কারমেল স্কুলের সামনে। ফাইল চিত্র
গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছেন, ‘‘ছেলেটা লাজুক প্রকৃতির।’’ পড়শি এবং গ্রামের নাচের স্কুলের ছাত্রীরাও বিশ্বাস করতে পারছেন না সৌমেন রানা কোনও খারাপ কাজ করতে পারেন।
কলকাতার কারমেল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সৌমেন দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন শুক্রবার। খবর শুনেই পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-১ ব্লকের বাড়িতে তাঁর মা বন্দনা রানা মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিশ্বাস করতে পারছেন না বছর পঁয়তাল্লিশের বন্দনাদেবী। তাঁর দাবি, “তদন্ত হোক। ছেলের ঘনিষ্ঠদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করুক। তাহলেই সত্যি সামনে আসবে। তাঁর দাবি, ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।
সৌমেনের বাবা শ্রীকান্ত দিনমজুর। কাজের জন্য তিনি কাঁথিতে। দাদা সুব্রত বেঙ্গালুরুতে বেসরকারি সংস্থার কর্মী। অমর্ষির শাঁখারিপাড়ার বাড়িতে একা থাকা বন্দনাদেবীকে সামলাচ্ছেন পড়শিরাই। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই নাচ অন্তপ্রাণ সৌমেন। গ্রামে তাঁর নাচের স্কুল রয়েছে। মাসছয়েক হল কারমেলে যোগ দিয়েছিলেন। প্রতি শনিবার রাতে বাড়ি আসতেন সৌমেন। রবিবার ব্লক অফিসের পাশে নাচের স্কুলে ক্লাস নিয়ে সোমবার ভোরে কলকাতায় চলে যেতেন। তাঁর নাচের স্কুলের ছাত্রী শিউলি রানা। অষ্টম শ্রেণির শিউলির বাড়ি সৌমেনের পাড়ায়। তার দাবি, “এখনও ওঁর কাছে নাচ শিখি। কখনও খারাপ আচরণ করেননি। তিনি কারমেলে এমন আচরণ করতে পারেন না।’’ অন্য ছাত্রীদেরও একমত।
অমর্ষি রঘুনাথ হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন সৌমেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরেশ কুমার সাউয়ের কথায়, “সৌমেন একটু লাজুক ছেলে ছিল। তবে নাচ ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। ও এমন কাজ করতে পারে বলে মনে হয় না।’’ একই দাবি ভূগোলের শিক্ষক পার্থরাজ মিশ্রের। তিনি বলেন, “বিশ্বাস হচ্ছে না। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলে সৌমেন পড়েছে। কোনওদিন এমন আচরণ দেখিনি। নাচে অনেক পুরস্কার পেয়েছে সে।’’ অমর্ষি গ্রামের বাসিন্দা অনুপম নন্দী বলেন, “ সৌমেন এমন ছেলে ছিল না। গ্রামে সুনাম রয়েছে। মনে হচ্ছে ফাঁসানো হয়েছে।’’
কিন্তু কেন তাঁকে ফাঁসানো হবে? সৌমেনের পিসি যমুনাদেবী কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘জানি না। আপনারা ছেলেটাকে বাঁচান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy