Advertisement
E-Paper

মেডিক্যালের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নালিশ

নিজের পদমর্যাদা কাজে লাগিয়ে নিচু তলার কর্মীদের রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়ের বিরুদ্ধে। তাঁকে অপসারণের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অভিযোগ, মন্ত্রী, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করা, পরে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বদলির হুমকি দেওয়া বা অন্য নানা ভাবে তাঁদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৬ ০২:৩৬

নিজের পদমর্যাদা কাজে লাগিয়ে নিচু তলার কর্মীদের রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়ের বিরুদ্ধে। তাঁকে অপসারণের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অভিযোগ, মন্ত্রী, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করা, পরে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বদলির হুমকি দেওয়া বা অন্য নানা ভাবে তাঁদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ।

হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব, রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যদের ঘনিষ্ঠ সমীরবাবু শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন। বিভিন্ন টেন্ডার করা হচ্ছে এবং শাসক দলের পছন্দের লোকদের দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ পেয়ে ব্লকের রিটার্নিং অফিসারের দফতর থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ব্লকের ভূমি রাজস্ব আধিকারিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এখনও তিনি রিপোর্ট পাননি।

অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সম্প্রতি কাউকে বদলি করা হয়নি। তা ছাড়া বদলির বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর থেকে হয়। হাসপাতালের পরিষেবা ২৪ ঘন্টা চলবে, নিখরচায় ওষুধ দিতে হবে। এ সব নানা কারণে কিছু কেনার দরকার থাকলে কী করা হবে সে জন্য মহকুমাশাসকের দফতরে সুপার চিঠি পাঠিয়েছেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ গৌতম দেব বলেন, ‘‘টেন্ডার পূর্ত দফতর করে। তা ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ অর্থহীন। শাসক দলকে হেনস্থা করতে করা হচ্ছে।’’ অধ্যক্ষকে দরাজ শংসাপত্র দিয়েছেন রুদ্রবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান অধ্যক্ষ আমার সহপাঠী। উনি কোনও অন্যায় কিছু করেছেন বলে মনে করি না।’’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস চিকিৎসক বা মেডিক্যাল অফিসার (এমও)-দের একাংশকে বদলি করার কথা। কিন্তু কাদের করা হবে আর কাদের করা হবে না তা নিয়ে চিকিৎসক মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। সে ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ সমীরবাবু চিকিৎসকদের একাংশকে সে কথা বলে শাসক দলের পক্ষে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। অথবা সমীরবাবুকে সামনে রেখেই তৃণমূল মনোভাবাপন্ন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ ওই কাজ করছেন বলে অভিযোগ। সব জেনে বুঝেও অনেক ক্ষেত্রে চুপ হয়ে রয়েছেন অধ্যক্ষ। একাংশ সে কারণে অধক্ষ্যকেই দোষী বলতে চান। অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন এণও বদলি হতে বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়াও গত এক বছর ধরে বদলি এবং পদন্নোতি প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। নির্বাচনের পরেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। সে সময় বর্তমান শাসক দলের পক্ষে থাকলে তারা সুবিধা পাবেন বলেই তৃণমূল মনোভাবাপন্ন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ অধ্যক্ষকে সামনে রেখে হাওয়া তুলতে চাইছে বলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক, কর্মীদের অন্তরেই কানাঘুষো চলছে।

অধ্যক্ষের দাবি, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হলেও তিনি ছিলেন না। ওই সময় কাজে কলকাতায় ছিলেন। গৌতমবাবুর সঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ছাড়া দেখাও হয় না। অন্যদিকে রুদ্রবাবুর তাঁর সহপাঠী। তাই বলে রুদ্রবাবুর কাছ থেকে কিছু শুনে তা পরামর্শ নিয়ে বা কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ তিনি কখনই করেননি। ঘটনার তদন্ত করতে নির্বাচন কমিশন দফতরের তরফে আধিকারিককে পাঠানো হলে ওই সময় অবশ্য অধ্যক্ষ ছিলেন না। ওই আধিকারিক সুপার-তথা সহ অধ্যক্ষ নির্মল বেরার সঙ্গে কথা বলেন। নির্মলবাবু জানান, অভিযোগের ব্যাপারে ওই আধিকারিক খোঁজখবর নিয়েছেন। রোগী পরিষেবার ক্ষেত্রে ওষুধ বা জরুরি প্রয়োজনে কিছু কেনার জন্য টেন্ডার করা যাবে কি না সে ব্যাপারে মহকুমাশাসকের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সেই চিঠির প্রতিলিপি সমস্ত তদন্তকারী আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসকের দফতরের তরফে ওই সমস্ত জরুরি বিষয় কেনার টেন্ডার বা প্রক্রিয়া করা যাবে কি না তা জানতে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে।

medical faculty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy