গোটা বিধানসভা নির্বাচন পর্বে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি দল ছিল পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, এখন আর কেউ নেই বাংলায়। ফলে কার্যত অভিভাবকহীন রাজ্য বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় এমনিতেই গেরুয়া শিবিরের বিপর্যস্ত চেহারা সামনে এসে যায়। এর পরে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে সরকার যে বিধি নির্ভর লকডাউন জারি করেছে তার জেরে বেশির ভাগ নেতাই গৃহবন্দি। ফলে বিচ্ছিন দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে রয়েছেন তাঁরা। কখনও সখনও নিজেদের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকই যাবতীয় যোগাযোগের ভরসা।
বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবির পরে এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, অমিত মালব্য, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা ফিরে গিয়েছেন। মাঝে কৈলাস এলেও ফের নিজের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে চলে যান। দলের পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচনের জন্য বাংলায় এসেছিলেন রাজস্থানের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁরা চলে যান। বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে বলে বিজেপি যে অভিযোগ তুলে চলেছে তা নিয়ে দলের আলোচনা ও বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কিছু দিনের জন্য বাংলায় ছিলেন বিজেপি-র অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ। তিনিও নিজের রাজ্য পঞ্জাবে ফিরে গিয়েছেন। সব শেষে মঙ্গলবার দিল্লি চলে যান অরবিন্দ মেননও। সহ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে বাংলায় আসা মেনন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ার পরেই তিনি দিল্লি চলে গিয়েছেন।
নির্বাচনের পরে রাজ্য দফতরে সম্প্রতি একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছিল। সেখানেও উপস্থিতি ছিল খুব কম। রাজ্যের পদাধিকারীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন গরহাজির। নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন এমন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের অনেকেই ফল ঘোষণার পর থেকে নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন বলে দলেই অভিযোগ রয়েছে। এমনকি অনেকে রাজ্য নেতৃত্বের ফোনও ধরছেন না বলে বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে। আবার বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ সবের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিধি নিষেধও রাজ্য বিজেপি নেতাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে গত কয়েক দিনে রাজ্য বিজেপি যেন অনেকটাই ছন্নছাড়া।