Advertisement
E-Paper

হাঁটু জলের শিঙি-শোলে বুক বেঁধেছেন মর্জিনারা

দিঘি কিংবা পুকুর নয়। নিতান্ত আটপৌরে ডোবাতে মাছ চাষ করেই ওঁরা তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সংসারে নুন আনতে ভাত ফুরোয়। তবে সেই অভাবের সঙ্গে আপোস না করে এ ভাবেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায় তা প্রমাণ করে দিয়েছেন চাকদহের দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মর্জিনা বিবি, সরিফা মণ্ডলেরা।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৬:৩৪

দিঘি কিংবা পুকুর নয়। নিতান্ত আটপৌরে ডোবাতে মাছ চাষ করেই ওঁরা তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

সংসারে নুন আনতে ভাত ফুরোয়। তবে সেই অভাবের সঙ্গে আপোস না করে এ ভাবেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায় তা প্রমাণ করে দিয়েছেন চাকদহের দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মর্জিনা বিবি, সরিফা মণ্ডলেরা। তাঁরা নিজেরা যেমন স্বনির্ভর হয়েছেন তেমনি স্বনির্ভর করেছেন পড়শিদেরও। গোষ্ঠী তৈরি করে তাঁরা চাষ করছেন কই, মাগুর, সিঙি।

হার না মানা ওই মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছে নদিয়া জেলা প্রশাসনও। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জিয়ল মাছ চাষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তা দিনকয়েক আগে জেলায় একশো দিনের কাজ পরিদর্শনে আসেন। তিনিও মহিলাদের মাছ চাষের ভূয়সী প্রশংসা করেন। আর মাছ চাষ করে এখন শ্রী ফিরেছে মর্জিনাদের সংসারে।

সরিফা মণ্ডল জানান, বছর দেড়েক আগেও তাঁদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জুটত না। এখন সেই অভাব অনেকটাই ঘুঁচেছে। চাকদহের বিডিও নিশীথ ভাস্কর পাল জানান, জিয়ল মাছ চাষের প্রকল্প তাঁরা মৎস্য দফতর থেকে জানতে পারেন। মর্জিনা বিবিদের তিনি বিষয়টি জানান। তাঁরাও মাছ চাষে রাজি হয়ে যান।

মাছ চাষের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১৫ কাঠা জমি প্রয়োজন ছিল। তাঁরা জমি লিজ নেন। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জমিতে মাটি কেটে ছোট ছোট সাতটি ডোবা বানানো হয়। মাটি কেটেছিলেন গোষ্ঠীর মহিলারাই। মজুরি হিসেবে পানা লাখ দেড়েক টাকা। মাছ চাষের জন্য দরকার ছিল আরও পুঁজির। সহজ শর্তে ব্যাঙ্ক- ঋণের ব্যবস্থা করে দেয় প্রশাসন। মৎস্য দফতরের কাছ থেকে মেলে প্রশিক্ষণ।

গত বছর মাছ চাষে খরচ হয়েছিল সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা। আর মাছ বিক্রি করে উপার্জন হয়েছিল প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। লাভ পাক্কা পাঁচ লক্ষ টাকা। গোষ্ঠীর একেক জন বছরে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। ওই মহিলাদের মাছ নিয়ে সাতসকালে বাজারেও যেতে হয় না। ব্যবসায়ীরা গ্রামে এসেই মাছ কিনে নিয়ে যান।

মর্জিনাদের সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে আশপাশের গ্রামের আরও ১০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই মাছ চাষ শুরু করেছে। পাল্টে যাচ্ছে গ্রামগুলির আর্থ-সামাজিক চেহারা। কেউ লাভের টাকায় ভিটে-মাটি কিনেছেন। কেউ কিনেছেন আবাদি জমি। তাঁদের ছেলে-মেয়েরা এখন নিয়মিত স্কুলে যায়। কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুন্ডু বলেন ‘‘প্রশাসন সাহায্য করেছে ঠিকই। তবে ওই মহিলাদের লড়াইকে সম্মান জানাতেই হয়।’’

Self Help Group
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy