Advertisement
০৩ মে ২০২৪

স্বামীকে খুন বিষ খাইয়ে, সন্দেহ

নিশ্চিত হতে লাগাতার জেরা করা হচ্ছে ওই ঘটনায় ধৃত উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা মোহান্তকে। শনিবার আদালতে তোলা হলে ধৃতকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়৷

ধৃত: জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। ছবি: সন্দীপ পাল

ধৃত: জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে জলপাইগুড়ির এলআইসির-র ডেভেলপমেন্ট অফিসারকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের৷ নিশ্চিত হতে লাগাতার জেরা করা হচ্ছে ওই ঘটনায় ধৃত উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা মোহান্তকে। শনিবার আদালতে তোলা হলে ধৃতকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, রিপোর্ট হাতে না মিললেও বিষক্রিয়ার ফলেই যে উত্তমবাবুর মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকরা৷

শুক্রবার দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা বাস স্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকার ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় উত্তম মোহান্তের৷ অভিযোগ, ওই সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ রায় উত্তমবাবুকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করলে দেহটি তারা ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন৷ তারপর অনির্বাণ পান্ডাপাড়া এলাকার এক চিকিৎসককে ওই বাড়িতে নিয়ে আসেন৷ তিনিই উত্তমবাবুর ডেথ সার্টিফিকেট দেন৷

এরই মধ্যে উত্তমবাবুর সহকর্মীরা তার মৃত্যুর খবরটি জেনে ফেলেন৷ সন্ধ্যার পর কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে উত্তমবাবুর বাড়িতেও তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছায়৷ ওই রাতেই ভেটাগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি এসে উত্তমবাবুর মৃত্যু নিয়ে নিজেদের সন্দেহের কথা পুলিশকে জানান তাঁর পরিজনরা। গভীর রাতে উত্তমবাবুর দেহ নিয়ে যায় পুলিশ৷

উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে লিপিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অনির্বাণের সঙ্গে দু’বার ঘর ছেড়েছিলেন লিপিকা৷ উত্তমবাবুকে রীতিমতো অত্যাচার করতেন তারা। এবং ষড়যন্ত্র করেই দু’জন মিলে তাঁকে খুন করে৷ যদিও লিপিকা পুলিশের কাছে দাবি করে, অত্যাধিক মদ্যপানের ফলে হার্ট অ্যাটাকে তার স্বামীর মৃত্যু হয়৷

শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে উত্তমবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত হয়৷ প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর ইঙ্গিত মেলার পর তাকে কী বিষ খাওয়ানো হয়েছিল তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ৷ তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন সকালে লিপিকা নিজে হাতে উত্তমবাবুকে আম ও মুড়ি খাইয়েছিল৷ ফলে তাতে কিছু মেশানো ছিল কি না তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷ প্রকাশ্যে পুলিশ কর্তারা না বললেও তদন্তকারীদের একজন এমনও দাবি করেন, উত্তমবাবুকে বিষ দেওয়ার কথা লিপিকা জেরায় স্বীকার করেছে৷

ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অনির্বাণ। তার খোঁজে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷ তদন্তকারীদের কথায়, অনির্বাণ গ্রেফতার হলেই গোটা রহস্য পরিস্কার হয়ে যাবে৷ পাশাপাশি যে চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছে তাঁর বিষয়েও খোঁজ-খবর শুরু করেছে পুলিশ৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘তদন্তে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE