সমস্যা একটা নয়, একাধিক। কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে সেখানে এখনও সে ভাবে অন্তর্বিভাগ চালু করা যায়নি। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য বাসিন্দাদের এখনও বাইরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি, হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য তথা পেসমেকার বসানোর জন্য ১০ শয্যার কার্ডিওলজির অন্তর্বিভাগ চালু হয়েছে। তবে ক্যাথল্যাব এখন পর্যন্ত চালু তো হয়নি, তার যন্ত্রপাতিও পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। হচ্ছে হবে বলে গত কয়েক বছর ধরে এ ভাবেই চলছে বলে অভিযোগ।
ইউরোলজি, নিউরোলজির অন্তর্বিভাগও চালু হয়নি। তাতে সুপার স্পেশালিটি মানের যে চিকিৎসা পরিষেবা মেলার কথা তা আখেরে অধরাই থেকে গিয়েছে। তার উপর রোগীদের দুর্ভোগ চলছেই। হাসপাতালে রোগীদের পরিজনদের ঠেলে নিয়ে যেতে হয় ট্রলি। কখনও সেটাও মেলে না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির পরিদর্শন ঘিরে সাজসাজ রব উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। তাদের সামনে পরিষেবার বিস্তারিত তুলে ধরতে ‘স্লাইড’ তৈরি করা হয়েছে। মেডিক্যাল সূত্রের খবর, নির্মল মাঝির নেতৃত্বে ওই দলটি আসার কথা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পরে তারা কালিম্পং যাবেন এ দিনই। বৃহস্পতিবার কার্শিয়াং জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন। পর দিন দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল ঘুরে ৫ এপ্রিল ফিরবে দলটি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির প্রতিনিধি দল পরিদর্শনে আসছে। তাঁরা সকলকে নিয়ে বৈঠক করবেন। তাঁদের মতো করে সমস্ত কিছু দেখবেন।’’
কয়েক মাস আগেই প্রসূতির মৃত্যুর হার বেশি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পর নড়েচড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। এখন পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে বলে জানালেও অভিযোগ ওঠেই। সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার কমানোর বিষয়টিও রয়েছে। সে সব খুঁটিনাটি দেখার কথা এই দলটির। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যে ক্যানসার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে সেই কাজের বিলম্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
আরজি করের ঘটনার পরে রাজ্যের প্রাক্তন ডিজি তথা রাজ্য সরকারের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুরজিৎ কর পুরকায়স্তের নেতৃত্বে একটি দল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নিরাপত্তা বিষয়ক দিকগুলি খতিয়ে দেখতে আসেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ক্যাম্পাস জুড়ে চিকিৎসা বর্জ্য, আবর্জনা ছড়িয়ে থাকা নিয়েও তিনি ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। সেই ব্যবস্থা হয়নি। নিরাপত্তা বিষয়ক অনেক খামতি এখনও রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ের চিকিৎসা পরিষেবায় নানা খামতি রয়ে গিয়েছে। দার্জিলিং জেলা হাসপাতালের পরিষেবা উন্নত করার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)