Advertisement
E-Paper

রেশন কার্ড প্রাপকদের তালিকা নিয়ে ক্ষোভ

কারও তিন তলা বাড়ি। কারও চার চাকার গাড়ি। কেউ আবার সরকারি চাকুরে। তারা ডিজিটাল রেশন কার্ড পেয়েছেন। অথচ দরমার ভাঙা ঘরে বৃষ্টিতে ভিজে দিন গুজরান করতে হচ্ছে যাঁদের, তাঁদের অনেকেরই নাম নেই ডিজিটাল রেশন কার্ড প্রাপকদের তালিকায়।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০২:০০

কারও তিন তলা বাড়ি। কারও চার চাকার গাড়ি। কেউ আবার সরকারি চাকুরে। তারা ডিজিটাল রেশন কার্ড পেয়েছেন। অথচ দরমার ভাঙা ঘরে বৃষ্টিতে ভিজে দিন গুজরান করতে হচ্ছে যাঁদের, তাঁদের অনেকেরই নাম নেই ডিজিটাল রেশন কার্ড প্রাপকদের তালিকায়। কোচবিহার জেলার বহু এলাকাতেই ওই চিত্র সামনে আসায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, “এক্ষেত্রে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। পুরোনো নাম বাতিল করে নতুন নাম সংযোজন করা যেতে পারে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” কোচবিহার জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক মানিক সরকার বলেন, “আমাদের কাছে যেমন কার্ড এসেছে তা বিলি করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেলে ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের গুঞ্জবাড়ি এলাকায় অসিত কুমার দত্তের নাম বিশেষ অগ্রাধিকার ভুক্ত পরিবারের তালিকায় রয়েছে। অভিযোগ, কামেশ্বরী রোডে তাঁর তিন তলা বাড়ি রয়েছে। তাঁর জুতোর ব্যবসা রয়েছে। ওই এলাকাতেই সত্যজিৎ লোধের পরিবারেরও ওই তালিকায় নাম রয়েছে। কার্ডও হাতে পেয়েছেন তাঁরা। সত্যজিৎবাবু অটোমোবাইল ব্যবসায়ী। রাস্তার ধারে তাঁর দোকান রয়েছে। ওই এলাকাতেই ডাক বিভাগের এক কর্মীর নামও ওই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। তাঁর দোতলা বাড়ি রয়েছে। বাড়িতে চার চাকার গাড়িও রয়েছে। অসিতবাবু বাড়ি না থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। সত্যজিৎবাবু বলেন, “আমার দুই ভাই খুব গরিব। অন্যের দোকানে কাজ করে। তাঁরা কার্ড পায়নি। আমি মোটরবাইক সারাই এর কাজ করি। কষ্ট করেই চলি।”

ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহর অভিযোগ গোটা জেলায় এমন ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে। গরিব মানুষেরা কার্ড পাচ্ছে না। দলের পক্ষ থেকে তাঁরা ওই তালিকা সংগ্রহের কাজে নেমেছেন। বিভিন্ন এলাকায় ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীরা তালিকা তৈরি করছেন। ওই তালিকা নিয়ে ২৮ জুলাই সমস্ত মহকুমা শাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা। তিনি বলেন, “এসব কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না। খাদ্য সুরক্ষা আইনের কথা বলে গরিব মানুষদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা আমরা কিছুতেই মেনে নেব না। টানা আন্দোলন চলবে।”

খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে অবশ্য স্পষ্ট জানানো হয়েছে ডিজিটাল কার্ড বিলির আগে কোনওরকম সমীক্ষা তাঁরা করেননি। পঞ্চায়েত ও নগরোন্নয়ন দফতরের আর্থসামাজিক এবং বর্ণ আদমসুমারি অনুসারে ওই কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। কোচবিহার জেলায় ৩০ লক্ষ রেশন কার্ড গ্রাহকের মধ্যে ১৯ লক্ষ গ্রাহককে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে। তিনটি স্তরে ওই কার্ড ভাগ করা হয়েছে। প্রথম স্তরে রয়েছে অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনা (এএওয়াই)। ওই তালিকায় একদম গরিব যারা, তাঁদের নাম রাখা হয়েছে। সেখানে নাম থাকা পরিবার পিছু মাসে ৩৫ কেজি করে চাল ও গম দেওয়া হবে। এ ছাড়াও রয়েছে পিএইচএইচ (অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত পরিবার) এবং এসপিএইচএইচ (বিশেষ অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত পরিবার)।

ওই দুই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে সেই পরিবারের জন পিছু মাসে ৫ কেজি করে চাল এবং গম পাবে। বিশেষ তালিকাভূক্তরা চিনি পাবেন। দফতরের কর্তারা জানান, ডিজিটাল কার্ড চালু করা হলেও সাধারণ রেশন কার্ড বাতিল করা হচ্ছে না। ওই কার্ডের মাধ্যমে যেভাবে কেরোসিন তেল গ্রাহকরা পাচ্ছিলেন তেমনটাই পাবেন। খাদ্য সরবরাহ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, জেলায় এখনও ওই কার্ড বিলির কাজ শেষ হয়নি। সত্তর শতাংশ কার্ড বিলি হয়েছে। বাকিরা শীঘ্রই কার্ড পাবেন।

Agitation Ration Card holder Rain Cooch Behar Namitesh Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy