Advertisement
১২ অক্টোবর ২০২৪
RG Kar Issue

দ্রোহকালের বাংলায় রচিত হল পাঁচ শ্লোক, আরজি করের সঙ্গে কামদুনির ঘটনা নিয়েও তর্পণের নয়া মন্ত্র

আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ চলছে। পুজোর আবহে যে সেই প্রতিবাদ চলবে তার আভাস ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। এ বার সেই প্রতিবাদে ধর্মের পোশাক পরাতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার।

New chant for Mahalaya on RG Kar issue

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:১২
Share: Save:

শাস্ত্র অনুযায়ী, মহালয়া তিথিতে এক মহা আলয়ের সৃষ্টি হয়। আর সেই আলয়ে পরলোকগতরা আশ্রয় পান বলেই বিশ্বাস। পরলোকে বসবাসকারীদের জন্য জল ও শ্রদ্ধা উৎসর্গের জন্যই ধর্মীয় আচার ‘তর্পণ’। এ বার আরজি কর-কাণ্ডের জেরে রাজ্য জুড়ে যে দ্রোহের পরিবেশ তাতে দেবীপক্ষের আগমনীতে ধর্মীয় আচরণেও জুড়ছে প্রতিবাদ। সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন সংগঠন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নদীতীরে আরজি করের নির্যাতিতার জন্য গণতর্পণ করার কর্মসূচি নিয়েছে। আর সেই জন্য শাস্ত্রজ্ঞদের নিয়ে নতুন মন্ত্র এবং শ্লোক রচনা করা হয়েছে।

সরাসরি আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও সঙ্ঘের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা বিভিন্ন সংগঠন মিলে বুধবার গণতর্পণ কর্মসূচি নিয়েছে। অতীতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত দলীয় কর্মীদের জন্য তর্পণ করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৯ সালের পুজোর আগে তর্পণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগের সেই কর্মসূচি এ বার নেই বিজেপির। তবে ‘একাত্তর থেকে আরজি কর/ প্রতিটি অপরাধের বিচার কর’ নামের কর্মসূচিতে অনেক বিজেপি নেতাও যোগ দিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।

নতুন বাংলাদেশের জন্মের সময় ১৯৭১ সালের উদ্বাস্তু সমস্যা থেকে আরজি করের ঘটনায় বার বার দুষ্কৃতীদের হাতে যে নারী নির্যাতন হয়েছে সবের জন্যই এই কর্মসূচি বলে দাবি করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে সঙ্ঘের প্রচার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিপ্লব রায় এ নিয়ে বলেন, ‘‘এটা সঙ্ঘের কর্মসূচি নয়। তবে অনেক স্বয়ংসেবক এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বার বার দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সরকারের আমলে মেয়েরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের সকলের প্রতিই আমাদের তর্পণ।’’

প্রসঙ্গত, যে কালখণ্ডের কথা এই কর্মসূচির নামে উল্লেখ করা হয়েছে তাতে কংগ্রেস, সিপিএম তথা বামফ্রন্ট এবং তৃণমূলের দখলে হয় ছিল বা নয়তো রয়েছে বাংলা। আর এই কর্মসূচির জন্য একটি মন্ত্র তৈরি করা হয়েছে শুধুই আরজি কর-কাণ্ডে মৃতা চিকিৎসকের নামে। ‘তিলোত্তমা তৃপ্যতমিদং তিলোদকম গঙ্গা জলং তস্মৈ স্বধা নমঃ’ মন্ত্র সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শাস্ত্রজ্ঞেরা তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন বিপ্লব।

এই মন্ত্র ছাড়াও পাঁচটি শ্লোক তৈরি করা হয়েছে। বিপ্লব বলেন, ‘‘পূর্ব (বাংলাদেশ) এবং পশ্চিমবঙ্গে অত্যাচারিত ও মৃত হিন্দু আত্মীয় তথা অত্যাচারিত হিন্দু মা, বোনেদের আত্মার তৃপ্তির জন্য এই শ্লোক সর্বত্র পাঠ করা হবে।’’ প্রসঙ্গত সেই শ্লোকে মরিচঝাঁপি থেকে কামদুনি এবং শেষে আরজি কর-কাণ্ডের উল্লেখ রয়েছে। সর্বশেষ শ্লোকটিতে বলা হয়েছে, ‘‘আরজিকরাভিধে রুগ্‌ণা-লয়ে বৈদ্যা হতা হিযা।/ তস্যান্ত্বপ্ত্যৈ জলং দত্তং সা যাতু পরমাং গতিম্।।’’

সব শ্লোকই শাস্ত্রজ্ঞেরা রচনা করেছেন বলে দাবি বিপ্লবের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE