Advertisement
E-Paper

অবহেলায় পড়ে নিবেদিতার সমাধি

দার্জিলিং স্টেশন থেকে নীচে এই জায়গাটার নাম মুর্দাহাটি। এখানেই শ্মশান। দার্জিলিঙেরই রায় ভিলাতে ১৯১১ সালের ১৩ অক্টোর মারা যান নিবেদিতা। বছর কয়েক আগে লেবং কার্ট রোডে সেই রায় ভিলা তুলে দেওয়া হয় রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৪
উপেক্ষিত: দার্জিলিঙে নিবেদিতার সমাধি। —নিজস্ব চিত্র।

উপেক্ষিত: দার্জিলিঙে নিবেদিতার সমাধি। —নিজস্ব চিত্র।

চারপাশ ঘেরা ফার্ন আর পাহাড়ি বুনো লতাপাতায়। দার্জিলিঙে পাহাড়ের কোলে শুয়ে রয়েছেন ভগিনি নিবেদিতা। অনাদরে। খসে পড়ছে সমাধির গায়ের পলেস্তরা। ফেটে গিয়েছে স্তম্ভগুলো। বিবর্ণ হয়ে পড়েছে তার রং। শ্যাওলার ছোপ পড়েছে বিভিন্ন জায়গাতে। অথচ, এ বছরই তাঁর জন্মের সার্ধ শতবর্ষ।

দার্জিলিং স্টেশন থেকে নীচে এই জায়গাটার নাম মুর্দাহাটি। এখানেই শ্মশান। দার্জিলিঙেরই রায় ভিলাতে ১৯১১ সালের ১৩ অক্টোর মারা যান নিবেদিতা। বছর কয়েক আগে লেবং কার্ট রোডে সেই রায় ভিলা তুলে দেওয়া হয় রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে। তা সংস্কার করে সাজানো হয়েছে। সেখানেই গড়ে উঠেছে রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। কিন্তু নিবেদিতার সমাধি অবহেলাতেই পড়ে রয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসীরা কখনও স্থানীয় পুরসভা বা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। কখনও আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কাজের কাজ হয়নি।

রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী নিত্যসত্যানন্দ বলেন, ‘‘৭ বার দার্জিলিঙে এসেছিলেন নিবেদিতা। সব মিলিয়ে ছিলেন ২৭২ দিন। শেষ বার যখন আসেন তখন সান্দাকফুতে যাওয়ারও কথা ছিল। অসুস্থতার জন্য তা বাতিল করতে হয়।’’ তিনি জানান, মৃত্যুর পর মুর্দাহাটি শ্মশানে সৎকার করা হয় নিবেদিতার দেহ। চিতাভস্ম চারটি ভাগ করা হয়। এক ভাগ দিয়ে এখানেই সমাধি ক্ষেত্র গড়ে ওঠে। একটি পাঠানো হয় বেলুড় মঠে, একটি বোস ইন্সস্টিটিউটে। অপরটি নিয়ে যাওয়া হয় নিবেদিতার জন্মস্থান আয়ার্ল্যান্ডে। পরে ১৯২৫ সালে স্বামী অভেদানন্দ দার্জিলিঙের সমাধি ক্ষেত্রে স্মৃতি মন্দিরটি তৈরি করে দেন। তখন অবশ্য সেখানে নিবেদিতার মূর্তিটি ছিল না। সেটি তৈরি হয় ১৯৯৮ সালে তাঁর ভারতে আসার শতবর্ষ উপলক্ষে।

রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাকি তিনটি সমাধি ভাল অবস্থাতেই রয়েছে। বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে দার্জিলিঙের এই সমাধিটিই।

রামকৃষ্ণ মিশনের ভক্ত তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক কল্যাণ খান বলেন, যে মানুষটি নিজের সব কিছু এই দেশের জন্য দিয়ে গিয়েছেন, তাঁর সমাধি ক্ষেত্রটি কেউ সংস্কারে উদ্যোগী হবে না এটা দুর্ভাগ্যের। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই অবিলম্বে এটি সরকারের তরফেই দেখা হোক।’’

রায়ভিলায় বসে বইয়ের পাতা খুলে স্বামী নিত্যসত্যান্দ বলেন, ‘‘এখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময় নিবেদিতা বলেছিলেন, ‘দ্য বোট ইজ সিঙ্কিং, বাট আই শ্যাল সি দ্য সান রাইজ।’

সমাধিটি কবে নতুন করে সাজিয়ে তোলা সম্ভব হবে, সেই অপেক্ষায় তাঁরা সকলেই।

Sister Nivedita Darjeeling Grave নিবেদিতা রামকৃষ্ণ মিশন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy