Advertisement
১৮ মে ২০২৪

স্লগ ওভারে বাপি বাড়ি যা

আশঙ্কায় রেখেছিল নিম্নচাপ। কিন্তু পুজোর আগের শেষ রবিবারের আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। তাই পুজোর বাজারের স্লগ ওভারে চালিয়ে খেললেন ক্রেতা, বিক্রেতারা। শনিবার বিকেলে কোথাও বৃষ্টি, কোথাও মেঘের গর্জন পুজোর বাজারে থাবা বসায়। তাই রবিবারের ঝলমলে আবহাওয়ায় দুপুরের পর থেকেই বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করে।

পুজোর আগে শেষ রবিবার উপচে পড়ল বাজার। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাক ও সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

পুজোর আগে শেষ রবিবার উপচে পড়ল বাজার। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাক ও সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০০
Share: Save:

আশঙ্কায় রেখেছিল নিম্নচাপ। কিন্তু পুজোর আগের শেষ রবিবারের আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। তাই পুজোর বাজারের স্লগ ওভারে চালিয়ে খেললেন ক্রেতা, বিক্রেতারা। শনিবার বিকেলে কোথাও বৃষ্টি, কোথাও মেঘের গর্জন পুজোর বাজারে থাবা বসায়। তাই রবিবারের ঝলমলে আবহাওয়ায় দুপুরের পর থেকেই বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করে। শিলিগুড়ির শপিং মলগুলিতে ভিড় উপচে পড়েছে, রায়গঞ্জের বাজারে ঢুকতে লাইন পড়েছে। পার্লারে ঢুকতে অগ্রিম বুকিং করতে হয়েছে, আবার বাজার করার সময় নিজস্বী তুলে হাতে হাতে পুরস্কার পাওয়ার সুযোগও ছিল কোথাও।

কুপনে ফুচকা

কোচবিহারের ভবানী চৌপথী এলাকার একটি শপিংমলে নির্দিষ্ট টাকার কেনাকাটায় দেওয়া হচ্ছে কুপন। তাতে প্রত্যেক দিন লাকি ড্র হচ্ছে। একজনকে এক গ্রামের সোনার স্মারক মুদ্রা, দু’জনকে স্মারক রুপোর মুদ্রা দেওয়া হচ্ছে। ওই শপিংমলের ম্যানেজার পারভেজ আনসারি বলেন, “চূড়ান্ত পর্বে উপহার হিসেবে রয়েছে বাইক।” কোচবিহারের একটি বড় কাপড়ের দোকানে আবার নির্দিষ্ট অঙ্কের কেনাকাটায় ডিটারজেন্টের প্যাকেট থেকে কাপ সেট, স্টিলের বালতি, ক্যামেরা যুক্ত মোবাইল দেওয়া হচ্ছে। ওই দোকানের কর্ণধার সুরজ ঘোষ বলেন, “এটাই আমাদের পুজো উপহার।” একটি দোকানে ক্রেতাদের জন্য ফুচকা, আইসক্রিম খাওয়ানোর কুপন ধরানো হয়। কোচবিহার বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুণ্ডু বলেন, “প্রতিযোগিতার বাজারে ক্রেতা টানতে উপহার দেওয়াটা প্রতিষ্ঠানগুলির নিজস্ব ব্যাপার। রবিবারের বাজারে ভিড় সর্বত্রই ছিল।” কেনাকাটার শেষে বাইরে কুপন ধরিয়ে ফুচকা, আইসক্রিম খেলেনও অনেকে। তাদের একজন দিনহাটার রাকেশ ভৌমিক বলেন, “কেনাকাটার পর ফাঁকা পকেটে এটুকুই বা কম কি।”

সকালেই লাইন

ঘড়িতে সকাল দশটা হবে। তখনই লাইন পড়ে গিয়েছে রায়গঞ্জের মোহনবাটী, বিধাননগর, সুপারমার্কেটের কিছু দোকানে। রায়গঞ্জের লাইনবাজার, উকিলপাড়া, বিদ্রোহীমোড়, সুদর্শনপুর, থানারোড, নিশীথসরণি সহ বিভিন্ন এলাকার পোশাক ও জুতোর দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল সকাল থেকেই। শিলিগুড়ি মোড় ও নিশীথসরণি এলাকার শপিং মলগুলিতেও ক্রেতাদের ভিড় ছিল। গত রবিবার দিনভর বৃষ্টির জেরে পোশাকের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল না। শনিবারও বৃষ্টির আশঙ্কা ছিল দিনভর। তাই এ দিন কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি বাসিন্দাদের অনেকেই। সকালেই বাজারে রওনা দেন ক্রেতারা। রায়গঞ্জের নিশীথসরণি এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী রঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘বৃষ্টির জেরে গত সপ্তাহের রবিবারের মতো পুজোর আগে এ দিনের শেষ রবিবারের বাজার মার খাবে নাকি, তা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। যদিও সকাল থেকেই দোকানে ঠাসা ভিড়ে একটুও বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাইনি।’’ আরেক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘সকালে সবে মাত্র দোকান খুলেছি, তখন থেকেই ভিড়। ঠিক মতো দোকানে ঝাড়ুও দিতে পারিনি।’’

পার্লারে ভিড়

শপিং মল থেকে জুতোর দোকান ভিড় সর্বত্র। তার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিল পার্লারও। মালদহের ইংরেজবাজারে ফুলবাড়ি, তিরজপুর, নেতাজি মার্কেট, মোকদমপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি পার্লার রয়েছে। শুধু মেয়েদের নয়, ছেলেদের আধুনিক পার্লারও রয়েছে বেশ কয়েকটি। সকাল থেকেই সেই সব পার্লারে ভিড়। কয়েকটি পার্লারের সামনে বাইক এবং স্কুটির লম্বা লাইনে যানজট হয়ে যায়। ভিড় সামলাতে একটি পার্লার অগাম বুকিং নিতে শুরু করেছে। একটি পার্লারের তরফে অবশ্য এ দিন ক্রেতাদের টোকেন দেওয়া হয়েছে। যাঁরা এ দিন সুযোগ পাননি, তাঁরা টোকেন দেখিয়ে পরের যে কোন দিন সুযোগ পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে পার্লার কর্তৃপক্ষ।

মলে নিজস্বী

শিলিগুড়ির একটি শপিং মলে মহালয়ার দিন থেকেই দেবী দুর্গার মূর্তি বসেছে। মূর্তি মানে অবশ্য পিচবোর্ডের তৈরি কাট আউট। মলের সাউন্ড সিস্টেমে কখনও চণ্ডীপাঠ বাজছে, কখনও বা বোধনের ঢাক। এমনিতেই রবিবার ছুটির দিনে মল ছিল ভিড়ে ঠাসা। সেই সঙ্গে একটি সংস্থা আয়োজিত নিজস্বী তোলার প্রতিযোগিতা সাড়া ফেলে দেয় যুবক-যুবতী থেকে মধ্যবয়সীদের মধ্যেও। দেবী দুর্গার কাট আউটের সঙ্গে নিজস্বী তুলতে হবে। চমকদার নিজস্বী তুললেই হাতে গরম পুরস্কার। পছন্দের জিনি কেনার পরে পুরস্কারের আশায় নিজস্বী তোলার জন্য মলে ভিড় বাড়তে থাকে। নিজস্বী তোলার সুযোগ পেতে অনেকে লাইনও দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE