Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভেজাল আবির ছেয়েছে বাজার

পুরাতন মালদহের সাহাপুর, ইংরেজবাজারের বিনয় সরকার রোড, রতুয়া, গাজল-সহ বিভিন্ন ব্লকে রয়েছে রং ও আবির তৈরির কারখানা। ওই কারখানাগুলিতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে আবির ও রঙ তৈরি হয় বলে অভিযোগ।

লাগল যে দোল। জলপাইগুড়িতে খুদের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

লাগল যে দোল। জলপাইগুড়িতে খুদের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

ভিন্ রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয় সস্তা পাউডার। সেই পাউডারের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি করা হয় রং-বেরঙের আবির। আর সেই আবিরই চড়া দামে বিকোচ্ছে মালদহের বাজারগুলোতে। রাসায়নিক যুক্ত আবির ব্যবহারের ফলে ত্বকের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়ে দোল উৎসবে নিজেদের রাঙিয়ে তুলতে ভেষজ আবির ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক তথা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কপিলদেব দাস বলেন, “রং কিংবা আবিরে নানা রাসায়নিক থাকায় ত্বক পুড়ে যায়। ত্বকে কালো ছোপ ও দাগ দেখা যায়। অ্যালার্জি ঘটিত রোগও দেখা দেয়।” শুধু তাই নয়, পেটে গেলে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর পরামর্শ, ত্বকের কোনও সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য আগে থেকেই তেল কিংবা তেল জাতীয় কিছু মেখে নিতে হবে শরীরে।

শহরের বাসিন্দা সুপর্ণা দেবশর্মা, রুবি সরকাররা বলেন, “আবির, রং ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হয়। তবে জেলাতে ভেষজ আবির তেমন না মেলায় বাধ্য হয়েই রাসায়নিক যুক্ত রঙ, আবির নিয়েই দোল খেলায় মেতে উঠি। ভেজাল আবির তৈরির কারখানাগুলিতে নজর দেওয়া উচিত প্রশাসনের।”

পুরাতন মালদহের সাহাপুর, ইংরেজবাজারের বিনয় সরকার রোড, রতুয়া, গাজল-সহ বিভিন্ন ব্লকে রয়েছে রং ও আবির তৈরির কারখানা। ওই কারখানাগুলিতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে আবির ও রঙ তৈরি হয় বলে অভিযোগ। বিভিন্ন কারখানাসূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার ও ভুটান থেকে নানা ধরনের পাথর গুঁড়ো করে তৈরি ট্যালকম পাউডার মাত্র দুই থেকে তিন টাকা কেজি দরে কিনে আনা হয়। তারপর কারখানাগুলোতে লাল, সবুজ ও হলুদ রং মিশিয়ে তৈরি করা হয় বাহারি আবির।

বিক্রির জন্য আবিরে নানা ধরনের সুগন্ধীও মেশানো হয়। তারপরই পাইকারি বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় তা। আর খোলা বাজারে সেই আবির বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে। প্রস্তুতকারকেরা বলেন, ‘‘দামী আবিরের চাহিদা কম থাকায় বাধ্য হয়েই আমরা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে আবির তৈরি করি।’’

পুরাতন মালদহের এমনই এক কারখানার শ্রমিক সমীর সরকার, প্রভাত হালদাররা বলেন, ‘‘প্রায় ২০ বছর ধরে কোদাল আর পা চালিয়ে আবির তৈরি করে আসছি। আমাদের সঠিক ভাবে প্রশিক্ষণ দিলে আমরাও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে আবির তৈরি করতে পারব।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক আর. ভিমলা বলেন, “শীঘ্রই ভেজাল রঙের কারখানায় অভিযান চালানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE