আগে হুমকি দিয়েছিলেন অগস্ট মাসে ‘বিপ্লব’ হবে। এ দিন দাবি করলেন, পুজোর পরেই শিলিগুড়ি থেকে বামেদের ‘বিসর্জন’ হবে। সোমবার বিকেলে মিত্র সম্মিলনী হলে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে দলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব দাবি করে বলেন, ‘‘পুজোর পরেই শিলিগুড়ি থেকে বামপন্থীদের বিসর্জন হবে। ডিসেম্বরের মাসের পরে দলে আর কোনও নতুন যোগদান হবে না। তার আগেই সব প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে।’’ এ দিন যুব তৃণমূল সভাপতি বিকাশ সরকারের উদ্যোগে শহরের ৫, ৬, ২৪, ৪৬ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের শতাধিক বাম-বিজেপি সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ— গত বছর উপর্যুপরি দুই ভোটেই তৃণমূল হারে। তৃণমূল বিরোধীদের নিয়ে জোট গড়ে দুই বোর্ডেই ক্ষমতা দখল করে বামেরা। রাজ্য রাজনীতিতে সেই বিরোধী জোট ‘শিলিগুড়ি মডেল’ হিসেবে চর্চিত হয়।
তার পর থেকে তৃণমূল নেতারা বারবার পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ দখল করার হুমকি দিলেও, বামেদের ঘর ভাঙতে পারেননি। পুরভোটে হারের পরে দলের জেলা সভাপতির পদ গৌতমবাবুর থেকে নিয়ে যুব নেতা রঞ্জন সরকারকে দেওয়া হয়। বিধানসভা ভোটের পরে ফের গৌতমকে ওই পদে ফিরিয়ে আনা হয়। দলের নেতাদের একাংশের দাবি, জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে এখন শিলিগুড়ির দুই বোর্ডের দখল নেওয়াই গৌতমের কাছে চ্যালেঞ্জ।
কিছু দিন আগেই গৌতমবাবু হুমকি দিয়েছিলেন, অগস্টে ‘বিপ্লব’ হবে। শিলিগুড়ির এক বাম কাউন্সিলর সহ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেয়। বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি দখলে যায় শাসকদলের। তবে পুরসভা ও মহকুমা পরিষদে বাম বোর্ডে বড় ভাঙন দেখা যায়নি। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি থেকে মালদহ জেলা পরিষদ দখল করেছে তৃণমূল। ফলে ‘চাপ’ বাড়ছে গৌতমবাবু-সহ জেলা নেতাদের ওপর। সেই চাপ শোনা গিয়েছে এ দিন গৌতমের বক্তব্যেও। তিনি বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি থেকে চোপড়া— সব আসনে দল জিতছে, আর শিলিগুড়িতে এসে হারছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমার নেতৃত্বে বারবার দলের হারে বুকে রক্তক্ষরণ হয়।’’
শিলিগুড়িতে সংগঠনকে চাঙ্গা করার নানা দওয়াইও এ দিন দিয়েছেন গৌতমবাবু। ছাত্র-শ্রমিক-যুবক সব সংগঠনকে বুথ স্তর থেকে মজবুত করা, দলের বুথের সব সমর্থকের ফোন নম্বর, ই-মেল আইডি নিয়ে তথ্যভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। বামেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে বলেছেন সব সংগঠনকে। সেই সঙ্গে কর্মীদের চাঙ্গা করতে বাম ‘বিসর্জনে’র হুমকিও দিলেন এ দিন।
সিপিএম অবশ্য গৌতমের এই ‘গর্জন’ উড়িয়ে দিয়েছে। এ দিন সিপিএম জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার পাল্টা দাবি করেছেন, পুরসভা বা মহকুমা পরিষদ, কিছুই তাঁদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া যাবে না। গৌতমবাবুর হুমকিকে কটাক্ষ করে জীবেশ বলেন, ‘‘স্বপ্নে খেতে হলে, বড় রসগোল্লা খাওয়াই ভাল। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’ গ্রাম দখল অবশ্য বজায় রেখেছে তৃণমূল। এ দিনই বেশ বামেদের কয়েক জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy