কেউ বলছে পঞ্চাশেরও বেশি, কেউ বলছে সত্তর-আশি, কারও দাবি একশো হবে। দূর থেকে যে গুনবে, সে উপায়ও নেই। সকলে মিলে হন-হন করে এই খেত-মাঠ চষে বেড়াচ্ছে তো পরক্ষণেই গাছগাছালির আড়ালে ঢুকে পড়েছে। দিন তিন ধরে জলপাইগুড়ির বোদাগঞ্জ থেকে টাকিমারিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতির বড় দল। মাঠের ফসল নষ্ট করছে বলে অভিযোগ। দু’দিন আগে একজনের মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছে। বাসিন্দাদের দাবি, পটকা ফাটিয়ে, আলো দেখিয়ে, সাইরেন বাজিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করলে দু’এক পা এগিয়েও ফিরে আসছে হাতির দল। রাতে তাড়া খেয়ে এলাকা ছাড়লেও, আবার সকালেই হাতির দলটি ফিরে আসেছে। বনকর্মীদের একাংশের দাবি, বোদাগঞ্জ থেকে টাকিমারি, গজলডোবা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নানা ফসল ফলেছে। এমন সাজানো খাদ্য ভান্ডার ছেড়ে বুনোর দল কিছুতেই ফিরতে চাইছে না। এ দিন অবরোধও করেন বাসিন্দারা। শুক্রবার সন্ধ্যায়, হাতির দল তিস্তা পার করে আপালচাঁদের জঙ্গলে ঢুকেছে।
বৈকুণ্ঠপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক রাজা এম বলেন, “হাতির দলের উপর নজর রাখা হয়েছিল। বনকর্মীরা চেষ্টা করছিলেন হাতির দলকে লোকালয় থেকে বার করে জঙ্গলে ঢুকিয়ে দিতে। সন্ধ্যার পরে তিস্তা নদী পার করে আপালচাঁদের জঙ্গলে গিয়েছে হাতির দলটি।”
শুক্রবার দুপুরে হাতির দলকে কী ভাবে লোকালয় থেকে বার করা যাবে, তা নিয়ে বৈঠক করে প্রশাসন। বন বিভাগও বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছে। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও বন দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। খগেশ্বর বলেন, “এলাকার প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে। বন দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেছি। হাতির দলটিুকে যাতে লোকালয়ের থেকে অনেকটা দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তার জন্য বন দফতরকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’
বোদগঞ্জ গৌরীকোন বিটের জঙ্গল থেকে হাতির দলটি বেরিয়ে এসেছিল বলে বন দফতর জানিয়েছে। দলে অন্তত ৯০টি হাতিকে দেখা গিয়েছে বলেও দফতর জানিয়েছে। বিঘার পর বিঘা ভুট্টা-সহ অন্যান্য আনাজ খেয়ে নিয়েছে হাতির পাল, দাবি বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি টাকিমারি, গৌরীকোন, ঠেঙ্গিপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় হাতির দল অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতিদের লোকালয় থেকে জঙ্গলে পাঠানোর দাবি শুক্রবার পথ অবরোধও করেছেন বাসিন্দারা। বোদাগঞ্জ বাজারে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)