Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি একটু কমতেই ভাঙনের ভ্রূকুটি

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন থেকেই নদী ভাঙন বড় আকার নিচ্ছে কালচিনিতে। ওই ব্লকে তোর্সা, ডিমা, বাসরা, ভাণ্ডারী সহ বিভিন্ন নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৮
জলমগ্ন: আলিপুরদুয়ারের চাপড়ের পাড় এলাকার দ্বীপচরে বাড়ি জলবন্দি। নিজস্ব চিত্র

জলমগ্ন: আলিপুরদুয়ারের চাপড়ের পাড় এলাকার দ্বীপচরে বাড়ি জলবন্দি। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টির ভ্রূকুটি রয়েইছে। বেশ কিছু জায়গাতে এখনও জমে রয়েছে জল। এরই মধ্যে নদীগুলো কিছুটা স্বাভাবিক হতেই ভাঙনে জেরবার হতে শুরু করল আলিপুরদুয়ার। নদী ভাঙন নিয়ে এখন রীতিমতো উদ্বেগে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা। উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনের অন্দরেও। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জলপাইগুড়িতে আয়োজিত বৈঠকে সেচমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি তুলে ধরেছেন জেলা পরিষদের কর্তারা।

গত কয়েক দিন ধরে একটানা বৃষ্টি চলছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। গতি খানিকটা কমলেও, সোমবারও জেলায় অব্যাহত ছিল বৃষ্টি। একই সঙ্গে পাহাড়ে বৃষ্টি খানিকটা কমায় জেলার বিভিন্ন নদীর জল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আর তারপরই জেলা জুড়ে ভাঙন বড় আকার নিচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙনের জেরে কৃষিজমির পাশাপাশি অনেক চা বাগানের জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন থেকেই নদী ভাঙন বড় আকার নিচ্ছে কালচিনিতে। ওই ব্লকে তোর্সা, ডিমা, বাসরা, ভাণ্ডারী সহ বিভিন্ন নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদী ভাঙনের জেরে কালচিনি, চুয়াপাড়া, মেচপাড়া চা বাগান এলাকার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্ধ মধু চা বাগানও। গতিপথ ঘুরে বাসরা নদীর একটি অংশ মধু চা বাগানে ঢুকে পড়ায় সেখানে বাস করা বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অবিলম্বে বসরা নদীর ভাঙন ঠেকাতে সোমবার সকালে প্রায় আধ ঘন্টা ধরে হাসিনারা-কালচিনি রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তারা। পরে প্রশাসনের কর্তাদের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

নদীর জল যত স্বাভাবিক হচ্ছে, ততই কুমারগ্রামে সংকোশের ভাঙন বড় আকার নিচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

ভলকা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুনগর, মাঝেরডাবরি সহ সঙ্কোশ লাগোয়া বেশ কিছু গ্রামে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। ভাঙন চলছে তুরতুরখণ্ডেও। ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর ১ ও জটেশ্বর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন মৌজা ছাড়াও দেওগাঁতে মুজনাই নদীর ভাঙন অব্যাহত ছিল। কলি ও তাতাসি নদীর ভাঙন চলছে ওই ব্লকের ধনিরামপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি মৌজায়। মাদারিহাটে হাউরি, বাংরি ও তিতি, দয়ামারির মতো পাহাড়ি নদীগুলির ভাঙনে টোটোপাড়া যাওয়ার রাস্তার ক্ষতি রয়ে গিয়েছে। বরং ক্ষতি বেড়েছে। তোর্সার ভাঙন চলছে টোটোপাড়ায় যাওয়ার বিকল্প পথ ট্রলিলাইনে।

জেলা জুড়ে নদী ভাঙনে উদ্বেগ ছড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অন্দরেও।

আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন, ‘‘জেলার অনেক জায়গাতেই নদী ভাঙন চলছে। যার জন্য বহু জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। এদিন জলপাইগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে সেচমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি তুলে ধরেছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ভাঙন রোখার সব কাজ জেলা পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়, এমন কাজ সেচ দফতর যাতে দ্রুততার সঙ্গে করে মন্ত্রীর কাছে সেই আর্জি জানিয়েছি।’’

সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ার বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার নীরজ কুমার সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘জেলায় ভাঙনের যে সব ঘটনা ঘটছে, তার সবটাই হচ্ছে নদীর অসংরক্ষিত এলাকায়। নদীর সংরক্ষিত এলাকায় কোনও ভাঙন নেই। বৃষ্টি কমলে অবশ্যই পরিকল্পনা তৈরি করে ভাঙন রোখার কাজ শুরু হবে।’’

Alipurduar আলিপুরদুয়ার River Erotion Flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy