উড়ালপুল তৈরির জন্য জঙ্গলের গাছ কেটে ফেলার বিরুদ্ধে এ বার একজোট হলেন আইনজীবীরাও। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগের নির্দেশে গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে উড়ালপুল তৈরির জন্য লাটাগুড়িতে গাছ কাটা শুরু হয়। আন্দোলন শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিষয়টি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। হাইকোর্ট গাছ কাটায় আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী এবং পরিবেশপ্রেমী সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ বার আইনজীবীরাও গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা।
গত মার্চ মাসে জলপাইগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকে জেলায় পাঁচটি উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত জানান মুখ্যমন্ত্রী। গত এপ্রিল মাস থেকে লাটাগুড়িতে উড়ালপুল তৈরির জন্য গাছ কাটা শুরু হয়। সূত্রের খবর পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়র বিভাগের নির্দেশে বন উন্নয়ন নিগম গাছ কাটতে শুরু করেছিল। গাছ কাটা নিয়ে সরকারি দফতর জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালন সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে রয়েছেন তৃণমূল আইনজীবী সংগঠনের সদস্যরা। যদিও গাছ কাটার নিন্দায় ঐক্যমতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি।
জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীপক কুমার দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘শুধুমাত্র ভোটের সময়েই এ দল-ও দল ভাগ থাকে। তারপরে সকলের পরিচয় শুধু আইনজীবী এবং বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। রাজ্য নাকি কেন্দ্র কে গাছ কাটছে আমরা জানি না। আমরা শুধু গাছ কাটার নিন্দা করে ক্ষোভ জানিয়েছি। আমাদের দাবি, আইন মেনেই যেন যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়।’’
২০০৩ সালে চালসা-মালবাজার হয়ে পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কের প্রস্তাবের বিরুদ্ধেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন। সে সময়ও জঙ্গল চিরে চার লেনের সড়ক তৈরির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন আইনজীবীরা। তবে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হওয়া নিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের অন্দরে ভিন্নমতও রয়েছে। কী পরিস্থিতিতে গাছ কাটা হচ্ছে তা জেনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পক্ষপাতি ছিলেন অনেকে। গত শুক্রবার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরে প্রচারের জন্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে প্রতিলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়। তার পরেও ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন অনেকেই। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বলেন, ‘‘কারা গাছ কাটছে তা আমরা জানি না। সে কারণেই জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি সবিস্তারে জানতে চাওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছুই এখনও হয়নি।’’