পাশের বাড়ি থেকে ভেসে আসা মাইকের শব্দে অসুবিধা হচ্ছিল লেখাপড়ায়। উচ্চস্বরে মাইক বাজানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। অভিযোগ, তার জেরে ওই ছাত্রীকে মারধর করেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামী-সহ পরিবারের লোকেরা। আরও অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েত সদস্যা ছাত্রীকে মারার জন্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। দিনহাটা ১ ব্লকের ওকড়াবাড়ি পঞ্চায়েতের কাওরাই গ্রামে শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রীকে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই পঞ্চায়েত সদস্যা মুর্শিদা খাতুন বিবি ও তার স্বামী পিন্টু খন্দকার জানায়, তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওকড়াবাড়ি হাই স্কুলের ছাত্রী। সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে গীতালদহ হাই স্কুলে। অভিযোগ, শনিবার রাতে ওই ছাত্রী নিজের বাড়িতে বসে পড়াশোনা করছিল। তাদের পাশের বাড়িতেই থাকে ওই পঞ্চায়েত সদস্যা মুর্শিদা খাতুন বিবি। কোনও একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য তাদের বাড়িতে উচ্চস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই বাড়িতে গিয়ে ওই ছাত্রী মাইক বাজানো বন্ধের কথা বলে। সে সময়ে উভয়ের মধ্যে বচসা বেধে যায়। অভিযোগ, তখনই মুর্শিদা ও তার স্বামী এবং পরিবারের লোকজন পরীক্ষার্থীর উপরে চড়াও হয়, তাকে মারধর করে। এতে গুরুতর আহত হয় ওই ছাত্রী। তাকে উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন ছাত্রীর পরিবারের লোক।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ওই পরীক্ষার্থী বলে, ‘‘আমার মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। রাতে বাড়িতে বসে পড়ছিলাম। সেই সময়ে পাশে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে খুব জোরে মাইক বাজছিল। আমার অসুবিধা হওয়ায় গিয়ে মাইক বন্ধ করতে বলি। তখনই ওরা আমার উপরে চড়াও হয়। আমাকে মারধর করে। পঞ্চায়েত সদস্যা নিজে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসে আমাকে মারার জন্য। আমি ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’’
অভিযুক্ত মুর্শিদা খাতুন বিবি বলে, ‘‘পুরোটাই মিথ্যে অভিযোগ। আমার বাড়িতে মাইক বাজানো হয়নি। আমার স্বামীও সেখানে ছিলেন না। ওই ছাত্রীকে আমরা কেউ মারধর করিনি।’’ মুর্শিদার স্বামী পিন্টু খন্দকারের কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা। সে জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘প্রশাসন আছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে, অবশ্যই প্রশাসন
ব্যবস্থা নেবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)