Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সুতিতে চায়ের ট্রাক লুঠ, ধৃত তিন

সপ্তাহ দুয়েক আগে সুতির কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পথ থেকে লুঠ হয়ে গিয়েছিল ১৫ টন চা বোঝাই একটি লরি। মঙ্গলবার রাত্রে সামশেরগঞ্জ থানার নিমতিতার এক বিড়ি কারখানার মালিকের গুদাম থেকে চা-সহ লরিটি উদ্ধার করল পুলিশ। সেই সঙ্গে লরির চালক তথা মালিক হাসান শেখ-সহ তার আরও দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। হাসানের বাড়ি সুতি থানারই গাজিপুর গ্রামে। তবে ওই বিড়ি কারখানার মালিক পলাতক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৭
Share: Save:

সপ্তাহ দুয়েক আগে সুতির কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পথ থেকে লুঠ হয়ে গিয়েছিল ১৫ টন চা বোঝাই একটি লরি। মঙ্গলবার রাত্রে সামশেরগঞ্জ থানার নিমতিতার এক বিড়ি কারখানার মালিকের গুদাম থেকে চা-সহ লরিটি উদ্ধার করল পুলিশ। সেই সঙ্গে লরির চালক তথা মালিক হাসান শেখ-সহ তার আরও দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। হাসানের বাড়ি সুতি থানারই গাজিপুর গ্রামে। তবে ওই বিড়ি কারখানার মালিক পলাতক।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে অসমের একটি চা বাগান থেকে কলকাতার ইস্টার্ন রোড ক্যারিয়ার নামে একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির মাধ্যমে ওই চা পাঠানো হচ্ছিল কলকাতায়। অসমের গোলাঘাট থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পথ ধরে লরি মালিক তথা চালক হাসান নিজেই চা বোঝাই লরিটি নিয়ে কলকাতা যাচ্ছিলেন। সঙ্গে দুই সহযোগী অরঙ্গাবাদের আমিরুল মোমিন ও ঝাড়খণ্ডের রাইসুদ্দিন শেখ ছিলেন। পথে সুতির কাছে লুঠ হয়ে যায় লরিটি। হাসান সুতি থানায় গিয়ে লরি লুঠের অভিযোগ জানান। ইতিমধ্যে অসম পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে চা বোঝাই লরি লুঠের তদন্তে নামে সুতি থানার পুলিশ। অসমের গোলাঘাট থানা থেকে এসআই বিটুপান চুটিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনার তদন্তে সুতিতে আসেন। থানায় ফের লরি মালিক হাসানকে ডেকে অসম ও সুতি থানার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তাতে ভেঙে পড়েন হাসান। জানান, সুতির গাজিপুরে পৌঁছে নিজেই দুই সহযোগী নিয়ে লরি-সহ চা ওই বিড়ি মালিকের গুদামে ঢুকিয়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ আটক করে আরও দুজনকে। এরপরই মঙ্গলবার রাতে সামশেরগঞ্জ থানার নিমতিতার রামকৃষ্ণ বিড়ির কারখানার মালিকের গুদামে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় লরি। লরিতে থাকা ১৫ টন চায়ের পুরোটাই উদ্ধার করা হয়েছে। যার বতর্মান বাজার তবে গুদামে নিয়ে গিয়ে চায়ের বস্তাগুলি সাধারণ বস্তার মধ্যে পুরে এমন ভাবে সেলাই করা ছিল যে বাইরে থেকে তা দেখে বোঝার উপায় ছিল না। এই ভাবেই পুজো ও ঈদের মধ্যে পুলিশের ব্যস্ততার সুযোগ বুঝে বিড়ি বোঝাই লরির সঙ্গে লরি-সহ চা অন্যত্র পাচারের চেষ্টায় ছিল ওই বিড়ি মালিক। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই বিড়ি কারখানার মালিক সামসুদ্দিন বিশ্বাস পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে এখনও ধরা যায়নি।”

বিড়ি কারখানার মালিক সামসুদ্দিন বিশ্বাস ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী হিসেবে জিতে নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন। ২০০৮ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে প্রার্থী হন পঞ্চায়েত সমিতির। পরে পুনরায় সিপিএম ও বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস সদস্যদের সমর্থন নিয়ে সামশেরগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। সিপিএম ধুলিয়ান জোনাল কমিটির সম্পাদক রোবজুল ইসলাম অবশ্য বলেন, “দলের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্কই নেই। অভিযুক্ত বরাবরই কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে রাজনীতি করেছেন। এখনও সেটাই করেন।”

কংগ্রেসের সুতি-২ ব্লক সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “এক সময় কংগ্রেস করলেও তাঁর বাড়বাড়ন্ত সিপিএমের হাত ধরেই।” বুধবার ধৃত ৩ জনকেই জঙ্গিপুর আদালতে হাজির করে অসমের গোলাঘাট থানার পুলিশ। বিচারক তাঁদের ৩ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে অসম নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। যে ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি হাসানের লরিতে করে কলকাতায় চা পাঠাচ্ছিলেন তাঁর ম্যানেজার সঞ্জয় কুমার যাদব বলেন, “প্রতিদিন শতাধিক লরিতে করে মালপত্র যায় বিভিন্ন জায়গায়। সেই ভাবেই প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা মূল্যের চা পাঠানো হয় ওই লরিতে। এ ভাবে পরিকল্পনা করে তা যে লুঠ করা হবে তা ভাবিনি।” যেহেতু এই লুঠের ঘটনাটিতে অসমের গোলাঘাট থানায় মামলা হয়েছে তাই অভিযুক্তদের সেখানেই নিয়ে এ দিনই রওনা হয়েছে অসম পুলিশের দলটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raghunathganj truck decoity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE