বাড়ির গরু পড়ে গিয়েছিল পাতকুয়োয়। সাহায্যে গিয়ে কুয়োয় নামেন পড়শি সদ্য স্নাতক কলেজছাত্র। আচমকাই তাঁর কোমরের দড়ি ছিঁড়ে জলে পড়ে যান তিনি।
ভাইকে ছটফট করতে দেখে থাকতে পারেননি দাদা। উদ্ধার করতে তিনিও নামেন কুয়োয়। কিন্তু উপর থেকে তাঁকেও ছটফট করতে দেখেন জড়ো হওয়া বাসিন্দারা। দুই ভাইকে যতক্ষণে উদ্ধার করা হয়েছে কুয়ো থেকে ততক্ষণে সব শেষ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
মালদহের হবিবপুরের পার্বতীডাঙায় বুধবার সকালের এই ঘটনার পরে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। চোখের সামনে দুই ভাই গোপাল অধিকারী (২৫) ও দীপঙ্কর অধিকারীর (৩৪) মৃত্যু দেখে তাঁদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না গ্রামের কেউই। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দা গোকুল মণ্ডলের বাড়িতের উঠনেই একটি গভীর পাত কুয়ো ছিল। প্রায় ৪০ ফুট গভীর ওই কুয়োটি থেকেই একসময় জল সংগ্রহ করতেন তাঁরা। তবে বাড়িতে বিকল্প জলের ব্যবস্থা করার পর থেকে কুয়োটি আর ব্যবহার করা হত না। এ দিন সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ গোকুলবাবুর একটি গরু কুয়োটিতে পড়ে যায়। তখনই ডেকে আনা হয় প্রতিবেশী দীপঙ্কর ও গোপাল অধিকারী-সহ অন্য গ্রামবাসীদের। কোমরে দড়ি বেঁধে গরুটিকে উদ্ধার করতে নামেন গোপালবাবু। হঠাতই দড়ি ছিঁড়ে জলে পড়ে যান তিনি। গোকুলবাবু বলেন, ‘‘এমনটা হয়ে যাবে ভাবতেই পারেনি। চোখের সামনে সব কেমন হয়ে গেল।’’
দুই ভাইয়ের বাবা বাবা বছর দশেক আগেই মারা গিয়েছেন। ছোট ভাই গোপাল গত বছরই পাকুয়াহাট ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। তাঁপর দাদা দীপঙ্কর ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। তাঁর দুই স্কুলপড়ুয়া ছেলে রয়েছে। গোপাল স্নাতক হওয়ার পর গ্রামে গৃহশিক্ষকতা করতেন। মৃতদের খুড়তুতো দাদা তপন অধিকারী বলেন, ‘‘এখন পরিবারটা কীভাবে চলবে তা ভেবেই আমরা কুল পাচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy