Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Abhishek Bnaerjee

উপচানো মাঠে অভিষেক বললেন, আবার আসব

জেলা নেতৃত্বকে ময়দানে নামিয়ে বিজেপি-বিরোধী প্রচা ও লড়াইয়ে শামিল করার লক্ষ্যেই অক্সিজেন জোগাতে চাইলেন অভিষেক। দলের অনেকে মনে করছেন, ঘন ঘন জেলা সফরের কথা সে জন্যই বলা।

সমাগম: গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে অভিষেকের জনসভায় উপচে পড়া ভিড়। ছবি: অমিত মোহান্ত।

সমাগম: গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে অভিষেকের জনসভায় উপচে পড়া ভিড়। ছবি: অমিত মোহান্ত।

নীহার বিশ্বাস   
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৩
Share: Save:

তিন বছরের ব্যবধানে গত দু’টি ভোটে এই গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে হেরেছে তৃণমূল। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছেও এই কেন্দ্রে পিছিয়ে ছিল তারা। তার পরেও যে ভাবে এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় মাঠ উপচে পাশের স্টেডিয়াম এবং রাস্তায় এ দিন ভিড় চলে যায়, তাতে আশায় মুখ উজ্জ্বল স্থানীয় তৃণমূলের। কিন্তু একই সঙ্গে এই ভিড়ের কৃতিত্ব কার, কংগ্রেস থেকে আসা বিধায়ক গৌতম দাসের নাকি বিপ্লব মিত্রের, তা নিয়ে তলায় তলায় রয়েই গেল সূক্ষ্ম টানাপড়েন।

দলের অন্দরে এই দড়ি টানাটানির মধ্যেই কিন্তু অভিষেক জানিয়ে দিলে গেলেন, ‘‘আমি খুব শীঘ্রই এই জেলায় আসব।’’ বলে গেলেন, ‘‘জেলার সব ক’টা বিধানসভায় আপনাদের সঙ্গে যাব। যেখানে প্রচার করতে বলবেন, সেখানে প্রচার করব। কিন্তু বিজেপিকে দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়া করার দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।’’

অভিষেকের এই হুঁশিয়ারিকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে ওঁর পিসি বলেছিলেন, আমরা শূন্য পাব। কিন্তু উনিশে (’১৯-এ) আমরা হাফ হয়েছি। একুশে সাফ করে দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যতবার খুশি আসুন। মানুষ আর ওঁদের আপ্যায়ন করবে না। মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’’

তৃণমূল শিবির কিন্তু এ দিনের সভা ঘিরে ভিড়ের বহর দেখে খুশি। এমনিতেই দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তারই জেরে এক সময় বিপ্লবও গেরুয়া শিবিরে চলে গিয়েছিলেন। পরে আবার পুরনো দলে ফিরে এসেছেন। কিন্তু দলের জেলা সভাপতি গৌতম দাসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এখনও সহজ নয় বলেই দল সূত্রে খবর। দলের কেউ কেউ জানিয়েছেন, তার উপরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায় এবং আরও দুই নেতাকে দলে টেনেছে বিজেপি। জেলা বিজেপির দাবি, জেলার আরও কয়েক জন নেতা বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে আছেন।

এই পরিস্থিতিতে জেলা নেতৃত্বকে ময়দানে নামিয়ে বিজেপি-বিরোধী প্রচা ও লড়াইয়ে শামিল করার লক্ষ্যেই অক্সিজেন জোগাতে চাইলেন অভিষেক। দলের অনেকে মনে করছেন, ঘন ঘন জেলা সফরের কথা সে জন্যই বলা। তাতে দলে ভাঙন ঠেকানোও সম্ভব হতে পারে বলে দলের নেতাদের দাবি।

তফসিলি জাতি ও উপজাতি, রাজবংশী, আদিবাসী প্রধান এই এলাকায় ২০১৬ সালে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল আর কংগ্রেস, সিপিএম জোটের প্রার্থী গৌতম দাস ৪৬ শতাংশ ভোট পান। তিন বছর পরে লোকসভা ভোটে দেড় শতাংশ ভোট কমে তৃণমূলের। কিন্তু উল্টো দিকে ১০ থেকে ৫১ শতাংশ হয়ে যায় বিজেপির ভোট। আর সিপিএম-কংগ্রেসের ভোটের পরিমাণ ৪৬ থেকে নেমে আসে দুই শতাংশে। এই তথ্য মাথায় রেখেই জেলা তৃণমূলের অনেক নেতাই এ দিন সভার পরে বলেন, এ দিনের ভিড় কিন্তু আশা দেখাচ্ছে।

পরীক্ষায় গৌতম সফল বলে দাবি জেলা নেতৃত্বের। অভিষেকও ভিড় দেখে আপ্লুত বলে খবর। কিন্তু বিপ্লব মিত্র? তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, দাদার ক্ষোভ রয়েই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek Bnaerjee Gangarampur TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE