Advertisement
E-Paper

বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনর্নিয়োগে আপাতত ইতি

দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রায় হচ্ছেই না। শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে মার খাচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ের পঠনপাঠন। প্রাক্তনদের ফের ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করে জোড়াতালি দিয়ে পড়াশোনা চলছে অনেক ক্ষেত্রেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩০

দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রায় হচ্ছেই না। শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে মার খাচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ের পঠনপাঠন। প্রাক্তনদের ফের ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করে জোড়াতালি দিয়ে পড়াশোনা চলছে অনেক ক্ষেত্রেই। এর মধ্যেই অবসরের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

অবসরের পরেও যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পড়ানোর কাজে বহাল রাখার ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থেই। তাঁদের বৈদগ্ধ্য, তাঁদের অভিজ্ঞতায় পড়ুয়ারা সমৃদ্ধ তো হনই। সেই সঙ্গে শিক্ষক-ঘাটতির মোকাবিলা করাটাও এই ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম লক্ষ্য। হঠাৎ সেই শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগে ইতি টানার সিদ্ধান্ত কেন?

‘‘১৯৭৯ সালের সার্কুলার অনুযায়ী বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কৃতী শিক্ষকদের অবসরের পরে পুনর্নিয়োগ করা হতো। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেই ব্যবস্থার যথেচ্ছ ব্যবহার হয়েছে। তাই সাময়িক ভাবে পুনর্নিয়োগ বন্ধ রাখা হচ্ছে,’’ কারণ ব্যাখ্যা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। কী ধরনের ‘যথেচ্ছ ব্যবহার’, সরাসরি তার বিশ্লেষণে যাননি তিনি। তবে জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১১ সাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত শিক্ষক-শিক্ষিকার পুনর্নিয়োগ হয়েছে, তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই পুনর্নিয়োগ ঠিক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষামহলে। সরকার আদৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুনর্নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে কি না, উঠছে সেই প্রশ্ন। শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, বিশিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদি না-পড়ান, তা হলে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন পড়ুয়ারাই।

এই প্রসঙ্গে শিক্ষকদের অবসরের বয়সের প্রশ্নটিও এসে পড়ছে। রাজ্যে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর। এটাকে ৬৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে বাম সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)। সেই দাবির সুরাহা হয়নি। তারই মধ্যে পুনর্নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল সরকার। শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণায় ওয়েবকুটা ক্ষুব্ধ। ওই সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় জেলা কমিটির সম্পাদক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি কেশব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই ধরনের সিদ্ধান্ত খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এমনিতেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রায় বন্ধ। এর মধ্যে শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগ বন্ধ হলে পঠনপাঠনের খুবই ক্ষতি হবে। ক্ষতি হবে পড়ুয়াদের।’’ এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ফের বিপন্ন বলেও মনে করছেন কোনও কোনও শিক্ষক-নেতা। যেমন শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সভাপতি তরুণ নস্করের অভিযোগ, পুনর্নিয়োগ বন্ধের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের উপরে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ।

অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানদের সঙ্গে এ দিন বৈঠকে বসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে তিনি জানান, কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের পেনশন এর পর থেকে অনলাইনে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে।

education minister re appoint universities
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy