Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Child Trafficking

সদ্যোজাতকে বিক্রি দম্পতির! ক্রেতাও ‘জড়িত’ শিশু পাচারে, নরেন্দ্রপুরে ধৃত তিন অভিযুক্ত

গত অক্টোবরে সন্তান প্রসবের আগেই ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে বিক্রির রফা করেছিলেন এক দম্পতি। তবে টাকাপয়সা নিয়ে ঝামেলা বাধায় শিশু পাচার চক্রের হদিশ মেলে। দাবি অভিযোগকারীর।

Representational picture of arrested person

নরেন্দ্রপুর থানায় শিশু পাচারের অভিযোগ করেছেন কামালগাজি বাইপাসে একটি দোকানের মালিক রাজেশ মণ্ডল। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নরেন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:২১
Share: Save:

সদ্যোজাত সন্তানকে ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক মহিলার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন এক দম্পতি। তবে সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দেন ক্রেতা। ওই দম্পতি এবং এক মহিলার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নরেন্দ্রপুরের এক বাসিন্দা। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির পর মঙ্গলবার বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ধৃতেরা শিশু পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা হলেন রাকেশ শর্মা, তাঁর স্ত্রী নমিতা ব্যাপারী এবং আসমা বিবি। ওই দম্পতি নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার কন্দর্পপুরে বসবাস করেন৷ আসমার বাড়ি সোনারপুরের মকরামপুরে। অভিযোগ, গত অক্টোবরে রাকেশের স্ত্রী নমিতা অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন তাঁদের সঙ্গে আসমা বিবি এবং তাঁর স্বামীর মধ্যে ২ লক্ষ টাকায় শিশু বিক্রির ব্যাপারে রফা হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে সন্তানের জন্ম দেন নমিতা। এর পর দিন কয়েকের শিশুটিকে আসমা বিবি এবং তাঁর স্বামীর কাছে বিক্রি করেন নমিতা এবং রাকেশ। তবে শিশুটিকে কেনার পর সদ্যোজাতকে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে আসমা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। ২ লক্ষ টাকায় রফা হলেও টাকাপয়সা ঠিক মতো পাননি বলে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা শুরু বলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে বলে দাবি। যদিও পুলিশের কাছে আসমার দাবি, শিশু পাচারে যুক্ত নন তাঁর স্বামী।

নরেন্দ্রপুর থানায় শিশু পাচারের অভিযোগ করেছেন কামালগাজি বাইপাসে একটি দোকানের মালিক রাজেশ মণ্ডল। ধৃত রাকেশ ওই দোকানের কর্মচারী। দোকানমালিকের দাবি, সম্প্রতি তাঁর দোকানে এসে কোনও কিছুর প্রাপ্য টাকা চেয়ে রাকেশের উপর চড়াও হয়েছিলেন আসমা বিবি। সে সময় রাজেশ শিশু পাচারের বিষয়টি জানতে পারেন। এর পরেই থানায় অভিযোগ করেন তিনি। রাজেশের কথায়, ‘‘মাস ছয়েক ধরে আমার দোকানে কাঠের কাজ করেছিলেন রাকেশ শর্মা নামে এক মিস্ত্রি। তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আমার দোকানে এসে কাজ চেয়েছিলেন বলে ওঁকে রেখেছিলাম। তবে এক দিন দোকানে ঝামেলা হচ্ছে শুনে রাকেশকে জোরাজুরি করায় (শিশু পাচারের) বিষয়টি জানতে পারি। সন্তান প্রসব হওয়ার পর সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দেন রাকেশ এবং তাঁর স্ত্রী। এর পর থানায় অভিযোগ করি।’’

পুলিশ সূত্রে আরও খবর, দোকান মালিকের অভিযোগের তদন্তে নেমে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৭, ৩৭০, ৩৭২, ১২০বি এবং জুভেনাইল জাস্টিস-এর ৮১ ধারায় (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন অ্যাক্ট) মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃতদের ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে বারুইপুর মহকুমা আদালতে৷ বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি মোহিত মোল্লা বলেন, ‘‘শিশু পাচারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE