Advertisement
E-Paper

সিপিএম প্রধানের বিরুদ্ধে তোলা চাওয়ার অভিযোগ

তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় বিপিএল তালিকাভুক্ত এক দম্পতিকে ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের লাহুতারা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান মনোজকুমার সিংহ সহ স্থানীয় দুই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ওই দম্পতি। সিপিএম অবশ্য এই অভিযোহ অস্বীকার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০৩:১০

তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় বিপিএল তালিকাভুক্ত এক দম্পতিকে ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের লাহুতারা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান মনোজকুমার সিংহ সহ স্থানীয় দুই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ওই দম্পতি। সিপিএম অবশ্য এই অভিযোহ অস্বীকার করেছে।

বুধবার দুপুরে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সরগাঁও এলাকার বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রামজীবন মাহাতো রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় গিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজবাবু ও তাঁর সঙ্গী তথা সিপিএমের স্থানীয় নেতা রঘুবীর মাহাতোর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এক মাসেরও বেশি আগে তাঁর স্ত্রী সীতা মাহাতো ইন্দিরা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ১৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু ওই দুই সিপিএম নেতাকে তাঁরা তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের ঘর তৈরির কাজ শুরু করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তোলা না দিয়ে ঘর তৈরির কাজ শুরু করলে অভিযুক্তরা ওই দম্পতি ও তাঁদের নাবালিকা তিন মেয়ে ও নাবালক এক ছেলেকে মারধর করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। জেলাশাসক রণধীর কুমার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনোজবাবু। তাঁর দাবি, “রামজীবনবাবু মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে কারও প্ররোচনায় জেলাশাসকের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তাঁর কাছ থেকে কেউ তোলা দাবি করেননি। প্রশাসন তদন্ত করলেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে তৃণমূল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে রামজীবনবাবুকে দিয়ে দলের দুই নেতাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। দলের তরফে প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।”

তবে এই ঘটনায় জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের কটাক্ষ, “রাজ্যপাট হারিয়েও সিপিএম গত সাড়ে তিন দশকের তোলাবাজি ভুলতে পারেনি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় মানুষের নজর ঘোরাতে অপূর্ববাবু তৃণমূলের নামে অপপ্রচার করছেন।”

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, করণদিঘি ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রামজীবনবাবুর স্ত্রী সীতাদেবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ইন্দিরা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা জমা পড়ে! ঘর তৈরির কাজ শুরু করার জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি সীতাদেবী সেই টাকা তোলেন। রামজীবনবাবুর দাবি, মনোজবাবুর ভাই বিনোদ সিংহ সরগাঁও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালন সমিতির সভাপতি। ২০১১ সালের ২৩ জুন ওই শিক্ষাকেন্দ্রে মিডডে মিলের চাল চুরির ঘটনা ঘটে। রামজীবনবাবু সেই সময় ওই শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালন সমিতির সম্পাদকের পদে থাকায় মনোজবাবু ও বিনোদবাবুর আপত্তি সত্ত্বেও আইন মেনে তিনি তত্‌কালীন করণদিঘির বিডিওর কাছে চাল চুরি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মনোজবাবুর সঙ্গে রামজীবনবাবুর বিরোধ শুরু।

রামজীবনবাবুর অভিযোগ, “বিডিওর কাছে চাল চুরির অভিযোগ জানানোর কিছু দিন পরেই আমাকে ওই শিক্ষাকেন্দ্রের সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই মনোজবাবু ও রঘুবীরবাবু আমাকে ও আমার পরিবারকে নানা ভাবে হেনস্থা করতে শুরু করেন।” রামজীবনবাবুর কথায়, “ঘর তৈরিতে উদ্যোগী হতেই পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজবাবু ও তাঁর সঙ্গী রঘুবীরবাবু আমার কাছে ১০ হাজার টাকা তোলা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে রাজি হইনি। তোলা না দিয়ে ঘর তৈরির কাজ শুরু করলে ওই দুই সিপিএম নেতা চার ছেলেমেয়ে সহ আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।”

তাঁর দাবি, তিনি ও তাঁর স্ত্রী কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থক নন। অভিযুক্তদের রোষে পড়ার আশঙ্কায় ভয়ে প্রতিবেশীরাও তাঁদের পাশে দাঁড়াননি। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে তিনি এদিন রায়গঞ্জ জেলা আদালতের আইনজীবী পলাশরঞ্জন মাহাতোর দ্বারস্থ হন। পলাশরঞ্জনবাবুর পরামর্শেই এরপর তিনি জেলাশাসকের কাছে অভিযুক্ত ওই দুই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

raiganj cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy