Advertisement
E-Paper

সুজন-গৌতমদের বিকল্পের খোঁজ দলে

রাজ্য জুড়ে বিপর্যস্ত সংগঠনে মেরামতির পথ খুঁজতে প্লেনামে যাচ্ছে সিপিএম। সেই সঙ্গেই দলের অন্দরে শুরু হয়েছে নেতৃত্ব স্তরে কিছু রদবদলের ভাবনা।ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে গত কয়েক বছরে সিপিএমের জেলায় জেলায় মুখ বদলেছে বেশ কিছু।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০১

রাজ্য জুড়ে বিপর্যস্ত সংগঠনে মেরামতির পথ খুঁজতে প্লেনামে যাচ্ছে সিপিএম। সেই সঙ্গেই দলের অন্দরে শুরু হয়েছে নেতৃত্ব স্তরে কিছু রদবদলের ভাবনা।

ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে গত কয়েক বছরে সিপিএমের জেলায় জেলায় মুখ বদলেছে বেশ কিছু। তিন বারের বেশি টানা সম্পাদক পদে থাকা যাবে না বলে সর্বভারতীয় স্তরেই দলের গঠনতন্ত্রে নতুন নিয়ম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার পরেও সংগঠনে গতি আনতে কিছু ক্ষেত্রে আরও পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন। পরবর্তী সম্মেলন আরও অন্তত দু’বছর পরে। তত দিন অপেক্ষা না করে প্লেনামের পরেই রদবদল সেরে ফেলার পক্ষপাতী সিপিএম নেতৃত্ব।

সম্ভাব্য রদবদলের তালিকায় সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম এখন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি একই সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক এবং দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীরও সদস্য। প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ভোটে হারার পরে বিধানসভার মধ্যে গুরুদায়িত্ব এখন সুজনবাবুর কাঁধে। বস্তুত, বিধানসভার বাইরেও পরিষদীয় দলকে নানা প্রান্তে দৌড়োদৌড়ি করতে হচ্ছে এখন। এই অবস্থায় জেলা সিপিএমের রোজকার দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়ছে সুজনবাবুর পক্ষে। দলের রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পরে সুর্যবাবু নিজেও বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু দল রাজি হয়নি। রাজ্য সম্পাদক হিসাবে তিনি খুব ভাল করে জানেন, সুজনবাবুর পক্ষে একসঙ্গে একাধিক জুতোয় পা গলিয়ে চলা কতটা কঠিন। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নতুন জেলা সম্পাদক নিয়ে আসতে আগ্রহী সূর্যবাবুর নেতৃত্বে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বড় অংশও। যাদবপুরের বিধায়ক হয়ে শুধু ওই এলাকাতেই নজর না দিয়ে সারা রাজ্যে দলের অন্যতম মুখ হয়ে উঠুন সুজনবাবু, এমনই চান বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সূর্যবাবুরা।

উত্তর ২৪ পরগনার সমস্যা আবার অন্য। ওই জেলায় গৌতম দেবকে সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পলিটব্যুরো থেকে বিশেষ অনুমতি এনে। যে হেতু একই সঙ্গে তাঁকে কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও জেলা— তিনটি কমিটিরই সদস্য হতে হয়েছিল। জেলায় এখনও তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। কিন্তু শারীরিক কারণেই গৌতমবাবুর পক্ষে জেলা সম্পাদকের কাজ দেখভাল করা সমস্যাজনক হয়ে যাচ্ছে। তাই উত্তর ২৪ পরগনাতেও বিকল্প মুখের সন্ধান করতে হচ্ছে।

জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির কাজকর্ম ইদানীং আলিমুদ্দিনের মাথাব্যথার কারণ। জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিরোধিতা করেছিলেন। তার পরে রাজ্য কমিটির বৈঠক-সহ কিছু ক্ষেত্রে জেলার অবস্থান রাজ্য নেতৃত্বের উল্টো দিকে গিয়েছে! সম্প্রতি জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ এবং সদর পঞ্চায়েত সমিতি যে ভাবে তৃণমূলের হাতে চলে গিয়েছে, তাতেও খুশি নয় আলিমুদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে সেখানে জেলা সম্পাদক বদল আসন্ন বলেই রাজ্য সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত।

গণসংগঠনেও বদলের আলোচনা হচ্ছে দলে। জেলা বা রাজ্য স্তরে যাঁরা গণসংগঠনের শীর্ষ কোনও পদ এবং দলের উপরের দিকে কমিটিতে আছেন, তাঁদের দ্বৈত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সূত্র বলে দেওয়া হয়েছে প্লেনামের খসড়া রিপোর্টে। সেই সূত্র মেনেই শ্রমিক বা মহিলা সংগঠনে কিছু বদল হতে পারে। আপাতত শ্রমিক ও খেতমজুর সংগঠনের উপরেই জোর দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বদল আনা সংগঠনকে সাজানোরই অঙ্গ। প্রয়োজন বুঝে যেখানে যেমন পরিবর্তন চাই, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।’’

CPM State termoil
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy