Advertisement
E-Paper

আধুনিকীকরণের জন্য জমিজট মেটানোর দাবি

জমিজট না ছাড়ালে বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ যে সম্ভব নয়, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে স্পষ্ট করে দিল এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এএআই)। শুক্রবার বিকেলে পাহাড় সফর শেষ করে বাগডোগরা হয়ে কলকাতায় ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশনের মাধ্যমে বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ নিয়ে এএআই কী পরিকল্পনা নিয়েছে, তা তাঁকে দেখানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০২:১৬
বাগডোগরায় বিশ্ব বাংলার স্টলে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

বাগডোগরায় বিশ্ব বাংলার স্টলে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

জমিজট না ছাড়ালে বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ যে সম্ভব নয়, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে স্পষ্ট করে দিল এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এএআই)। শুক্রবার বিকেলে পাহাড় সফর শেষ করে বাগডোগরা হয়ে কলকাতায় ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশনের মাধ্যমে বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ নিয়ে এএআই কী পরিকল্পনা নিয়েছে, তা তাঁকে দেখানো হয়। মোট ৩০০ কোটি টাকার পরিকল্পনার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। প্রথম দফায় ২৩ একর জমিতে থাকা পরিবারগুলিকে সরাতে না পারলে, কোনওভাবেই আধুনিকীকরণ সম্ভব নয় বলে এএআই অফিসারেরা জানান। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন।

সরকারি সূত্রের খবর, তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার কোনও প্রকল্পের জন্য কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। বর্তমানে গঙ্গারাম চা বাগানের পিছনের ২৩ একর এলাকায় থাকা পরিবারগুলিকে কী ভাবে সরানো হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলেও আলোচনা চলছে। ওই জমিটিই ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) ব্যবস্থা কার্যকরী করার জন্য প্রয়োজন। সরকারের তরফে এএআইকে আশ্বাস দেওয়া হলেও জমিতে থাকা পরিবারগুলি জানিয়ে দিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কেউ আলোচনাই করতে আসেননি।

এই পরিস্থিতিতে সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাম আমলেই প্রকল্পটি শুরুর চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই সময় তৃণমূলই তো বাধা দিয়েছিল। কাউকে সরানো যাবে না বলে‌ছিল। এখন চার বছর ক্ষমতায় থেকেও তাই ওঁরা কিছু করেনি। শিলিগুড়ি তো উত্তরবঙ্গের স্বার্থে এই কাজ না করে সরকার খালি রাজনীতি, ভোট দেখছে।’’ অশোকবাবু জানান, ২০০৬-০৭ সাল নাগাদ এএআই-র সঙ্গে কথা বলে কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পারিনি। কিন্তু তৃণমূলও তো দেখছি কিছুই করতে পারছে না।’’

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবুও জোর করে জমি মুক্ত করার পক্ষপাতী নন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সরকার কাউকে উচ্ছদের বিরোধী। আর আমরা কাউকে কোনও সময় কিছু বাধা দিইনি। অশোকবাবুরা ব্যর্থতার দায়ভার নিতে চাইছেন না। বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ হবে। মুখ্যমন্ত্রী জমির বিষয়টি আমাকে দেখতে বলেছেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই সমস্যা মিটবে।’’

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, গত চার বছর ধরে রাজ্য সরকারের কাছে এএআই-র তরফে লিখিতভাবে জমি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এমনকি, মৌখিকভাবেও অফিসারেরা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কতার্দের তা একাধিকবার জানিয়েছেন। কিন্তু, জমি এখনও মেলেনি। এতে প্রাথমিক ভাবে আইএলএস ব্যবস্থা বসানো যায়নি। তাতে খারাপ আবাহওয়ায় দৃশ্যমানতা কমলেই বিমান বাতিল বা ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেই চলছে। এদিন আইএলএসের জন্য জমি ছাড়াও নতুন টার্মিনাল ভবনের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমি চাওয়া হয়েছে।

এএআই অফিসারেরা এদিন বিষয়টি নিয়ে সরকারিভাবে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁদের কয়েকজন জানান, গত এক বছরে বিমানবন্দরের যাত্রীসংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। বিমানের সংখ্যাও বেড়েছে। রোজ ১২-১৪টি বিমান ওঠানামা করছে। ব্যাংকক, পারোর একটি আন্তর্জাতিক উড়ানও রয়েছে। শুধু তাই নয়, টাটা ভিস্তেরার মতো বিমান রাজ্যে একমাত্র বাগডোগরা থেকেই চলাচল করছে। সেখানে দাঁড়িয়ে দ্রুত বিমানবন্দরটির আন্তর্জাতিকমানের করতে আরও আধুনিকীকরণ প্রয়োজন। আর প্রতি ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় জমিজট।

এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী, এএআই-র রিজিওনাল এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর (ইস্টার্ন রিজিয়ন) শুদ্ধসত্ত্ব ভাদুড়ি, বাগডোগরার বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায়-সহ অফিসারেরা। মন্ত্রী জানান, নতুন প্রকল্পে কার্গো, ড্রাইপোর্ট সব রয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে এসজেডিএ ড্রাইপোর্ট তৈরি করে। সেটিকে বিমানবন্দরের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রথম থেকেই বায়ুসেনার অধীনে বাগডোগরা বিমানবন্দরের এটিসি-টি রয়েছে। শীতের সময় বিশেষ করে ঘন কুয়াশা এবং কম দৃশ্যমানতার জন্য আকছাড় বিমান বাতিলের ঘটনা ঘটে। তেমনই, অনেক সময় নামতে না পেরে বাগডোগরার উপর দিয়ে বিমান ঘুরেও যায়। ইতিমধ্যে বায়ুসেনা আইএলএস-এর অনুমতিও দিয়েছে। এমনকী, তাঁরা ‘ওয়াচ-আওয়ার’ রাত ১০টা অবধি করেছে।

airport authority of india aai bagdogra airport bagdogra land problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy