Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভর্তিতে দুর্নীতির নালিশ, আন্দোলনে ছাত্র পরিষদ

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল ছাত্র পরিষদ। সোমবার ওই অভিযোগ নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিতে যায় ছাত্র পরিষদ।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল ছাত্র পরিষদ।

সোমবার ওই অভিযোগ নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিতে যায় ছাত্র পরিষদ। বেলা ১২টা নাগাদ তারা মিছিল করে উপাচার্যের কাছে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার গেট আটকে দেন নিরাপত্তা কর্মীরা। ঘণ্টাখানেক ধরে সেখানেই অবস্থান বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা। গেটের কোলাপসিবল গেট ঝাঁকিয়ে, ধাক্কা মেরে খোলার চেষ্টা করে সিপি’র উত্তেজিত কর্মী সমর্থকেরা। এর পর সাতজন প্রতিনিধিকে উপাচার্য দেখা করার অনুমতি দিলে তাঁরা যান। উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পর সিপি’র জেলা সভাপতি রোনাল্ড দে জানান, উপাচার্য কমিটি গঠন করে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

পরে উপাচার্যের হয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কনককান্তি বাগচী বলেন, ‘‘উপাচার্যের কাছে বাগডোগরা কলেজ ইউনিটের তরফে হাতে লেখা স্মারকলিপি দিচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাতে অনেক কিছুই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। সে কারণে কম্পিউটারে লেখা স্মারকলিপি জমা দিতে বলেছেন উপাচার্য। তা দেখার পরেই তিনি প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেবেন বলে আন্দোলনকারীদের জানিয়েছেন। তার মধ্যে বাগডোগরা কলেজে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার বিষয়টি অন্যতম।’’ সিপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রুত কম্পিউটারে স্মারকলিপির বয়ান লিখে উপাচার্যের কাছে জমা করবেন।

ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, বাংলা বিভাগে ৫৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন এক ছাত্রী। মেধা তালিকায় না পেয়ে লিখিত পরীক্ষায় বসেও তিনি সুযোগ পাননি। অথচ ৪৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এক ছাত্রী। লিখিত পরীক্ষার বসিয়ে তাঁকে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

বাংলা ছাড়াও ইতিহাস, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূগোল, প্রাণীবিদ্যার মতো বিভিন্ন বিভাগেই এ ভাবে কম নম্বর পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের অনেকে সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রোনাল্ডদে’র অভিযোগ, ‘‘পরীক্ষার নামে প্রহসন হয়েছে। মেধা তালিকায় সুযোগ না পেয়ে পরীক্ষায় বসা ছাত্রছাত্রীদের একাংশকে তৃণমূলের ছাত্রনেতারা টাকার বিনিময়ে সুয়োগ করে দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মদতেই এ সব হয়েছে।’’

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে মেধা তালিকার ভিত্তিতে স্নাতকোত্তর স্তরে ৬০ শতাংশ আসনে ভর্তি করানো হয়। বাকি ৪০ শতাংশ ভর্তি নেওয়া হয় পরীক্ষার মাধ্যমে। তাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলির ছাত্রছাত্রী-সহ বাইরের পড়ুয়ারাও সুযোগ পেয়ে থাকেন।

তাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তৃণমূলের জেলা নেতা মিঠুন বৈশ্য বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন কথা বলছে সিপি। এ দিন যাঁরা আন্দোলনে গিয়েছিলেন অধিকাংশই বাগডোগরা কলেজে স্নাতকস্তরে ভর্তির প্রার্থী। স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির প্রাথীদের তাদের সঙ্গে দেখা যায়নি।’’

কালীপদ ঘোষ তরাই মহাবিদ্যালয় তথা বাগডোগরা কলেজে স্নাতকস্তরে বহু ছাত্রছাত্রী এখনও ভর্তির সুযোগ পায়নি বলে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবিও তুলেছে সিপি। বাগডোগরা কলেজের ওই ছাত্রছাত্রীদের একাংশকে নিয়েই এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে সিপি। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জানান, বিষয়টি কলেজের অধীনে। তাই অতিরিক্ত পড়ুয়া ভর্তির ব্যাপারে কলেজ থেকে কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে তাদের মতামত জানিয়ে দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE