ফাইল চিত্র।
দলের নীতি মেনে বয়সের সীমা কার্যকর করতে হবে বিভিন্ন কমিটিতে। ‘ব্যতিক্রম’ নিয়ে মাথা ঘামানো চলবে না। এক জনকে ‘ব্যতিক্রম’ ধরলেই আরও অনেকে একই দাবি তুলবেন এবং তাতে গোটা পরিকল্পনাই ভেস্তে যেতে পারে। সম্মেলন-পর্ব শুরুর আগে দলে অবসরের নীতি প্রসঙ্গে এই স্পষ্ট বার্তাই দিয়ে রাখল রাজ্য সিপিএম।
সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর করা হয়েছে আগেই। দেশের মধ্যে এই বিষয়ে বঙ্গ সিপিএমই পথ প্রদর্শক। এর পর থেকে রাজ্য কমিটিতে থাকার জন্য ৭২ বছরের বয়ঃসীমা ধার্য করে দিচ্ছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। জেলা কমিটিতে অবসরের বয়স দাঁড়াবে ৭০ এবং এরিয়া কমিটিতে ৬৫। ‘যান্ত্রিক ভাবে’ বয়সের সীমা বেঁধে দেওয়া রাজনীতিতে উপযুক্ত কি না, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের একাংশ। রাজ্য কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিনেও, শুক্রবার দার্জিলিঙের জীবেশ সরকার বা কলকাতার রূপা বাগচীরা এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। কিন্তু জবাবি বক্তৃতায় এ দিন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির স্তর থেকে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর হতে চলেছে। সব কমিটিতেই এই সূত্র মেনে চলতে হবে। ‘ব্যতিক্রম’ নিয়ে তাঁরা ভাবতে চান না। কারণ, ‘ব্যতিক্রম’ রাখতে শুরু করলে দ্রুতই তা ‘সাধারণ’ প্রবণতা হয়ে দাঁড়াতে পারে!
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটির প্রথম দিনের বৈঠকের পরে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আলোচনায় রাজ্য নেতৃত্বের একটি অংশও অবসরের বয়স বেঁধে দেওয়ার নীতির বিপক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তাঁদের প্রস্তাব ছিল, রাজ্য বা জেলা কমিটির সদস্যদের গড় বয়স বরং ঠিক করে দেওয়া হোক। তা হলে অভিজ্ঞ ও তরুণ মুখের ভারসাম্য রাখতে সুবিধা হবে। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু এই প্রশ্নে ‘শিথিলতা’ দেখানোর পক্ষপাতী হননি একেবারেই। অবসরের নতুন নীতি কার্যকর হলে সিপিএমের বর্তমান রাজ্য কমিটির প্রায় ৪০%-কে সরে যেতে হবে। বর্তমান জেলা নেতৃত্বেরও প্রায় ৫০%-কে অবসর নিতে হবে।
আলিমুদ্দিনে এ দিন ইয়েচুরি এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটি ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে চলেছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে যে ঊর্ধ্বসীমা হবে, রাজ্য ও অন্যান্য কমিটিতে তার চেয়ে বয়স কমবে। এই নীতি সকলকেই মানতে হবে। শীঘ্রই আপনারা তরুণতর সিপিএমকে দেখতে পাবেন!’’ ইয়েচুরির বক্তব্য, ভোটের ফল এবং সংগঠনের অবস্থা যেখানে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে বেরোনোর পথ অত্যন্ত ‘গুরুত্ব’ দিয়ে ভাবতে হবে। তারই অঙ্গ বয়স-নীতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy