Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দেহ নিয়ে টানাপড়েন বহাল, উত্তপ্ত নানুর

এ দিন বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ মৃতদেহ নিতে হাসপাতালে আসেন স্বরূপের স্ত্রী, পরিবার এবং বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। কিন্তু, যেখানে দেহ রাখা হয়েছে,  হাসপাতালের সেই পুলিশ মর্গ ছিল তালাবন্ধ। মৃতদেহ তাঁদের দেখতে দেওয়া হয়নি।

উত্তপ্ত: দেহ দিতে দেরি কেন, তা ঘিরে উত্তেজনায় আগুন জ্বলল শহরের রাজপথে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

উত্তপ্ত: দেহ দিতে দেরি কেন, তা ঘিরে উত্তেজনায় আগুন জ্বলল শহরের রাজপথে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বাসুদেব ঘোষ
বোলপুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১২
Share: Save:

মৃত্যু হয়েছে রবিবার সন্ধ্যায়। নিহত বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেওয়া নিয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অব্যাহত রইল জট। ভাঙচুর, অবরোধে অশান্ত হয়ে উঠল বোলপুর। তার মধ্যে এ দিন সকালে কলকাতার এন্টালি থানায় স্বরূপের মৃতদেহ চুরির অভিযোগ দায়ের করলেন তাঁর পরিজনেরা। শেষ পর্যন্ত এ দিন রাতে স্বরূপের পরিবারকে শর্তসাপেক্ষে মৃতদেহ নেওয়ার অনুমতি দিল প্রশাসন।

অশান্তির সূত্রপাত সোমবার। নানুরে গুলিবিদ্ধ ওই বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয় কলকাতার হাসপাতালে। মৃতের পরিজন এবং বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর দেহ সোমবার দলের রাজ্য দফতরে নিয়ে যেতে চাইলেও পুলিশ বাধা দেয়। যার জেরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (এনআরএস)-এ সারা দিন অশান্তি চলে। শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ না নিয়েই হাসপাতাল ছাড়েন মৃতের পরিজন এবং বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তার পর সোমবার গভীর রাতে মৃতের পরিজনেদের খবর না দিয়ে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে বোলপুর চলে যায় বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে এন্টালি থানায় মৃতদেহ চুরির অভিযোগ করেন মৃতের স্ত্রী চায়না। বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ মৃতদেহ শনাক্ত করার অধিকার দিয়েছিল মৃতের শ্যালক সন্তোষ গড়াইকে। কিন্তু তাঁকে বা তাঁর পরিবারের কাউকে খবর না দিয়ে স্বরূপের মৃতদেহ এনআরএস-এর মর্গ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হল। দেহ শনাক্ত করল কে? আমরা তো সরকারি ভাবে জানিই না, কে মৃতদেহ নিয়ে গেল।’’ দেবজিৎ বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করব আমরা।’’

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। দলের নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে কয়েকটা আসন পেয়ে বিজেপি নিজেদের বিরাট কিছু ভাবছে। আসলে ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এ সব গোলমাল করে কিছু হবে না। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করছে।’’

এ দিকে, স্বরূপের মৃতদেহ নিয়ে পুলিশ যায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। এ দিন বিকেলে মৃতদেহ নিতে হাসপাতালে আসেন স্বরূপের স্ত্রী, পরিবার এবং বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালের মর্গে দেহ দেখতে গিয়ে তাঁরা দেখেন মর্গ তালাবন্ধ। প্রতিবাদে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। হাসপাতালের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন বিজেপি সমর্থকেরা। অবশেষে এসডিপিও নিহতের পরিবারকে দেহ হস্তান্তরের অনুমতি দেন তিনটি শর্তে। এক, মৃতদেহ নিয়ে মিছিলে যে সব গাড়ি থাকবে, সেগুলির নম্বর পুলিশকে দিতে হবে। দুই, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেহ হস্তান্তর করতে হবে। তিন, নানুর থানা থেকে নিতে হবে ডেথ সার্টিফিকেট। যদিও প্রশাসনের অনুমতি মেলার পরেও নতুন করে জটিলতা তৈরি হয় বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল মৃতদেহ পরিবারের হাতে দিতে টালবাহানা করায়। বিজেপির অভিযোগ, হাসপাতাল বলে, নানুর থানার ছাড়পত্র ছাড়া দেহ দেওয়া হবে না। রাতে ম্য়াজিস্ট্রেট এবং নানুর থানার ওসি হাসপাতালে পৌঁছন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nanur BJP Murder TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE