মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (উপরে) ধীরেন মণ্ডল, (নীচে) সুজয় ঘোষ। সোমবার। ছবি : মনোজ মুখোপাধ্যায়।
সন্ত্রাসের নয়া নজির। তেলে ভাজার দোকানের কড়াই থেকে দুই বিজেপি কর্মীর গায়ে গরম তেল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। মালদহের বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনগর গ্রামে রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে।
আহত ধীরেন মণ্ডল ও সুজয় ঘোষ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধীরেনবাবুর বাড়ি কালিয়াচকের রামশঙ্কর টোলায়। তিনি গ্রামে একটি বেসরকারি স্কুল চালান। আর সুজয়বাবু রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ফল ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের রাজনগর গ্রামে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প করছিলেন ধীরেন মন্ডল ও সুজয় ঘোষ সহ জনা দশেক গ্রামবাসী। ভোট নিয়ে চলছিল জোর আলোচনা। বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির ভাল প্রভাব রয়েছে। সেই কেন্দ্রে এ বার বিজেপির সঙ্গে বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী আজিজুল হকের টক্কর হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। অভিযোগ হঠাৎই মোটরবাইকে করে ঘটনাস্থলে আসে সুজিত ঘোষ ও রাজু ঘোষ নামে এলাকার দুই তৃণমূল কর্মী। তাঁদের দুইজনেরই বাড়ি রাজনগর গ্রামে। একটি লোহার রড দিয়ে ধীরেনবাবুকে সুজিত মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। বাধা দিতে যান সুজয়বাবু। তখন তাঁকেও মারধর করা হয়।
এর পরেই এলাকার একটি তেলেভাজার দোকানের গরম তেলের কড়াই নিয়ে তাঁদের গায়ে ঢেলে দেয় অভিযুক্তরা। পড়শিরা ছুটে এলে মোটরবাইকে করে পালিয়ে যায় সুজিত ও রাজু। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সুজিত এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত। বদমেজাজি স্বভাবের জন্যেও তার পরিচিতি রয়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা ধীরেনবাবু ও সুজয়বাবুকে উদ্ধার করে শ্রীলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে তাঁদের আঘাত গুরুতর থাকায় চিকিৎসকেরা তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। গরম তেলে তাঁদের হাত পুড়ে গিয়েছে। ধীরেনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের বিধানসভায় বিজেপির ভাল ভোট হয়েছে। তাই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। আমরা কালিয়াচক থানায় তাদের নামে অভিযোগ জানিয়েছি।’’
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমাদের দলের দুই সক্রিয় কর্মীর গায়ে গরম তেল ঢেলে দেওয়া হল। কারণ এ বারের ভোটে তাঁরা সক্রিয় ভাবে বিজেপির হয়ে কাজ করেছে। শাসক দলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে বুঝতে পেরেই হামলা চালাতে শুরু করে দিয়েছে।’’ যদিও ঘটনায় শাসক দলের কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে দলের কিছু বিষয় নেই। পারিবারিব বিষয়কেও দলের বলে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy