Advertisement
E-Paper

গ্রেফতার হয়নি কেউ, উল্টে তলব শ্যাম-কর্তাকেই

কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও পর্যন্ত সবিস্তারে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়নি। তাই জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানা কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেওয়া ও তোলা চাওয়ার অভিযোগে দুই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মামলা রুজু হয়নি বলে জানাল পুলিশ। সেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার জন্য আজ, সোমবার কারখানার আধিকারিক সুমিত চক্রবর্তীকে থানায় ডেকেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৬
রবিবার জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানায় আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

রবিবার জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানায় আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।

কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও পর্যন্ত সবিস্তারে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়নি। তাই জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানা কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেওয়া ও তোলা চাওয়ার অভিযোগে দুই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মামলা রুজু হয়নি বলে জানাল পুলিশ। সেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার জন্য আজ, সোমবার কারখানার আধিকারিক সুমিত চক্রবর্তীকে থানায় ডেকেছে পুলিশ।

গত ১৬ জুলাই ওই কারখানার তরফে একটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় জামুড়িয়া থানায়। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, তার ভিত্তিতে একটি জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছে। কিন্তু এমন গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট এফআইআর করতে হলে ঘটনার দিনক্ষণ, কত টাকা তোলা চাওয়া হয়েছে, কেউ সাক্ষী থাকলে তাঁর নামএই সমস্ত তথ্য জানাতে হয়। জেনারেল ডায়েরির তদন্তে ১৭ ও ১৮ জুলাই জামুড়িয়া থানার এক এসআই কারখানায় গেলেও যে আধিকারিক অভিযোগপত্রটি জমা দিয়েছিলেন, সেই সুমিতবাবু ছিলেন না। ১৯ জুলাই ওই এসআই গিয়ে তাঁর দেখা পান। বিশদ কথাবার্তা হয়।

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে আসা এসআইয়ের কাছে সংস্থা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন, মাসখানেক ধরে রেল সাইডিংয়ে ঠিকাদারি পাওয়ার জন্য অলোক ও চঞ্চল দৌরাত্ম্য শুরু করেছে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে পরপর দু’দিন কারখানার এক আধিকারিককে ফোন করে সাইডিংয়ে ডাকেন অলোক ও চঞ্চল। সেখানে গেলে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয় দেখানো হয়। ১৪ জুলাই সাইডিংয়ের কাজ জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিল্পাঞ্চলের এক আইএনটিটিইউসি নেতার কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য গেলে সেখানেও বৈঠক শুরুর আগে একই ভাবে অলোকেরা হুমকি দেয়। এই সব কথাই আধিকারিকেরা ওই এসআইকে জানিয়েছেন বলে কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে।

ওই পুলিশকর্তা বলেন, “জেনারেল ডায়েরির ভিত্তিতে তদন্তে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ যে সব অভিযোগ জানান, সেগুলি লিখিত আকারে দিতে বলা হয়েছে। তা পেলেই নির্দিষ্ট মামলা রুজু করা যাবে। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত কারখানার তরফে তা দেওয়া হয়নি। সুমিতবাবুকে সোমবার জামুড়িয়া থানায় তা জমা দিতে বলা হয়েছে।” তবে ওই পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, “জেনারেল ডায়েরির তদন্ত রিপোর্টেও যদি দেখা যায়, অভিযোগপত্রে নাম থাকা দু’জন দোষী, সেক্ষেত্রেও আদালতের নির্দেশ মতো সাজা দেওয়া সম্ভব।” অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অলোক দাস অবশ্য এ দিনও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওঁরা যা অভিযোগ করছেন, তা তথ্য দিয়ে প্রমাণ করুন।”

শনিবার পুলিশের উপস্থিতিতে ব্লক প্রশাসন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক করে। সুমিতবাবু বলেন, “আমাদের কাজ চলছে। সাইডিংয়ে পুলিশি পাহারা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে। রাজ্য সরকার ও প্রশাসন যে পদক্ষেপ করেছে তাতে আমরা খুশি।”

এ দিন সকালে শ্যাম গোষ্ঠীর ওই কারখানায় যান আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তিনি যাওয়ার আগে থেকেই কারখানার গেটের সামনে বিজেপি-র পতাকা হাতে অপেক্ষা করছিলেন বহু কর্মী-সমর্থক। সেখানে পৌঁছে বাবুল বলেন, “আমি এখানে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশে আসিনি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে এসেছি। যাঁরা ঝান্ডা নিয়ে এসেছেন, তাঁরা সেগুলি সরিয়ে ফেলুন। আমি সাংসদ, সকলের প্রতিনিধি।

আমার কেন্দ্র থেকে কোনও কারখানা বন্ধ হয়ে যাক, তা আমি চাই না।

তাই আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব, তা করব।”

কারখানায় ঢুকে আধিকারিক সুমিতবাবুর সঙ্গে মিনিট দশেক কথাবার্তা বলেন বাবুল। সুমিতবাবু জানান, সাংসদ জানিয়েছেন, কারখানার কাজকর্মে তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে রাজি আছেন। তবে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা বিশদে জানতে চাননি বাবুল। সুমিতবাবুর কথায়, “উনি শুধু জানতে চেয়েছেন, এখন কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। আমরা জানিয়েছি, আর কোনও সমস্যা নেই। রাজ্য সরকার আমাদের সাহায্য করছে। সাংসদ জানান, আমাদের কারখানা যে এত বড় তা তাঁর ধারণা ছিল না।” কথাবার্তা সেরে বাবুল কারখানা পরিদর্শন করেন। কাজ বন্ধ রেখে তাঁর সঙ্গী হন শ্রমিকেরাও। কারখানার এক আধিকারিক শ্রমিকদের কাজ করতে বললে, কয়েক জন শ্রমিক জানিয়ে দেন, এক দিন বাবুল সুপ্রিয়কে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন, তা ছাড়বেন না। বেশ কিছুক্ষণ ধরে কারখানা পরিদর্শনের পরে বাবুল বেরিয়ে যান।

jamuria no one arrested shyam managers summoned
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy