ধৃত: জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। ছবি: সন্দীপ পাল
বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে জলপাইগুড়ির এলআইসির-র ডেভেলপমেন্ট অফিসারকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের৷ নিশ্চিত হতে লাগাতার জেরা করা হচ্ছে ওই ঘটনায় ধৃত উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা মোহান্তকে। শনিবার আদালতে তোলা হলে ধৃতকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, রিপোর্ট হাতে না মিললেও বিষক্রিয়ার ফলেই যে উত্তমবাবুর মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকরা৷
শুক্রবার দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা বাস স্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকার ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় উত্তম মোহান্তের৷ অভিযোগ, ওই সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ রায় উত্তমবাবুকে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করলে দেহটি তারা ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন৷ তারপর অনির্বাণ পান্ডাপাড়া এলাকার এক চিকিৎসককে ওই বাড়িতে নিয়ে আসেন৷ তিনিই উত্তমবাবুর ডেথ সার্টিফিকেট দেন৷
এরই মধ্যে উত্তমবাবুর সহকর্মীরা তার মৃত্যুর খবরটি জেনে ফেলেন৷ সন্ধ্যার পর কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে উত্তমবাবুর বাড়িতেও তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছায়৷ ওই রাতেই ভেটাগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি এসে উত্তমবাবুর মৃত্যু নিয়ে নিজেদের সন্দেহের কথা পুলিশকে জানান তাঁর পরিজনরা। গভীর রাতে উত্তমবাবুর দেহ নিয়ে যায় পুলিশ৷
উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে লিপিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অনির্বাণের সঙ্গে দু’বার ঘর ছেড়েছিলেন লিপিকা৷ উত্তমবাবুকে রীতিমতো অত্যাচার করতেন তারা। এবং ষড়যন্ত্র করেই দু’জন মিলে তাঁকে খুন করে৷ যদিও লিপিকা পুলিশের কাছে দাবি করে, অত্যাধিক মদ্যপানের ফলে হার্ট অ্যাটাকে তার স্বামীর মৃত্যু হয়৷
শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে উত্তমবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত হয়৷ প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর ইঙ্গিত মেলার পর তাকে কী বিষ খাওয়ানো হয়েছিল তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ৷ তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন সকালে লিপিকা নিজে হাতে উত্তমবাবুকে আম ও মুড়ি খাইয়েছিল৷ ফলে তাতে কিছু মেশানো ছিল কি না তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷ প্রকাশ্যে পুলিশ কর্তারা না বললেও তদন্তকারীদের একজন এমনও দাবি করেন, উত্তমবাবুকে বিষ দেওয়ার কথা লিপিকা জেরায় স্বীকার করেছে৷
ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অনির্বাণ। তার খোঁজে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷ তদন্তকারীদের কথায়, অনির্বাণ গ্রেফতার হলেই গোটা রহস্য পরিস্কার হয়ে যাবে৷ পাশাপাশি যে চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছে তাঁর বিষয়েও খোঁজ-খবর শুরু করেছে পুলিশ৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘তদন্তে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy