মোড় ঘুরতে চলেছে নারদ মামলার।জুন মাসের ২০ তারিখ সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার দেওয়া ‘দাওয়াই’তেই নাকি প্রাণ ফিরে পেয়েছে নারদ মামলার তদন্ত। সিবিআই কর্তাদের ইঙ্গিত, আগামী ২০ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে তদন্ত কতটা এগিয়েছে সেই স্ট্যাটাস রিপোর্টে, তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট ছাড়াও থাকছে আরও কিছু বিষ্ফোরক তথ্য।
কী সেই বিষ্ফোরক তথ্য?
এই মামলার তদন্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্তএক সিবিআই আধিকারিকের দাবি, আদালতের কাছে তথ্যপ্রমাণ পেশ করে নারদ মামলায় আরও দু’জনের নাম অভিযুক্ত হিসেবে নথিভুক্ত করার অনুমতি চাইবেন নারদা মামলার তদন্তকারী অফিসার। এছাড়াও এখনও পর্যন্ত এফআইআরে থাকা ১৩জনের বিরুদ্ধে কী কী তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তা-ও জানানো হবে ওই স্ট্যাটাস রিপোর্টে।
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৭-র ১৬ এপ্রিল নারদ মামলায় তৃণমূলের ১২ জন সাংসদ, মন্ত্রী এবং একপুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে এফআইআর করার পর, সবাইকেই জেরা করেছে তারা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কয়েকজন তদন্তে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ সিবিআই আধিকারিকদের। এক সিবিআই আধিকারিক বলেন,“দুই সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং অপরূপা পোদ্দার ছাড়াও এই তালিকায় আছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।”
আরও পড়ুন: ভর্তি নিয়ে তোলাবাজি রুখতে আচমকাই আশুতোষে মুখ্যমন্ত্রী
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় এঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা ম্যাথু স্যামুয়েল বা তাঁর সঙ্গে কোনও আর্থিক লেনদেনের কথা মনে করতে পারছেন না। তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে তদন্তে উঠে আসা তথ্যের মধ্যে যথেষ্ট ফারাক আছে। সিবিআই কর্তাদের ইঙ্গিত, ওই চারজনকেই ফের জেরা করা প্রয়োজন বলে আদালতকে জানাবে সিবিআই।
আরও পড়ুন: পলাতক দেখিয়ে ভারতীর নামে সমন জারির আর্জি
আর সেই সঙ্গেই সৈয়দ তাজদার মির্জা ওরফে টাইগার মির্জা-সহ দু’জনের নাম এফআইআরে যোগ করার অনুমতিও চাওয়া হবে। এক সিবিআই কর্তা বলেন, “ম্যাথিউয়ের দেওয়া বয়ান এবং পরবর্তীতে ইকবাল আহমেদ ও সুলতান আহমেদের বয়ান থেকেই টাইগারের ভূমিকা সামনে এসেছিল। এই গোটা মামলায় টাইগার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কম্যান। সব লেনদেনেই যোগ ছিল ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের।” তদন্তকারীদের দাবি, টাইগারের বিরুদ্ধে থাকা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার অনুমতি চাওয়া হবে।
সিবিআই কর্তাদের ইঙ্গিত, ঠিক একই ভাবে নাম আসতে চলেছে শাসক দলের এক প্রথম সারির নেতার। ওই নেতাকে সরাসরি ম্যাথিউয়ের কোনও ফুটেজে দেখা যায়নি। কিন্তু অভিযুক্তদের জেরা করতে গিয়ে একাধিক বার সেই শীর্ষ নেতার প্রসঙ্গ এসেছে। একই ভাবে ম্যাথিউয়ের দেওয়া ফুটেজেও ওই নেতার নাম উল্লেখ করেছেন কয়েকজন অভিযু্ক্ত। তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, ম্যাথিউ নিজেও স্বীকার করেছেন যে তিনি ওই নেতার অফিসে গিয়েছিলেন। যদিও তিনি তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনও ভিডিয়ো ফুটেজ দিতে পারেননি। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, আদালত এফআইআর করার অনুমতি না দিলেও ওই নেতাকে জেরা করার জন্য অনুমতি চাইবেন তাঁরা। সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের আইনি বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা।