নবান্ন অভিযানে আরজি করের নির্যাতিতার মা-কে পুলিশ মারধর করেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই সংক্রান্ত কোনও ছবি-ভিডিয়ো এখনও পাওয়া যায়নি বলে আগেই জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সেই সঙ্গে লালবাজারের অনুরোধ ছিল, এ রকম যদি কোনও ছবি বা ভিডিয়ো থাকে, তা যেন পুলিশকে পাঠানো হয়। কিন্তু এই অনুরোধের পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও, নির্যাতিতার মা-কে ‘পুলিশি মারের’ ছবি বা ভিডিয়ো কেউ পাঠাননি বলেই খবর লালবাজার সূত্রে।
পুলিশের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে ইমেল করেছিলেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা। মঙ্গলবারই সেই ইমেলের জবাব দিয়েছিলেন সিপি। বুধবার লালবাজার সূত্রে খবর, নির্যাতিতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ‘জেনারেল ডায়েরি’ (জিডি) করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ ছিল, গত ৯ অগস্ট নবান্ন অভিযানের দিন দুপুর ২টো নাগাদ কিড স্ট্রিট এবং জওহরলাল নেহরু রোড ক্রসিংয়ের কাছে কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁর স্ত্রীর ডান হাত টেনে ধরেন। এর ফলে তাঁর স্ত্রী হাতে থাকা শাঁখা ভেঙে যায় বলে দাবি নির্যাতিতার বাবার। তার পরেই পুলিশ লাঠি দিয়ে নির্যাতিতার মায়ের মাথায় এবং পিঠে আঘাত করে বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে। নির্যাতিতার বাবার দাবি, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত। এই হামলার কারণে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত বলেও দাবি করেছেন নির্যাতিতার বাবা। পুলিশকে বিষয়টি জানাতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলেও মঙ্গলবার তিনি জানান। তাঁর কথায়, “আমরা প্রথমে শেক্সপিয়র সরণি থানায় মেল করেছিলাম। সেখান থেকে বলা হল পার্ক স্ট্রিট থানায় করতে। সেখান থেকে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হল।’’ এর পর নির্যাতিতার বাবা কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিককে ইমেল করেন। মঙ্গলবার বিকেলে সেই ইমেলের জবাব দিয়ে লালবাজার আরজি করের নির্যাতিতার বাবাকে জানায়, নিউ মার্কেট থানায় তাঁর অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। আইন মেনে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে!
এর পরেই মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কলকাতার জয়েন্ট সিপি (সদর) মীরাজ খালিদ। তিনি জানান, কলকাতা পুলিশের কাছে সেই দিনের ঘটনার অনেক ভিডিয়ো রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ভিডিয়োয় নির্যাতিতার মাকে পুলিশি মারধরের কোনও প্রমাণ মেলেনি। নির্যাতিতার মায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে মীরাজ আবেদন করেছিলেন, ‘‘যদি কারও কাছে ওই ঘটনা সম্পর্কিত কোনও ভিডিয়ো বা ছবি থাকে, তা হলে তা পুলিশকে দিন।’’
একই সঙ্গে মীরাজ মঙ্গলবার দাবি করেছেন, পুলিশের অনুমতি ছাড়াই ৯ অগস্ট ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচি করা হয়। মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে নবান্ন অভিযান নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘‘৪০০-৫০০ জন লোক ডোরিনা ক্রসিংয়ের সামনে জড়ো হয়ে পার্ক স্ট্রিটের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন। জমায়েত থেকে পুলিশকে খারাপ কথা বলা হয়। এমনকি পুলিশকে মারধর করেন অনেকে।’’ পুলিশকে মারধর করার ছবি মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে দেখানো হয়।