ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরে সাদিক। —নিজস্ব চিত্র।
এনআইএ-এর হাত থেকে বাঁচতে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল সাদিক ওরফে তারিকুল ইসলাম ওরফে সুমন। মাস খানেক ধরে পুলিশের সঙ্গে এই লুকোচুরি খেলা চলতে চলতে জেএমবি-র এই জঙ্গি নেতা চলে এসেছিল রামগড় শহর লাগোয়া রাঁচি-হাজারিবাগ ৩৩ নম্বর জাতীয় সড়কের এর ওপর টায়ার মোড়ে। এটিএস-এর তদন্তকারীদের দাবি— টায়ার মোড়ের চায়ের দোকান থেকে গত কাল ধরা পড়ে সাদিক।
সাদিককে রাঁচির এনআইএ-র বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয় আজ। আদালতের নির্দেশে সাদিককে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়। ঝাড়খণ্ডের এটিএস-এর সুপার পি মুরুগান বলেন, ‘‘সাদিক হাজারিবাগ থেকে রামগড়ের দিকে এসেছে এবং টায়ার মোড়ের কাছাকাছি কোথাও রয়েছে— এনআইএ-এর কাছ থেকে সে ব্যাপারে আমরা নির্দিষ্ট তথ্য পাই। সেই সূত্র ধরেই আমরা জাল পেতে সাদিককে ধরি।’’
সাদিকের হেফাজত থেকে পুলিশ কিছু কাগজপত্রও উদ্ধার করেছে। তা দেখে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত যে ঝাড়খণ্ডেও জেএমবি-র জাল ছড়াতে শুরু করেছে সাদিক। বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনার ৬টি জেলা— সাহেবগঞ্জ, পাকুড়, দুমকা, জামতাড়া, দেওঘর ও গোড্ডাতে সাদিকের নেতৃত্বেই সংগঠন বেড়ে উঠছিল। এর মধ্যে আবার দুমকা, পাকুড়, জামতাড়া ও সহেবগঞ্জ একেবারেই পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া।
গত দু’মাস ধরে সাদিক বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে মোটর মেকানিকের পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। ঝাড়খণ্ড পুলিশের এডিজি এস এন প্রধান বলেন, ‘‘সাদিকের কাছে রামগড়ের কোনও হোটেলের কাগজপত্র না মিললেও হাজারিবাগ, ধানবাদ-সহ ঝাড়খণ্ডের কিছু জেলা শহরের হোটেলের বিল পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে বাস-ট্রেনের টিকিটও। ওই সব কাগজপত্রই বলছে, মাস খানেক ধরে বহু জায়গায় ঘুরেছে সাদিক।’’
কেন সাহেবগঞ্জ ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল সাদিক?
এটিএস সূত্রের দাবি, এক-দেড় মাস আগেই সাদিক বুঝে গিয়েছিল যে তাকে এনআইএ তন্ন তন্ন করে খুঁজছে। তার সম্পর্কে অনেক তথ্যই এনআইএ পাচ্ছিল সাহেবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া আর এক জেএমবি জঙ্গি ও খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অভিযুক্ত রেজাউল করিমের কাছ থেকে। এটিএস সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া পাকুড়, সাহেবগঞ্জ, দুমকার মতো জেলায় অন্তত ১২টি গোপান আস্তানা ছিল সাদিকের। করিমকে জেরা করে আস্তানাগুলির সন্ধান মেলে। তাই গত দু’মাস ধরে গোপন ডেরাগুলোও এড়িয়ে চলেছে সাদিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy