের কথা বিশ্বাস করছে না মোটেই। কুন্তল একাই ছিল বলে জানিয়েছেন মাসি কৃষ্ণাদেবীও। কুন্তলের বিরুদ্ধে অভিযোগও হয়েছে থানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy