ফাইল চিত্র।
নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গরু পাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র জেরার মুখোমুখি হওয়ার পরে, ওই তোপ দাগেন তিনি। সীমানা পাহারায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে তোলেন প্রশ্ন। ঘটনাচক্রে, এ দিনই কোচবিহারে বিএসএফের এক কর্তা দাবি করেছেন, বিএসএফের জওয়ানদের সততা এবং কড়া নজরদারির দৌলতে গরু পাচার বন্ধ করা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজের। তবে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘‘একাধিক দুর্নীতির তদন্ত চলছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। নিজের বাঁচার রাস্তা নেই বুঝে ভিত্তিহীন কথা বলছেন।’’
অভিষেকের দাবি, ‘‘গরু আর এমনি এমনি পাচার হচ্ছে না। সীমান্ত দিয়ে উড়েও যাচ্ছে না। সীমান্তে পাহারায় আছে বিএসএফ। সে জন্যে গরু পাচারের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ একই সুরে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহর দাবি, ‘‘বিএসএফ ছাড়া, গরু পাচার সম্ভব নয়।’’
নিশীথের নাম না করে তৃণমূল সাংসদের মন্তব্য, ‘‘আমরা দল থেকে এক গরু চোরকে বার করে দিয়েছিলাম। বিজেপি তাঁকে লোকসভায় কোচবিহারে টিকিট দিয়ে জিতিয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করেছে।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘গরু চোরকে দিয়ে গরু চুরির তদন্ত হচ্ছে।’’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের মন্তব্য, ‘‘সিবিআই ও ইডিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি বিরোধীদের হেনস্থা করছে। কিন্তু বিজেপি যখন সরকারে থাকবে না তখন তারাও পার পাবে না।’’
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের পাল্টা জবাব, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের বাঁচার কোনও রাস্তা নেই। একের পরে এক তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হচ্ছেন। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগ প্রমাণের আর বাকি নেই। এই অবস্থায় যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁদের জড়িয়ে নানা কথা বলছেন অভিষেক। কিন্তু তাঁর কোনওটাই উনি প্রমাণ করতে পারেননি, পারবেন না।’’
কোচবিহারে ৫৪৯ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত। ওই সীমান্তের বেশ কিছুটা অংশে কাঁটাতারের বেড়া নেই। সে অংশ দিয়ে লাগাতার গরু পাচারের অভিযোগ ওঠে। বিএসএফ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই দীর্ঘ সীমান্তের অনেকটা নদী-পথ রয়েছে। অনেকটা অংশে সারা বছর কৃষিকাজ হয়। এ ছাড়া, শীতের সময় কুয়াশা পড়ে চারদিক ঢাকা থাকে। সে সবের সুবিধা নেয় পাচারকারিরা। বিএসএফের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায়, কম রয়েছে। এ দিন জেলার গোপালপুরের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের কোচবিহারের গোপালপুর রেঞ্জের ডিআইজি আর এস রাওয়াত। তিনি দাবি করেন, ‘‘রাজনৈতিক বিতর্ক নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে বিএসএফেরপ্রত্যেকটি জওয়ান সৎ ও কর্মঠ। তাঁরা প্রত্যেকে দিন-রাত সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন। সে কারণেই এখন পাচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy