E-Paper

নাবালকের মৃত্যু: কাজ বন্ধ বালি-পাথর তোলার শ্রমিকদের

মৃতের বাবা সন্তু কারুয়া বসে ছিলেন টিনের চাল দেওয়া বাঁশের বেড়ার বাড়ি। উঠানে বসে তিনি জানান, বেশিরভাগ অভাবের সংসার।

নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৫ ০৭:০০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ভারত নেপাল সীমন্তের মেচি নদীতে বালি তোলার কাজ করে ফেরার পথে ট্রাক্টরের চাপায় মারা যায় নাবালক কৃষ্ণ কারুয়া। গত সোমবার শিলিগুড়ি পানিট্যাঙ্কির পাশে গৌড়সিংহ জোতের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার কাজ বন্ধ রেখেছেন বালি-পাথর তোলার শ্রমিকেরা। ঘটনার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের অনেকে কাজে না ফেরার দাবি তুলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।

মৃতের বাবা সন্তু কারুয়া বসে ছিলেন টিনের চাল দেওয়া বাঁশের বেড়ার বাড়ি। উঠানে বসে তিনি জানান, বেশিরভাগ অভাবের সংসার। মেচি খননের কাজ করেই চলে। অন্য কাজেরও অভাব। ফলে বিকল্প কাজ না থাকায় রাত, দিন নদীতে থাকছেন অনেকে। সন্তুর তিন ছেলেকে নিয়ে পাঁচ জনের সংসার। বড় ছেলে মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, "ছেলেটা নিজের খরচ জোগাতে কাজে গিয়েছিল। আর ফিরল না।"

ঘটনার আতঙ্ক গ্রাস করেছে এলাকায়। গ্রামের বেশিরভাগ ছেলে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজে নামছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, অনেকে মাদকের কারবারেও যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ, কিছুদিন আগেও মেচিতে বালি তুলতে গিয়ে এক জনের মৃত্যুর হয়েছিল। সেখানে প্রশাসনের একাংশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন, অভিযোগ উঠেছে। কম বয়সীদের তুলনায় পারিশ্রমিক কম দিতে হয়। এক ট্রাক বালি বোঝাই করলে মাত্র ৩৫০ টাকা পায় ৩-৪ জন মিলে। গন্তব্যে সেই বালি ফেলতেও হয় তাদেরকেই।

বালি তোলার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করায় নদী ঘাট এ দিন ফাঁকা ছিল। অভিযোগ, রাত হলেই ডাম্পার, ট্রাক্টরগুলির দাপাদাপি শুরু হয়। অবৈধ খনন হয়ে থাকে। শব্দে অতিষ্ট গ্রামবাসীরা অনেকবার পুলিশকে জানালেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ। নদী থেকে প্রধান রাস্তায় উঠে বালি, পাথরের ট্রাকগুলি জেরে রাস্তা বেহাল। তাতেই নানা সময় দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রাকগুলি। কৃষ্ণা ট্রাক থেকে পড়ে চাপা পড়েছিল বলে অভিযোগ।

ইতিমধ্যে পুলিশ ট্রাক্টরটি আটক করেছে। অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। ঘাটের বৈধতার দাবি করছে মালিক পক্ষ। বাসিন্দারা জানান, নাবালকদের কাজে না নেওয়ার বিষয়ে অনেকবার বলা হলেও বন্ধ হয়নি। দার্জিলিং জেলার ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিক বলেন, "তদন্তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।" আর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ বলেন, "যারাই জড়িত থাক পুলিশকে অবৈধ খনন বন্ধ করতে হবে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panitanki

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy