উত্তপ্ত: বোর্ড গঠন নিয়ে উত্তেজনা পাহা়ড়পুরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল বোর্ড গঠন করলেও শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা থাকল না বলে অভিযোগ। সোমবার জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল এলাকায়। এই পঞ্চায়েতের ২৫টির মধ্যে ২৪টি আসনই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। ১টি বিজেপির।
তা সত্ত্বেও বোর্ড গঠনের দিন উত্তেজনা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিল প্রশাসন। তাই মোতায়েন করা হয়েছিল কোতোয়ালি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। দলের পক্ষ থেকে বোর্ড গঠনের দায়িত্ব পালনে আসেন তৃণমূলের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ দাস এবং সদর ব্লক ২-এর সভাপতি নিতাই কর। তাঁদের সঙ্গে আসে গোটা তিরিশেক গাড়ি ভর্তি হাজারখানেক কর্মী সমর্থক। বাইরে কড়া পুলিশি পাহারায় পঞ্চায়েত অফিসের ভিতর শুরু হয় বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া। কৃষ্ণ দাস, নিতাই কর জানিয়ে দেন দলের পক্ষ থেকে সিল করা খামে প্রধান, উপপ্রধানের নাম পাঠানো হয়েছে। সেই খাম খুলে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী অনিতা রাউতের নাম প্রধান পদের জন্য ঘোষণা করা হয়। উপপ্রধান হন বেণুরঞ্জন সরকার।
এরপরেই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। যুব তৃণমূল কর্মীদের জটলা দেখা যায়। এর মধ্যেই বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করে জেলা নেতারা বেরিয়ে যান। স্থানীয় কর্মীদের উষ্মা আঁচ করে নবনির্বাচিত প্রধান এবং উপপ্রধানও তাঁদের সঙ্গেই বেরিয়ে যান।
এরপরেই দেখা যায় তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী বিকাশ বসাক কাঁদছেন। তাঁর অনুগামীরা চোখেমুখে জল দিয়ে তাকে সামলানোর চেষ্টা করছেন। বিকাশ বসাক এই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান।
এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। তাঁদের সিংহভাগই যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মী। জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় অনুগামী হিসেবেই পরিচিত তাঁরা। যুব তৃণমূলের পাহাড়পুর অঞ্চল সভাপতি লুৎফর রাহমান জানিয়েছেন, তাঁরা প্রধান পদে রেজিনা বেগম এবং উপপ্রধান পদে বিকাশ বসাককে চেয়েছিলেন। জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর কাছে লিখিত ভাবেই সেই আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় ভাবাবেগকে এড়িয়ে দু’জন বহিরাগতকে পদে বসানো হল বলে তাঁদের অভিযোগ।
লুৎফর রহমানের অভিযোগ, ‘‘কোনও আলোচনা করা হয়নি। জোর করেই নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেন জেলা নেতৃত্ব।’’ সৈকতবাবুর বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু তৃণমূল যদি তৃণমূলের উপর অত্যাচার করে তবে তাতে দলেরই ক্ষতি।’’ এই বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুব সভাপতি। দলের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ দাস অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বড় দলে এ সব সমস্যা থাকেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy