Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফের সফল অস্ত্রোপচার

বাড়ির লোকেরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বুঝেছিলেন যুবকের পা ঠিক করতে হলে জটিল অস্ত্রোপচারে মজ্জার ভিতরে রড ঢোকাতে হবে৷

আশা: আবার হাঁটতে পারবেন দুলাল সরকার। নিজস্ব চিত্র

আশা: আবার হাঁটতে পারবেন দুলাল সরকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৫
Share: Save:

জটিল অস্ত্রোপচারে ফের সফল সরকারি হাসপাতাল৷ এ বার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঘটনা৷

সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের কিছু সরকারি হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। এ বার সেই তালিকায় নাম উঠল জলপাইগুড়িরও।

এ মাসের শুরুর দিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন কুড়ি বছরের যুবক দুলাল সরকার৷ বাঁ পায়ে হাঁটু ও গোড়ালির মাঝে দু’টি হাড় ভেঙে গিয়েছিল৷ বাড়ির লোকেরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বুঝেছিলেন যুবকের পা ঠিক করতে হলে জটিল অস্ত্রোপচারে মজ্জার ভিতরে রড ঢোকাতে হবে৷

কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলার সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় এমন পরিকাঠামো থাকলেও, আগে এ ধরনের অস্ত্রোপচার এখানে হয়নি৷ তাই ঝুঁকি না নিয়ে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু রাজমিস্ত্রির কাজ করা ওই যুবকের একার আয়ে চলা তাঁর পরিবার। তাঁকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল না৷ যা বুঝতে পারেন চিকিৎসকরাও৷ তাই শেষ পর্যন্ত জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেই ওই যুবকের পায়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা৷ বুধবার দেড় ঘন্টার চেষ্টায় সফল ভাবে হয় সেই অস্ত্রোপচারও৷

প্রথমবারেই এই অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগীকে আর বাইরে না পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই অস্ত্রোপচারের নাম টাইটেনিয়াম এলাস্টিক নেইল সিস্টেম৷ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দুই চিকিৎসক কমলেশ বিশ্বাস ও অনুপম সাহার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল গড়া হয়েছিল৷ হাসপাতালের আট তলায় বুধবার দুপুরে এই অস্ত্রোপচার শেষ হয়৷ কমলেশবাবুর কথায়, কোনও কাটা ছেঁড়া না করে, শুধু গোড়ালির দু’দিকে দু’টো ফুটো করে টাইটেনিয়ামের দু’টি রড হাড়ের মজ্জাগ্রন্থির ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় সি আর্ম মেশিন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে এর আগেও ছিল৷ কিন্তু তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো ছিল না৷ অনুপমবাবুর কথায়, হাড়ের মধ্য দিয়ে রডটা ঢোকানোর সময়, হাড়টা ফুটো পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে৷ ফলে এই অস্ত্রোপচার যথেষ্টই ঝুঁকিরও৷

কমলেশবাবুও জানান, মাস দেড়েক পর থেকেই যুবককে হাঁটানোর চেষ্টা শুরু হবে৷ চিকিৎসকরা জানান, বেসরকারি পরিকাঠামোয় এ ধরনের অস্ত্রোপচারে দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যায়৷ যুবকের মা সরোজিনী সরকার বলেন, ‘‘এত টাকা জোগারের ক্ষমতা নেই৷ আমরা চির কৃতজ্ঞ থাকব৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Surgery Hospital Boy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE