Advertisement
E-Paper

মাথা থেঁতলে খুনের চেষ্টা, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি সংস্থার এক নির্মাণ শ্রমিককে ইট দিয়ে মেরে মাথা থেঁতলে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক যুব নেতার বিরুদ্ধে। মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে বুধবার মাঝরাতে এই ঘটনার পরে রামকৃষ্ণ গোস্বামী নামে ওরফে তোতা নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। তবে তিনি পলাতক। গুরুতর জখম ওই শ্রমিক বাপ্পা দাসকে রাতেই চাঁচল হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০২:৫৩
চাঁচলে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ গোস্বামী। —নিজস্ব চিত্র।

চাঁচলে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ গোস্বামী। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি সংস্থার এক নির্মাণ শ্রমিককে ইট দিয়ে মেরে মাথা থেঁতলে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক যুব নেতার বিরুদ্ধে। মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে বুধবার মাঝরাতে এই ঘটনার পরে রামকৃষ্ণ গোস্বামী নামে ওরফে তোতা নামে ওই নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। তবে তিনি পলাতক। গুরুতর জখম ওই শ্রমিক বাপ্পা দাসকে রাতেই চাঁচল হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।

তৃণমূলের দাবি, রামকৃষ্ণবাবুর সঙ্গে তাঁদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রামকৃষ্ণবাবু যুব তৃণমূলের চাঁচল অঞ্চল কমিটির সভাপতি ছিলেন। তবে আপাতত জেলার সব কমিটিই ভেঙে দেওয়ার পর নতুন কমিটি তৈরি হয়নি। ওই নেতা চাঁচলের একটি গার্লস স্কুলের পরিচালন সমিতির সরকারি প্রতিনিধিও। তাঁর নামে ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। দুটিই জামিনঅযোগ্য। প্রথম ধারাটি মারধর করে গুরুতর আহত করা ও পরেরটি প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা। গত বছরের ৭ এপ্রিল মদ্যপ অবস্থায় চাঁচল থানায় ঢুকে এক পুলিশ অফিসারকে কলার ধরে বাইরে টেনে নিয়ে এসে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তোতার বিরুদ্ধে। ওই সময় গ্রেফতার হয়ে কয়েকদিন জেল হাজতেও থাকতে হয় তাকে।

মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। সেখানেই নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন প্রহৃত শ্রমিক বাপ্পা দাস। বৃহস্পতিবার রাতে প্রহৃত শ্রমিকের পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই নেতার নামে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শুরু করলেও তাঁকে ধরতে পারেনি। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে সংস্থার তরফেও পুলিশের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। পুলিশ ও তৃণমূল নেতাদের একাংশের হস্তক্ষেপে শুক্রবার শ্রমিকরা ফের কাজ শুরু করেন। অভিযুক্ত নেতা ধরা না পড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন শ্রমিকরা। ওই ঘটনার পরে আতঙ্কিত শ্রমিকরা মুখ খোলেননি। তৃণমূলের একাংশ অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন শ্রমিকদের একাংশ।

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অকারণে তাঁকে মারধর করে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা হয় বলে ওই শ্রমিক অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রকম কারণ রয়েছে কি না, সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

সম্প্রতি মালদহের সামসিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষেদের এক নেতা স্থানীয় কলেজের দুই শিক্ষিকাকে ‘রেপ করিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। তারপর হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত এক নার্সকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জিয়াউর রহমান নামে এক তৃণমূল যুব নেতার বিরুদ্ধে। দলের ছাত্র-যুব নেতারা একের পর এক এমন সব ঘটনায় জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন উপরতলার নেতারা। দলের একাংশেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘কেউ অন্যায় করলে দল তার দায়িত্ব নেবে না। এখন জেলায় যুব সংগঠনের কোনও কমিটি নেই। দলের সঙ্গে রামকৃষ্ণের কোনও সম্পর্ক নেই। অন্যায় করলে পুলিশ সেটা দেখবে।’’ পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বাবা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী হওয়ায় চাঁচল হাসপাতালের আবাসনে থাকেন তোতা। ওই চত্বরেই স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভবন তৈরির কাজ চলছে। একটি বেসরকারি সংস্থা ওই কাজের বরাত পেয়েছে। আবাসনেই কয়েকটি ঘরে ভাগাভাগি করে থাকেন শ্রমিকরা।

ইটাহার এলাকার বাসিন্দা বাপ্পাবাবুর পরিবারের অভিযোগ, রাতে গরমে বাইরে বসেছিলেন তিনি। ওই সময় তোতা অকারণে তাঁকে প্রথমে মারধর শুরু করেন। বাধা দেওয়ায় ইট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। যদিও তোতা এদিন দাবি করেছেন, ‘‘ওই শ্রমিকরা আমাদের বাড়ির মিটার থেকে বিদ্যুৎ চুরি করছিল। তা ছাড়া বাইকের তার ছিঁড়ে দিত, হাওয়া খুলে দিত। এসব কেন করছে তা বলায় বচসার সময় দুপক্ষেই হাতাহাতি হয়। এর বেশি কিছু হয়নি। তা ছাড়া, এদিন আমরা বিষয়টি মিটিয়েও নিয়েছি।’’

নির্মাণ সংস্থার চাঁচলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাস্তুকার তনয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘কাজ বন্ধ হওয়ায় আমরা পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছিলাম। আমরা কারও নাম ধরে কোনও অভিযোগ করিনি। কারণ, কাজের সময় বা প্রকল্পের ভিতরে কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’

murder police trinamool tmc itahar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy