Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সহায়িকার জমিতে অঙ্গনওয়াড়ি, কাজ না করেও মিলছে বেতন

সরকারি বরাদ্দ টাকায় সহায়িকার ব্যক্তিগত জমিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন উঠেছে। শুধু তাই নয় প্রায় ১১ মাস অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে না গিয়ে বেতনের টাকা তুলছেন ওই সহায়িকা। মুর্শিদাবাদের সুতি ২ ব্লকের ২৩৯ নম্বর লক্ষ্মীপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমনই নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৯
Share: Save:

সরকারি বরাদ্দ টাকায় সহায়িকার ব্যক্তিগত জমিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভবন উঠেছে। শুধু তাই নয় প্রায় ১১ মাস অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে না গিয়ে বেতনের টাকা তুলছেন ওই সহায়িকা। মুর্শিদাবাদের সুতি ২ ব্লকের ২৩৯ নম্বর লক্ষ্মীপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমনই নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। অভিযোগ, ওই সহায়িকার স্বামী তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে একের পর এক অনিয়ম দেখেও হাত গুটিয়ে বসে আছে প্রশাসন।

২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর গ্রামের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রায় ১০০ শিশু পড়াশোনা করে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে কাজ করেন গ্রামের সুচিত্রা সরকার। সহায়িকা ওই গ্রামেরই অর্চনা চৌধুরী। সাত-সাত বার স্থান বদলের পরে কর্মী সুচিত্রাদেবীর বাড়ির একতলায় অঙ্গনওয়াড়ি বসেছিল। প্রশাসন থেকে অঙ্গনওয়াড়ির ভবন তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব এলে সহায়িকার স্বামী জীবন চৌধুরী জমি দানে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই অবস্থায় আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে ওই জমিতে ভবন নির্মাণ হয়। বছর দুই আগে কাজ শেষ হয়ে গেলেও সেই জমি আর সরকারের নামে দান করেননি জীবনবাবু। উল্টে সেই সরকারি ভবনের উপর দোতলা তুলে সপরিবারে বসবাস করছেন তিনি। জীবনবাবু মেনে নেন, এখনও জমি দান করা হয়নি। অঙ্গনওয়াড়ি ভবনের উপরে দোতলা তৈরির কথাও মেনে নেন তিনি। শুধু বলেন, “আমি কিন্তু ওখানে থাকি না।”

এ দিকে, জীবনবাবুর স্ত্রী অর্চনাদেবী কাজে না গিয়েই বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ। ওই অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী সুচিত্রা সরকারের অভিযোগ, “সহায়িকা ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসেন না। হাজিরা খাতায় সইও নেই তাঁর। ফাঁকা খাতায় সহায়িকার অনুপস্থিতি দেখে সই করে গিয়েছেন আইসিডিএসের সুপারভাইজর। এক হাতে আমাকেই শিশুদের পড়াতে হয়, খাওয়াতে হয়, বাসনও মাজতে হয়। সব ঘটনা লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে সুতি ২ ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের আধিকারিককে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তিনিই বলতে পারবেন।”

সুপারভাইজর জয়ন্তী চক্রবর্তী মেনে নেনে জমিটা এখনও সরকারের নামে দান হয়নি। তিনি বলেন, “ওই সহায়িকা কেন্দ্রে আসছেন না দীর্ঘ দিন। তবু কী ভাবে প্রতি মাসে বেতন পাচ্ছেন সেটা আমার জানা নেই। সবটাই সিডিপিও জানেন। তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।”

সিডিপিও মিতা নন্দী আবার দায় এড়িয়ে বলেন, “আমি মাস চারেক হল ওই ব্লকের দায়িত্ব নিয়েছি। তাই এই অভিযোগগুলো সম্পর্কে জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মিতাদেবী কিছুই জানেন না বলে দায় এড়ালেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী সুচিত্রা সরকার জানান, লিখিত ভাবে একাধিকবার তাঁর অফিসে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সর্বশেষ অভিযোগটি রেজিষ্ট্রি ডাকে পাঠানো হয়েছে। সুতি ২ ব্লক আইসিডিএস অফিস চিঠিটি পেয়েছে গত ২৬ জুলাই।

ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আরএসপি ও কংগ্রেস করা জীবনবাবু এখন তৃণমূলের নেতা। তাই ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে, তৃণমূলের সুতি ২ ব্লকের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, “জীবনবাবু দলের কোনও পদে নেই। তিনি অনিয়ম কিছু করে থাকলে দল সমর্থনও করবে না। এক্ষেত্রে প্রশাসনের আইন মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raghunathganj without having to work anganwadis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE