Advertisement
১১ মে ২০২৪

এ বার মাথাভাঙায় আক্রান্ত পুলিশ

বিজেপির অভিযোগ, গোটা ঘটনার জন্য দায়ি তৃণমূল। তবে তৃণমূলের দাবি, পুলিশকে আক্রমণ করেছে বিজেপিই।

আঘাত: সংঘর্ষে আহত এক পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র

আঘাত: সংঘর্ষে আহত এক পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৩
Share: Save:

সংঘর্ষে আহত হলেন দু’জন এএসআই সহ আট পুলিশকর্মী। তিন জনকে মাথাভাঙা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মাথাভাঙা ১ ব্লকের নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মঙ্গলবার সকালে এই সংঘর্ষে পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি মাথাভাঙার মহকুমা পুলিশ অফিসার শুভেন্দু মণ্ডলের, আর একটি আইসি প্রদীপ সরকারের গাড়ি। পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে বন্দুক ছিনতাইয়ের চেষ্টাও করা হয়েছে বলে দাবি। ওই এলাকা থেকে পুলিশ দুই ব্যাগ বোমা উদ্ধার করেছে।

বিজেপির অভিযোগ, গোটা ঘটনার জন্য দায়ি তৃণমূল। তবে তৃণমূলের দাবি, পুলিশকে আক্রমণ করেছে বিজেপিই। মাথাভাঙার দায়িত্বপ্রান্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কয়েক দিন ধরেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে তৃণমূলের একটি মিছিল বেরোয়। তখন বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। নয়ার হাট বাজার এলাকায় দোকান ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বাড়ে। এর পরেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলের পক্ষ থেকে বোমা নিয়ে মিছিল করে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। এলাকা দখল করতে তৃণমূল এতটাই মরিয়া যে পুলিশকেও আক্রমণ করতে ছাড়ছে না। গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তাদের আক্রমণেই পুলিশকর্মীরা আহত হয়েছেন।’’

তৃনমূলের স্থানীয় নেতা আলিজার রহমানের পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপিই পুলিশকে আক্রমণ করেছে। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার জন্য আমরা দুঃখিত।’’ তাঁর বক্তব্য, এ দিন তৃণমূলের ঘোষিত কর্মসূচি ছিল নয়ার হাট বাজারে। তৃণমূলের কর্মীরা মিছিল করে যাওয়ার সময় বিজেপির কর্মীরা গাছের গুড়ি দিয়ে পথ আটকায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবাদ করি। নয়ার হাট বাজারে মিছিল যাওয়ার সময় বিজেপির কর্মীরা পাথর ছুড়তে থাকে। তখন তৃণমূল প্রতিরোধ করেছে।’’ যদিও অভিজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলই সন্ত্রাস করছে। ভয়ে মানুষ বাজারেও যেতে পারছেন না। আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে।’’ তৃণমূল কর্মীদের হাতে প্রহৃত বিজেপির এক কর্মীকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা পরেশ বর্মণ বলেন, ‘‘আমরা আতঙ্কিত হয়ে রয়েছি। পুলিশ এখনই ব্যবস্থা নিক।’’

এ দিন দিনহাটা ভেটাগুড়ি সিঙ্গিজানি এলাকা থেকেও তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। এলাকায় রাতভর বোমাবাজির ঘটনা ঘটে বলেও জানা গেছে। ভেটাগুড়িতেও পুলিশের গাড়ির উপরে সম্প্রতি আক্রমণ হয়েছে। তৃণমূলের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘ভেটাগুড়িকে অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি ব্রজগোবিন্দ বর্মণ বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত তৃণমূল নিজেদের মধ্যে অশান্তি করে বোমাবাজি করছে। আবার পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Injury Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE