লোহার যন্ত্রাংশ ঝালাইয়ের দোকানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক নাবালকের। অভিযোগ, সে ওই দোকানে কাজ করত। শুক্রবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির ভুলকির ঘটনা। মৃত রঞ্জন সিংহের (১৬) বাড়ি খুরকা গ্রামে। দুর্ঘটনার পরে ওই কিশোরের আত্মীয়রা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। মৃত ঘোষিত হলে দেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে, পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে।
রঞ্জনের বাবা চার বছর আগে মারা গিয়েছেন। তারা দুই ভাই, এক বোন। মা অসুস্থ। রঞ্জন রসাখোয়া হাইস্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মামা দয়াল সিংহের সঙ্গে ভুলকির ওই দোকানে সে কাজ করত। শুক্রবার রাতে লোহার কাঠামো ঝালাই করার সময় বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটের জেরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় রঞ্জন। দয়াল বলেন, “আমি তখন দোকানের বাইরে ছিলাম। চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, রঞ্জন মাটিতে পড়ে।” শনিবার রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয়। সূত্রের খবর, দোকানের মালিক আহমেদ হোসেনকে আটক করা হয়। লিখিত অভিযোগ না হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন ওঠায় সন্ধ্যায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “লিখিত অভিযোগ হয়নি। দোকানের মালিককে কেন ছাড়া হয়েছে, দেখা হচ্ছে।” উত্তর দিনাজপুর জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অসিতরঞ্জন দাস বলেন, “পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”
১৮ বছরের কমবয়সী নাবালককে দিয়ে কাজ করানো ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তার মৃত্যুর বিষয়ে ইসলামপুর মহকুমা শ্রম দফতরের আধিকারিক দীপনারায়ণ ভাণ্ডারি বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত স্তরেও শিশুশ্রম রুখতে কমিটি রয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট দোমোহানা পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “ঠিক কী ঘটেছে জানি না।” রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, ‘‘পুলিশ কেন ওই দোকানের মালিককে ছেড়ে দিল জানি না।’’
দোকানের মালিকের মোবাইল বন্ধ ছিল। তাঁর এক আত্মীয় বলেন, “জোর করে ওকে দিয়ে কেউ কাজ করায়নি। পরিবারের পাশে আছি।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)